৪১০০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০০
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ وَاقِدٍ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مَيْسَرَةَ بْنِ حَلْبَسٍ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَيْسَ الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا بِتَحْرِيمِ الْحَلاَلِ وَلاَ فِي إِضَاعَةِ الْمَالِ وَلَكِنِ الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا أَنْ لاَ تَكُونَ بِمَا فِي يَدَيْكَ أَوْثَقَ مِنْكَ بِمَا فِي يَدِ اللَّهِ وَأَنْ تَكُونَ فِي ثَوَابِ الْمُصِيبَةِ إِذَا أُصِبْتَ بِهَا أَرْغَبَ مِنْكَ فِيهَا لَوْ أَنَّهَا أُبْقِيَتْ لَكَ " . قَالَ هِشَامٌ كَانَ أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ يَقُولُ مِثْلُ هَذَا الْحَدِيثِ فِي الأَحَادِيثِ كَمِثْلِ الإِبْرِيزِ فِي الذَّهَبِ .
আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হালাল বস্তুকে হারাম করে নেয়া এবং ধনসম্পদ ধ্বংস করা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি (যুহ্দ) নয়, বরং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি হলোঃ আল্লাহর নিকট যা আছে তার চেয়ে তোমার নিকট যা আছে তার উপর অধিক নির্ভরশীল না হওয়া এবং তুমি কোন বিপদে পতিত হলে তার বিনিময়ে সওয়াবের আশার তুলনায় বিপদে পতিত না হওয়াটা তোমার নিকট অধিকতর কাঙ্ক্ষিত না হওয়া। হিশাম (রাঃ) বলেন, আবূ ইদরীস আল-খাওলানী (রাঃ) বলেছেন, হাদীস ভান্ডারে এ হাদীসটি যেন স্বর্ণ খনির খাঁটি সোনা। [৩৪৩২]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪১০১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০১
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، عَنْ أَبِي خَلاَّدٍ، - وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ قَدْ أُعْطِيَ زُهْدًا فِي الدُّنْيَا وَقِلَّةَ مَنْطِقٍ فَاقْتَرِبُوا مِنْهُ فَإِنَّهُ يُلَقَّى الْحِكْمَةَ " .
আবূ খাল্লাদ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা এমন লোক দেখতে পাবে যাকে দুনিয়াতে যুহদ দান করা হয়েছে এবং স্বল্পভাষী করা হয়েছে, তখন তোমরা তার নৈকট্য ও সাহচর্য অবলম্বন করবে। কারণ তাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়েছে। [৩৪৩৩]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১০২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০২
حَدَّثَنَا أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ أَبِي السَّفَرِ، حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَمْرٍو الْقُرَشِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا أَنَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِيَ اللَّهُ وَأَحَبَّنِيَ النَّاسُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّوكَ " .
সাহল বিন সা’দ আস-সাঈদী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যা আমি করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং লোকেরাও আমাকে ভালোবাসবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি অবলম্বন করো। তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। মানুসের নিকট যা আছে, তুমি তার প্রতি অনাসক্ত হয়ে যাও, তাহলে তারাও তোমাকে ভালোবাসবে। [৩৪৩৪]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১০৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ سَهْمٍ، - رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ - قَالَ نَزَلْتُ عَلَى أَبِي هَاشِمِ بْنِ عُتْبَةَ وَهُوَ طَعِينٌ فَأَتَاهُ مُعَاوِيَةُ يَعُودُهُ فَبَكَى أَبُو هَاشِمٍ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ مَا يُبْكِيكَ أَىْ خَالِ أَوَجَعٌ يُشْئِزُكَ أَمْ عَلَى الدُّنْيَا فَقَدْ ذَهَبَ صَفْوُهَا قَالَ عَلَى كُلٍّ لاَ وَلَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَهِدَ إِلَىَّ عَهْدًا وَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ تَبِعْتُهُ قَالَ " إِنَّكَ لَعَلَّكَ تُدْرِكُ أَمْوَالاً تُقْسَمُ بَيْنَ أَقْوَامٍ وَإِنَّمَا يَكْفِيكَ مِنْ ذَلِكَ خَادِمٌ وَمَرْكَبٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ " . فَأَدْرَكْتُ فَجَمَعْتُ .
সামুরাহ বিন সাহ্ম (মাজহুল বা অপরিচিত) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ হাশিম বিন উতবাহ (রাঃ) এর কাছে গেলাম। তিনি বর্শার আঘাতে আহত হয়ে অসুস্থ ছিলেন। মুআবিয়া (রাঃ) ও তাকে দেখতে এলেন। আবূ হাশেম (রাঃ) কেঁদে দিলে তিনি বলেন, হে মামা! কিসে আপনাকে কাঁদাচ্ছে। আঘাতের যন্ত্রনা, নাকি পার্থিব কিছু? পার্থিব কিছু হলে তার উৎকৃষ্ট অংশ তো অতিবাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, এর কোনটিই নয়। তবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন। হায়! আমি যদি তা অনুসরন করতাম। তিনি বলেছিলেন, “হয়তো তুমি পর্যাপ্ত সম্পদের অধিকারী হবে যা তুমি জনগনের মধ্যে বিতরন করবে। তখন তোমার জন্য একটি খাদেম এবং আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য একটি সওআরীই যথেষ্ঠ”। আমি সেই প্রাচুর্য লাভ করেছি কিন্তু তা (বিতরন না করে) পুঞ্জীভূত করে রেখেছি। [৩৪৩৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১০৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَبِي الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ اشْتَكَى سَلْمَانُ فَعَادَهُ سَعْدٌ فَرَآهُ يَبْكِي فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ مَا يُبْكِيكَ يَا أَخِي أَلَيْسَ قَدْ صَحِبْتَ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَلَيْسَ أَلَيْسَ قَالَ سَلْمَانُ مَا أَبْكِي وَاحِدَةً مِنَ اثْنَتَيْنِ مَا أَبْكِي صَبًّا لِلدُّنْيَا وَلاَ كَرَاهِيَةً لِلآخِرَةِ وَلَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَهِدَ إِلَىَّ عَهْدًا فَمَا أُرَانِي إِلاَّ قَدْ تَعَدَّيْتُ . قَالَ وَمَا عَهِدَ إِلَيْكَ قَالَ عَهِدَ إِلَىَّ أَنَّهُ يَكْفِي أَحَدَكُمْ مِثْلُ زَادِ الرَّاكِبِ وَلاَ أُرَانِي إِلاَّ قَدْ تَعَدَّيْتُ وَأَمَّا أَنْتَ يَا سَعْدُ فَاتَّقِ اللَّهَ عِنْدَ حُكْمِكَ إِذَا حَكَمْتَ وَعِنْدَ قَسْمِكَ إِذَا قَسَمْتَ وَعِنْدَ هَمِّكَ إِذَا هَمَمْتَ . قَالَ ثَابِتٌ فَبَلَغَنِي أَنَّهُ مَا تَرَكَ إِلاَّ بِضْعَةً وَعِشْرِينَ دِرْهَمًا مِنْ نَفَقَةٍ كَانَتْ عِنْدَهُ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সালমান (রাঃ) অসুস্থ হয়ে পড়লে সা’দ (রাঃ) তাকে দেখতে যান। তিনি তাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞেস করেন, হে ভাই! আপনি কাঁদছেন কেন? আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহচর্য লাভ করেননি? আপনি কি এই এই (ভালো কাজ) করেননি। সালমান (রাঃ) বলেন, আমি এই দু’টির কোনটির জন্যই কাঁদছি না। আমি দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার আক্ষেপে বা আখেরাতের পরিণতির আশংকায় কাঁদছি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু মনে হয় আমি তাতে সীমালংঘন করেছি। সা’দ (রাঃ) বলেন, তিনি আপনার থেকে কী প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন? সালমান (রাঃ) বলেন, তিনি এই প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে, “তোমাদের যে কোন ব্যক্তির একজন পর্যটকের সমপরিমাণ পাথেয় যথেষ্ট”। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমি সীমালংঘন করে ফেলেছি। হে ভাই সা’দ! যখন তুমি বিচার মীমাংসা করবে, ভাগ-বাঁটোয়ারা করবে এবং কোন কাজের উদ্যোগ গ্রহন করবে তখন আল্লাহকে ভয় করবে। সাবিত (রাঃ) বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, (মৃত্যুর সময়) সালমান (রাঃ) তার ভরণপোষণের জন্য সঞ্চিত মাত্র বিশাধিক দিরহাম রেখে যান। [৩৪৩৬]
তাহকীক আলবানীঃ সালমান ও সাবিত এর কাওলটি সহীহ; সালমান (রাঃ) এর কাওল সহীহাহ ৪/২৯৪, সাবিত এর কওল আত তা’লীকুর রাগীব ৪/৯৯।
উক্ত হাদীসের রাবী জা’ফার বিন সুলায়মান সম্পর্কে আবূ আহমাদ আল-হাকিম বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আবূ বাকর আল-বাযযার বলেন, তার দোষত্রুটি সম্পর্কে কাউকে কিছু বলতে শুনিনি। আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৪৩, ৫/৪৩ নং পৃষ্ঠা)
৪১০৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عُمَرَ بْنِ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبَانَ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ مِنْ عِنْدِ مَرْوَانَ بِنِصْفِ النَّهَارِ فَقُلْتُ مَا بَعَثَ إِلَيْهِ هَذِهِ السَّاعَةَ إِلاَّ لِشَىْءٍ سَأَلَ عَنْهُ . فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ سَأَلَنَا عَنْ أَشْيَاءَ سَمِعْنَاهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " مَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ فَرَّقَ اللَّهُ عَلَيْهِ أَمْرَهُ وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلاَّ مَا كُتِبَ لَهُ وَمَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ نِيَّتَهُ جَمَعَ اللَّهُ لَهُ أَمْرَهُ وَجَعَلَ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ " .
আবান বিন উসমান, থেকে বর্ণিতঃ
যায়দ বিন সাবিত (রাঃ) দুপুরের সময় মারওয়ানের নিকট থেকে বের হয়ে এলে আমি ভাবলাম, নিশ্চয় কোন গুরত্বপূর্ণ বিষয় জানার জন্য এ সময় তিনি তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আমাদের শ্রুত কতক হাদীস শোনার জন্য মারওআন আমাদের ডেকেছেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ পার্থিব চিন্তা যাকে মোহগ্রস্ত করবে, আল্লাহ তার কাজকর্মে অস্থিরতা সৃষ্টি করবেন, দরিদ্রতা তার নিত্যসংগী হবে এবং পার্থিব স্বার্থ ততটুকুই লাভ করতে পারবে, যতটুকু তার তকদীরে লিপিবদ্ধ আছে। আর যার উদ্দেশ্য হবে আখেরাত, আল্লাহ তার সবকিছু সুষ্ঠু করে দিবেন, তার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবেন এবং দুনিয়া স্বয়ং তার সামনে এসে হাযির হবে। [৩৪৩৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১০৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَالْحُسَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ النَّصْرِيِّ، عَنْ نَهْشَلٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ سَمِعْتُ نَبِيَّكُمْ، ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ الْمَعَادِ كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِي أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ فِي أَىِّ أَوْدِيَتِهِ هَلَكَ " .
আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
আমি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যার চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হবে আখিরাত, তার পার্থিব চিন্তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে যান। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার চিন্তায় মোহগ্রস্ত থাকে তার যে কোন উপত্যকায় বা প্রান্তরে ধ্বংস হয়ে যাওয়াতে আল্লাহর কোন পরোয়া নাই। [৩৪৩৮]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১০৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৭
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ زَائِدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ الْوَالِبِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ - وَلاَ أَعْلَمُهُ إِلاَّ قَدْ رَفَعَهُ - قَالَ " يَقُولُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِي أَمْلأْ صَدْرَكَ غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ مَلأْتُ صَدْرَكَ شُغْلاً وَلَمْ أَسُدَّ فَقْرَكَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ মহাপবিত্র আল্লাহ বলেনঃ হে আদম সন্তান!আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবো এবং তোমার দারিদ্র দূর করবো। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর পেরেশানী দিয়ে পূর্ণ করবো এবং তোমার দারিদ্রতা দূর করবো না। [৩৪৩৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১০৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَمُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ الْمُسْتَوْرِدَ، أَخَا بَنِي فِهْرٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " مَا مَثَلُ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ مَثَلُ مَا يَجْعَلُ أَحَدُكُمْ إِصْبَعَهُ فِي الْيَمِّ فَلْيَنْظُرْ بِمَ يَرْجِعُ " .
বনূ ফিহরের সদস্য মুসতাওরিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়া হলো এতটুকু, যেমন তোমাদের কেউ তার একটি আংগুল সমুদ্রের পানিতে ডুবিয়ে তা তুলে আনলো। সে লক্ষ্য করুক তার আংগুন কতটুকু পানি নিয়ে ফিরেছে। [৩৪৪০]
৪১০৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১০৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا الْمَسْعُودِيُّ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اضْطَجَعَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَلَى حَصِيرٍ فَأَثَّرَ فِي جِلْدِهِ فَقُلْتُ بِأَبِي وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ كُنْتَ آذَنْتَنَا فَفَرَشْنَا لَكَ عَلَيْهِ شَيْئًا يَقِيكَ مِنْهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا أَنَا وَالدُّنْيَا إِنَّمَا أَنَا وَالدُّنْيَا كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا " .
আবদুল্লাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি খেজুর পাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। তাঁর দেহের চামড়ায় (মাদুরের) দাগ বসে গেলো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক। আপনি আমাদেরকে অনুমতি দিলে আমরা আপনার জন্য মাদুরের উপর কিছু বিছিয়ে দিতাম। তাহলে তা আপনাকে দাগ লাগা থেকে বাঁচিয়ে রাখতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দুনিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক কী? আমি দুনিয়াতে এমন এক মুসাফির বৈ তো কিছু নই, যে একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিলো, অতঃপর তা ত্যাগ করে গন্তব্যের পানে চলে গেলো। [৩৪৪১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১০
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ الْحِزَامِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو يَحْيَى، زَكَرِيَّا بْنُ مَنْظُورٍ حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِذِي الْحُلَيْفَةِ فَإِذَا هُوَ بِشَاةٍ مَيِّتَةٍ شَائِلَةٍ بِرِجْلِهَا فَقَالَ " أَتُرَوْنَ هَذِهِ هَيِّنَةً عَلَى صَاحِبِهَا فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَلدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ عَلَى صَاحِبِهَا وَلَوْ كَانَتِ الدُّنْيَا تَزِنُ عِنْدَ اللَّهِ جَنَاحَ بَعُوضَةٍ مَا سَقَى كَافِرًا مِنْهَا قَطْرَةً أَبَدًا " .
সাহল বিন সা’দ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুল-হুলায়ফা নামক স্থানে থাকাকালে একটি মৃত বকরী চিৎ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেলো। তিনি বলেনঃ তোমাদের কী ধারণা, এই বকরিটা তার মালিকের কাছে তুচ্ছ নয় কি? সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ!এই মৃত বকরিটা তার মালিকের নিকট যতোটা তুচ্ছ, অবশ্যই এই দুনিয়া আল্লাহর নিকট তার চেয়েও অধিক তুচ্ছ। এ দুনিয়ার মুল্য যদি মশার একটি পাখার সমানও হতো, তাহলে তিনি কোন কাফেরকে এখানকার পানির এক ঢোকও পান করাতেন না। [৩৪৪২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مُجَالِدِ بْنِ سَعِيدٍ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ الْهَمْدَانِيِّ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمُسْتَوْرِدُ بْنُ شَدَّادٍ، قَالَ إِنِّي لَفِي الرَّكْبِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذْ أَتَى عَلَى سَخْلَةٍ مَنْبُوذَةٍ قَالَ فَقَالَ " أَتُرَوْنَ هَذِهِ هَانَتْ عَلَى أَهْلِهَا " . قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مِنْ هَوَانِهَا أَلْقَوْهَا . أَوْ كَمَا قَالَ قَالَ " فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَلدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ عَلَى أَهْلِهَا " .
মুসতাওরিদ বিন শাদ্দাদ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাফেলার সাথে ছিলাম। তিনি রাস্তার পাশে ফেলে রাখা একটি বকরীর মৃত ছানার নিকট এসে দাঁড়ালেন। তিনি বলেনঃ তোমরা কি জানো, এই বকরির মৃত বাচ্চাটি তার মালিকের নিকট কতো তুচ্ছ? বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! মূল্যহীন হওয়ার দরুনই তারা এটাকে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ!এটা তার মালিকের নিকট যতোটা মূল্যহীন, দুনিয়াটা আল্লাহর কাছে তার চেয়েও অধিক মূল্যহীন ও তুচ্ছ। [৩৪৪৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خُلَيْدٍ، عُتْبَةُ بْنُ حَمَّادٍ الدِّمَشْقِيُّ عَنِ ابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ضَمْرَةَ السَّلُولِيِّ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ يَقُولُ " الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلاَّ ذِكْرَ اللَّهِ وَمَا وَالاَهُ أَوْ عَالِمًا أَوْ مُتَعَلِّمًا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবই অভিশপ্ত, কিন্তু আল্লাহর যিকির এবং তার সাথে সংগতিপূর্ণ অন্যান্য আমল অথবা আলেম ওএলেম অন্বেষণকারী ব্যতীত। [৩৪৪৪]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১১৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৩
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ، مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْعُثْمَانِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ وَجَنَّةُ الْكَافِرِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুনিয়া মুমিনের জেলখানা এবং কাফেরের বেহেশতখানা। [৩৪৪৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِبَعْضِ جَسَدِي فَقَالَ " يَا عَبْدَ اللَّهِ كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ كَأَنَّكَ عَابِرُ سَبِيلٍ وَعُدَّ نَفْسَكَ مِنْ أَهْلِ الْقُبُورِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার দেহ স্পর্শ করে বলেনঃ হে আবদুল্লাহ! দুনিয়াতে এমনভাবে বসবাস করো যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী মুসাফির। তুমি নিজেকে কবরবাসীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করো। [৩৪৪৬]
তাহকীক আলবানীঃ (আরবি) বাক্যটি ব্যতীত সহীহ। রাওদুন নাদীর ৫৭৪।
৪১১৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৫
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَاقِدٍ، عَنْ بُسْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَلاَ أُخْبِرُكَ عَنْ مُلُوكِ الْجَنَّةِ " . قُلْتُ بَلَى . قَالَ " رَجُلٌ ضَعِيفٌ مُسْتَضْعَفٌ ذُو طِمْرَيْنِ لاَ يُؤْبَهُ لَهُ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لأَبَرَّهُ " .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে জান্নাতের বাদশাহ্দের সম্পর্কে অবহিত করবো না। আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ দু’টি ছিন্নবস্ত্র পরিহিত দুর্বল ও অনাহারী ব্যক্তি যাকে ধর্তব্যে আনা হয় না। কিন্তু সে কোন বিষয়ে আল্লাহর নামে শপথ করলে তিনি তা অবশ্যই পূর্ণ করেন (সে হবে জান্নাতের বাদশাহ্)। [৩৪৪৭]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১১৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَعْبَدِ بْنِ خَالِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ كُلُّ ضَعِيفٍ مُتَضَعِّفٍ أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ " .
হারিসাহ বিন ওয়াহব (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদেরকে অবহিত করবো না যে, কারা জান্নাতী হবে? যারা দুর্বল এবং যাদেরকে দুর্বল মনে করা হয়। আমি কি তোমাদেরকে অবহিত করবো না যে, কারা জাহান্নামী হবে? প্রত্যেক অবাধ্য, আহাম্মক ও দাম্ভিক ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে। [৩৪৪৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ صَدَقَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ أَغْبَطَ النَّاسِ عِنْدِي مُؤْمِنٌ خَفِيفُ الْحَاذِ ذُو حَظٍّ مِنْ صَلاَةٍ غَامِضٌ فِي النَّاسِ لاَ يُؤْبَهُ لَهُ كَانَ رِزْقُهُ كَفَافًا وَصَبَرَ عَلَيْهِ عَجِلَتْ مَنِيَّتُهُ وَقَلَّ تُرَاثُهُ وَقَلَّتْ بَوَاكِيهِ " .
আবূ উমামাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ লোকেদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ঈর্ষণীয় হলো সেই মুমিন ব্যক্তি যার অবস্থা খুবই হালকা (স্বল্প সম্পদ ও ক্ষুদ্র পরিবার) এবং যে নামাযে মনোযোগী, মানুষের মাঝে অখ্যাত, তার কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না,আর নূন্যতম প্রয়োজন মাফিক তার রিযিক এবং তাতেই ধৈর্য ধারণকারী। অচিরেই তার মৃত্যু হয়, তার পরিত্যক্ত সম্পদও কম এবং তার জন্য বিলাপকারীর সংখ্যাও কম। [৩৪৪৯]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১১৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৮
حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ سُوَيْدٍ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ الْحَارِثِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الْبَذَاذَةُ مِنَ الإِيمَانِ " . قَالَ الْبَذَاذَةُ الْقَشَافَةُ يَعْنِي التَّقَشُّفَ .
আবূ উমামাহ আল-হারিসী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অনাড়ম্বর জীবন যাপনই ঈমান। রাবী বলেন, ‘বাযাযাহ’-এর অর্থ কাশাফাহ অর্থাৎ বিলাস-বাসনা ত্যাগ করা, সা‘দামাটা জীবন নির্বাহ করা। [৩৪৫০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১১৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১১৯
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، عَنِ ابْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ، أَنَّهَا سَمِعَتْ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِخِيَارِكُمْ " . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " خِيَارُكُمُ الَّذِينَ إِذَا رُءُوا ذُكِرَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ " .
আসমা’ বিনতূ ইয়াযীদ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ আমি কি তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের কথা জানিয়ে দিবো না? তারা বলেন, হাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে তারাই শ্রেষ্ঠ যাদের দেখলে মহান আল্লাহর স্মরণ হয়। [৩৪৫১]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১২০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ مَرَّ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا تَقُولُونَ فِي هَذَا الرَّجُلِ قَالُوا رَأْيَكَ فِي . هَذَا نَقُولُ هَذَا مِنْ أَشْرَافِ النَّاسِ هَذَا حَرِيٌّ إِنْ خَطَبَ أَنْ يُخَطَّبَ وَإِنْ شَفَعَ أَنْ يُشَفَّعَ وَإِنْ قَالَ أَنْ يُسْمَعَ لِقَوْلِهِ . فَسَكَتَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَمَرَّ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا تَقُولُونَ فِي هَذَا " . قَالُوا نَقُولُ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا مِنْ فُقَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ هَذَا حَرِيٌّ إِنْ خَطَبَ لَمْ يُنْكَحْ وَإِنْ شَفَعَ لاَ يُشَفَّعْ وَإِنْ قَالَ لاَ يُسْمَعْ لِقَوْلِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَهَذَا خَيْرٌ مِنْ مِلْءِ الأَرْضِ مِثْلَ هَذَا " .
সাহল বিন সা‘দ আল-সাইদী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা এ লোকটি সম্পর্কে কী বলো? সাহাবীগণ বলেন, তার সম্পর্কে আপনার অভিমত হবে যথার্থ। আমরা বলি, সে সুপারিশ করলে তা মঞ্জুর করা হয়। সে কথা বললে তা শোনা হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ থাকলেন। ইত্যবসরে আরেক ব্যক্তি সেখান দিয়ে অতিক্রম করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ এই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা কী বলো? সাহাবীগণ বলেন, আল্লাহর শপথ, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা বলি যে, এ ব্যক্তি তো দীনহীন মুসলমানদের অন্তভূক্ত। সে এতই যোগ্য যে, সে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়, সুপারিশ করলে তা মঞ্জুর করা হয় না এবং কথা বললে তার কথায় কেউ কর্ণপাত করে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রথমোক্ত শ্রেণীর লোকের দ্বারা পৃথিবী ভরে গেলেও শেষোক্ত ব্যক্তি তাদের চেয়ে উত্তম। [৩৪৫২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
৪১২১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২১
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ الْجُبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ، أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مِهْرَانَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ عَبْدَهُ الْمُؤْمِنَ الْفَقِيرَ الْمُتَعَفِّفَ أَبَا الْعِيَالِ " .
ইমরান ইবনুল হুসায়ন (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর যে মুমিন বান্দা দরিদ্র ও অধিক সন্তানের পিতা হওয়া সত্ত্বেও যাচঞা করা থেকে বিরত থাকে, তিনি তাকে ভালোবাসেন। [৩৪৫৩]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১২২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَدْخُلُ فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ الْجَنَّةَ قَبْلَ الأَغْنِيَاءِ بِنِصْفِ يَوْمٍ خَمْسِمِائَةِ عَامٍ " .
আবূ হূরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দরিদ্র মুমিনগণ ধনীদের তুলনায় অর্ধদিন আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর অর্ধ দিনের পরিমাণ হবে পাঁচশত বছর। [৩৪৫৪]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪১২৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ الْمُخْتَارِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِمِقْدَارِ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দরিদ্র মুহাজিরগণ তাদের বিত্তবানদের তুলনায় পাঁচ শত বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [৩৪৫৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১২৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو غَسَّانَ، بُهْلُولٌ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ اشْتَكَى فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ عَلَيْهِمْ أَغْنِيَاءَهُمْ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ الْفُقَرَاءِ أَلاَ أُبَشِّرُكُمْ أَنَّ فُقَرَاءَ الْمُؤْمِنِينَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِنِصْفِ يَوْمٍ خَمْسِمِائَةِ عَامٍ " .
ثُمَّ تَلاَ مُوسَى هَذِهِ الآيَةَ {وَإِنَّ يَوْمًا عِنْدَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ }
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তাআলা দরিদ্র মুহাজিরদের উপর তাদের ধনীদের যে মর্যাদা (সম্পদের প্রাচুর্য) দান করেছেন, তারা সে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আক্ষেপ প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেনঃ হে অভাবী সমাজ! আমি কি তোমাদেরকে এ সুসংবাদ দিবো না যে, দরিদ্র মুমিনগণ তাদের ধনীদের তুলনায় অর্ধ দিন অর্থাৎ পাঁচ শত বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে? অতঃপর মূসা বিন উবায়দা (রাঃ) এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) “তোমার প্রতিপালকের একদিন তোমাদের গণনার হাজার বছরের সমান" (সূরা হাজঃ ৪৭)। [৩৪৫৬]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১২৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيُّ أَبُو يَحْيَى، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ أَبُو إِسْحَاقَ الْمَخْزُومِيُّ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ جَعْفَرُ بْنُ أَبِي طَالِبٍ يُحِبُّ الْمَسَاكِينَ وَيَجْلِسُ إِلَيْهِمْ وَيُحَدِّثُهُمْ وَيُحَدِّثُونَهُ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَكْنِيهِ أَبَا الْمَسَاكِينِ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জাফর বিন আবূ তালিব (রাঃ) ফকীর-মিসকীনদের মহব্বত করতেন, তাদের সাথে ওঠাবসা করতেন এবং তাদের সাথে আলাপ করতেন। আর তারাও তার সাথে আলাপ-আলোচনা করতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আবুল মাসাকীন (দরিদ্রদের পিতা) উপাধি দেন। [৩৪৫৭]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪১২৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ أَبِي الْمُبَارَكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَحِبُّوا الْمَسَاكِينَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ فِي دُعَائِهِ " اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مِسْكِينًا وَأَمِتْنِي مِسْكِينًا وَاحْشُرْنِي فِي زُمْرَةِ الْمَسَاكِينِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
তোমরা মিসকীনদের মহব্বত করবে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তার দুআ’য় বলতে শুনেছিঃ “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মিসকীনরূপে জীবিত রাখো, মিসকীনরূপে মৃত্যুদান করো এবং মিসকীনদের দলভুক্ত করে হাশরের ময়দানে উত্থিত করো ”। [৩৪৫৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
৪১২৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْقَطَّانِ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَنْقَزِيُّ، حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ نَصْرٍ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي سَعْدٍ الأَزْدِيِّ، وَكَانَ، قَارِئَ الأَزْدِ عَنْ أَبِي الْكَنُودِ، عَنْ خَبَّابٍ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلاَ تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ} إِلَى قَوْلِهِ {فَتَكُونَ مِنَ الظَّالِمِينَ} قَالَ جَاءَ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ التَّمِيمِيُّ وَعُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنٍ الْفَزَارِيُّ فَوَجَدُوا رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَعَ صُهَيْبٍ وَبِلاَلٍ وَعَمَّارٍ وَخَبَّابٍ قَاعِدًا فِي نَاسٍ مِنَ الضُّعَفَاءِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فَلَمَّا رَأَوْهُمْ حَوْلَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ حَقَرُوهُمْ فَأَتَوْهُ فَخَلَوْا بِهِ وَقَالُوا إِنَّا نُرِيدُ أَنْ تَجْعَلَ لَنَا مِنْكَ مَجْلِسًا تَعْرِفُ لَنَا بِهِ الْعَرَبُ فَضْلَنَا فَإِنَّ وُفُودَ الْعَرَبِ تَأْتِيكَ فَنَسْتَحْيِي أَنْ تَرَانَا الْعَرَبُ مَعَ هَذِهِ الأَعْبُدِ فَإِذَا نَحْنُ جِئْنَاكَ فَأَقِمْهُمْ عَنْكَ فَإِذَا نَحْنُ فَرَغْنَا فَاقْعُدْ مَعَهُمْ إِنْ شِئْتَ . قَالَ " نَعَمْ " . قَالُوا فَاكْتُبْ لَنَا عَلَيْكَ كِتَابًا . قَالَ فَدَعَا بِصَحِيفَةٍ وَدَعَا عَلِيًّا لِيَكْتُبَ وَنَحْنُ قُعُودٌ فِي نَاحِيَةٍ فَنَزَلَ جِبْرَائِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَالَ {وَلاَ تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ مَا عَلَيْكَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِنْ شَىْءٍ وَمَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَيْهِمْ مِنْ شَىْءٍ فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُونَ مِنَ الظَّالِمِينَ} ثُمَّ ذَكَرَ الأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ وَعُيَيْنَةَ بْنَ حِصْنٍ فَقَالَ {وَكَذَلِكَ فَتَنَّا بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لِيَقُولُوا أَهَؤُلاَءِ مَنَّ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنْ بَيْنِنَا أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِالشَّاكِرِينَ} . ثُمَّ قَالَ {وَإِذَا جَاءَكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِنَا فَقُلْ سَلاَمٌ عَلَيْكُمْ كَتَبَ رَبُّكُمْ عَلَى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ } . قَالَ فَدَنَوْنَا مِنْهُ حَتَّى وَضَعْنَا رُكَبَنَا عَلَى رُكْبَتِهِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَجْلِسُ مَعَنَا فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَقُومُ قَامَ وَتَرَكَنَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ {وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ وَلاَ تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ} وَلاَ تُجَالِسِ الأَشْرَافَ {تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَلاَ تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَنْ ذِكْرِنَا} - يَعْنِي عُيَيْنَةَ وَالأَقْرَعَ - {وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا } - قَالَ هَلاَكًا - قَالَ أَمْرُ عُيَيْنَةَ وَالأَقْرَعِ . ثُمَّ ضَرَبَ لَهُمْ مَثَلَ الرَّجُلَيْنِ وَمَثَلَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا . قَالَ خَبَّابٌ فَكُنَّا نَقْعُدُ مَعَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَإِذَا بَلَغْنَا السَّاعَةَ الَّتِي يَقُومُ فِيهَا قُمْنَا وَتَرَكْنَاهُ حَتَّى يَقُومَ .
খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মহান আল্লাহর বাণী (অনুবাদ) “যারা তাদের প্রতিপালককে সকালে ও সন্ধ্যায় তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ডাকে তাদেরকে তুমি তাড়িয়ে দিও না। তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব তোমার নয় এবং তোমার কোন কাজের জবাবদিহির দায়িত্বও তাদের নয় যে, তুমি তাদের বিতাড়িত করবে, করলে তুমি যালেমদের অন্তর্ভূক্ত হবে” (সূরা আনআমঃ ৫২)। তিনি উক্ত আয়াত সম্পর্কে বলেন, আকরা বিন হাবিস আত-তামীমী ও উইয়ায়নাহ বিন হিসন আল-ফাযারী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আসলো। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সুহায়ব, বিলাল, আম্মার ও খাব্বাব ( প্রমুখ দরিদ্র অসহায় মুমিনদের সাথে বসা দেখলো। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চারপাশে তাদের উপবিষ্ট দেখে তাদেরকে হেয় জ্ঞান করলো। তারা তাঁর সান্নিধ্যে এসে একান্তে তাকে বললো, আমরা চাই যে, আপনি আপনার সাথে আমাদের বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন, যাতে আরবরা আমাদের মর্যাদা উপলব্ধি করতে পারে। কেননা আপনার নিকট আরবের প্রতিনিধিদলসমূহ আসে। এই দাসদের সাথে আরবরা আমাদেরকে উপবিষ্ট দেখলে তাতে আমরা লজ্জাবোধ করি। অতএব আমরা যখন আপনার নিকট আসবো তখন আপনি এদেরকে আপনার নিকট থেকে উঠিয়ে দিবেন। আমরা আপনার নিকট থেকে বিদায় নেয়ার পর আপনি ইচ্ছা করলে তাদের সাথে বসুন। তিনি বলেনঃ আচ্ছা! দেখা যাক। তারা বললো, আপনি আমাদের জন্য একটি চুক্তিপত্র লিখিয়ে দিন। রাবী বলেন, তিনি কাগজ আনালেন এবং আলী (রাঃ) কে লেখার জন্য ডাকলেন। আমরা এক পাশে বসা ছিলাম। ইত্যবসরে জিবরীল (আ.) এই আয়াত নিয়ে অবতরণ করলেন (অনুবাদ) “যারা তাদের রবকে সকাল-সন্ধ্যায় ডাকে তার সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাদের তুমি তাড়িয়ে দিও না। তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব তোমার নয় এবং তোমার কাজের জবাবদিহির দায়িত্বও তাদের নয় যে, তুমি তাদের বিতাড়িত করবে। করলে তুমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হবে “(সূরা আনআমঃ ৫২)। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আকরা বিন হাবেস ও উয়াইনা বিন হিসন-এর সম্পর্কে নাযিল করেন (অনুবাদ) “এভাবেই আমি তাদের এক দলকে অন্য দল দ্বারা পরীক্ষা করেছি, যেন তারা বলে, আমাদের মধ্যে কি এদের প্রতিই আল্লাহ অনুগ্রহ করলেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞ লোকেদের সম্পর্কে বিশেষ অবহিত নন?" (সূরা আনআমঃ ৫৩)
অতঃপর আল্লাহ বলেন, “যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে তারা যখন তোমার নিকট আসে, তখন তুমি তাদের বলোঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের প্রতিপালক দয়া করা তার কর্তব্য বলে স্থির করেছেন" (সূরা আনআমঃ ৫৪)। রাবী বলেন, এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর আমরা তাঁর এতো নিকটবতী হলাম যে, আমাদের হাঁটু তাঁর হাঁটুর সাথে লাগিয়ে বসলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাথে বসতেন এবং যখন উঠে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাদের ছেড়ে দাঁড়িয়ে যেতেন। তখন আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাযিল করেন (অনুবাদ) “তুমি নিজেকে ধৈর্য সহকারে রাখবে তাদের সংসর্গে যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে ডাকে তাঁর সন্তোষ লাভের আশায় এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না” (সূরা কাহ্ফঃ ২৮) আর তুমি অভিজাতদের সাথে বসো না এবং যার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি তার অনুসরণ করো না। যে নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং কাজেকর্মে সীমা অতিক্রম করে (অর্থাৎ উয়াইনা ও আকরা) তার কৃতকর্ম বরবাদ হয়েছে। অতঃপর তিনি তাদের সামনে দু ব্যক্তির দৃষ্টান্ত ও পার্থিব জীবনের উপমা পেশ করেন (সূরা কাহফের ৩২ নং ও ৪৫ নং আয়াত দ্রঃ) খাব্বাব (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে বসতাম। যখন তাঁর উঠার সময় হতো তখন আমরা তাঁর আগে উঠে যেতাম, অতঃপর তিনি উঠতেন। [৩৪৫৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১২৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَعْدٍ، قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِينَا سِتَّةٍ فِيَّ وَفِي ابْنِ مَسْعُودٍ وَصُهَيْبٍ وَعَمَّارٍ وَالْمِقْدَادِ وَبِلاَلٍ . قَالَ قَالَتْ قُرَيْشٌ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِنَّا لاَ نَرْضَى أَنْ نَكُونَ أَتْبَاعًا لَهُمْ فَاطْرُدْهُمْ عَنْكَ . قَالَ فَدَخَلَ قَلْبَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مِنْ ذَلِكَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدْخُلَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَلاَ تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ} الآيَةَ .
সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এ আয়াত আমাদের ছ’জন সম্পর্কে নাজিল হয়েছেঃ আমি, বিন মাসঊদ, সুহাইব, আম্মার, মিকদাদ ও বিলাল (রাঃ)। কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললো, আমরা এসব লোকের সাথে বসতে সম্মত নই। আপনি এদেরকে আপনার নিকট থেকে তাড়িয়ে দিন। রাবী বলেন, এ কথা শোনার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্তরে আল্লাহর মর্জি একটা ধারণার উদয় হলো। তখন মহান আল্লাহ এই আয়াত নাযিল করেন (অনুবাদ) : “যারা তাদের রবকে সকাল-সন্ধ্যায় ডাকে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাদের তুমি তাড়িয়ে দিও না। তাদের কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব তোমার নয় এবং তোমার কাজের জবাবদিহির দায়িত্বও তাদের নয় যে, তুমি তাদের বিতাড়িত করবে, করলে তুমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হবে" (সূরা আনআমঃ ৫২)। [৩৪৬০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১২৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১২৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ الْمُخْتَارِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ " وَيْلٌ لِلْمُكْثِرِينَ إِلاَّ مَنْ قَالَ بِالْمَالِ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا " . أَرْبَعٌ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ وَمِنْ قُدَّامِهِ وَمِنْ وَرَائِهِ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রাচুর্যের মালিকদের জন্য ধ্বংস অনিবার্য, তবে যারা ডানে, বায়ে, সামনে পেছনে (আল্লাহর পথে) নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে তারা ব্যতীত। [৩৪৬১]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৩০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩০
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي أَبُو زُمَيْلٍ، - هُوَ سِمَاكٌ - عَنْ مَالِكِ بْنِ مَرْثَدٍ الْحَنَفِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الأَكْثَرُونَ هُمُ الأَسْفَلُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ مَنْ قَالَ بِالْمَالِ هَكَذَا وَهَكَذَا وَكَسَبَهُ مِنْ طَيِّبٍ " .
আবূ যার্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সম্পদশালীরা কিয়ামতের দিন সর্বনিম্ন স্তরে উপনীত হবে। কিন্তু যারা নিজেদের মাল এদিক সেদিক (আল্লাহর পথে) খরচ করে এবং পবিত্র পন্থায় তা উপার্জন করে তারা এর ব্যতিক্রম। [৩৪৬২]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪১৩১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الأَكْثَرُونَ هُمُ الأَسْفَلُونَ إِلاَّ مَنْ قَالَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا " . ثَلاَثًا .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিপুল প্রাচুর্যের মালিকরা হলো নীচু স্তরের লোক। তবে যারা বলেছে, এই দিকে ও এই দিকে বিলিয়ে দাও তারা ব্যতীত। তিনি কথাটি তিনবার বলেছেন। [৩৪৬৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪১৩২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩২
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ كَاسِبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَا أُحِبُّ أَنَّ أُحُدًا عِنْدِي ذَهَبًا فَتَأْتِي عَلَىَّ ثَالِثَةٌ وَعِنْدِي مِنْهُ شَىْءٌ إِلاَّ شَىْءٌ أُرْصِدُهُ فِي قَضَاءِ دَيْنٍ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি পচ্ছন্দ করি না যে, উহুদ পর্বত পরিমাণ স্বর্ণ আমার অধিকারে থাক এবং তৃতীয় দিনেও তার কিছু আমার নিকট অবশিষ্ট থাক, তবে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছাড়া। [৩৪৬৪]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪১৩৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৩
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدِ اللَّهِ، مُسْلِمِ بْنِ مِشْكَمٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ غَيْلاَنَ الثَّقَفِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " اللَّهُمَّ مَنْ آمَنَ بِي وَصَدَّقَنِي وَعَلِمَ أَنَّ مَا جِئْتُ بِهِ هُوَ الْحَقُّ مِنْ عِنْدِكَ - فَأَقْلِلْ مَالَهُ وَوَلَدَهُ وَحَبِّبْ إِلَيْهِ لِقَاءَكَ وَعَجِّلْ لَهُ الْقَضَاءَ وَمَنْ لَمْ يُؤْمِنْ بِي وَلَمْ يُصَدِّقْنِي وَلَمْ يَعْلَمْ أَنَّ مَا جِئْتُ بِهِ هُوَ الْحَقُّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَكْثِرْ مَالَهُ وَوَلَدَهُ وَأَطِلْ عُمْرَهُ " .
আমর বিন গায়লান আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উপর ঈমান এনেছে, আমার সত্যতা স্বীকার করেছে এবং আমি যা নিয়ে এসেছি তা আপনার পক্ষ থেকে আগত সত্য বলে জ্ঞান করেছে, আপনি তার ধনবল ও জনবল হাস করে দিন, আপনার সাক্ষাত তার জন্য প্রিয় বানিয়ে দিন এবং তার মৃত্যু ত্বরান্বিত করুন। আর যে ব্যক্তি আমার উপর ঈমান আনেনি, আমাকে সত্য বলে মেনে নেয়নি এবং আমি যা নিয়ে এসেছি আপনার পক্ষ থেকে আগত সত্য বলে জ্ঞান করেনি আপনি তার ধনবল ও জনবল বৃদ্ধি করুন এবং তার আয়ুক্ষল বৰ্দ্ধিত করুন। [৩৪৬৫]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৩৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا غَسَّانُ بْنُ بُرْزِينَ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا غَسَّانُ بْنُ بُرْزِينَ، حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ سَلاَمَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ السَّلِيطِيِّ، عَنْ نُقَادَةَ الأَسَدِيِّ، قَالَ بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِلَى رَجُلٍ يَسْتَمْنِحُهُ نَاقَةً فَرَدَّهُ ثُمَّ بَعَثَنِي إِلَى رَجُلٍ آخَرَ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ بِنَاقَةٍ فَلَمَّا أَبْصَرَهَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " اللَّهُمَّ بَارِكْ فِيهَا وَفِيمَنْ بَعَثَ بِهَا " . قَالَ نُقَادَةُ فَقُلْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَفِيمَنْ جَاءَ بِهَا قَالَ " وَفِيمَنْ جَاءَ بِهَا " . ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَحُلِبَتْ فَدَرَّتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " اللَّهُمَّ أَكْثِرْ مَالَ فُلاَنٍ " . لِلْمَانِعِ الأَوَّلِ " وَاجْعَلْ رِزْقَ فُلاَنٍ يَوْمًا بِيَوْمٍ " . لِلَّذِي بَعَثَ بِالنَّاقَةِ .
নুকাদাহ আল-আসাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এক ব্যক্তির নিকট থেকে একটি উষ্ট্রী ধার আনার জন্য পাঠান। কিন্তু সে তাকে ধাঁর দিলো না। অতঃপর তিনি আমাকে আরেক ব্যক্তির নিকট পাঠান। সে তার জন্য একটি উষ্ট্রী পাঠিয়ে দিলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উষ্ট্রীটি দেখে বলেনঃ “হে আল্লাহ! তুমি এতে বরকত দাও এবং যে ব্যক্তি এটা পাঠিয়েছে তাকেও”। নুকাদা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললাম, যে ব্যক্তি এ উষ্ট্রী নিয়ে এসেছে তার জন্যও (দুআ’ করুন)। তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি এটা নিয়ে এসেছে তাকেও (বরকত দান করুন)”। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিলে উষ্ট্রীর দুধ দোহন করা হলো এবং তা পরিমাণে পর্যাপ্ত হলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আল্লাহ! অমুক ব্যক্তির ধন বৃদ্ধি করুন, যে প্রথম নিষেধকারী। আর যে ব্যক্তি উস্ট্রীটি পাঠিয়েছে তাকে দৈনিক হারে রিযিক দিন”। [৩৪৬৬]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৩৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ وَعَبْدُ الْقَطِيفَةِ وَعَبْدُ الْخَمِيصَةِ إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ وَإِنْ لَمْ يُعْطَ لَمْ يَفِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনার ও দিরহামের দাসেরা ধ্বংস হোক, সুদৃশ্য চাদর ও কারুকার্যময় চাদরের দাসেরাও ধ্বংস হোক। তাকে দান করা হলে খুশী হয় এবং না দেয়া হলে (কৃত অঙ্গীকার) পূর্ণ করে না। [৩৪৬৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৩৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৬
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ وَعَبْدُ الْخَمِيصَةِ تَعِسَ وَانْتَكَسَ وَإِذَا شِيكَ فَلاَ انْتَقَشَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনার ও দিরহাম ও মূল্যবান চাদরের গোলামেরা ধ্বংস হোক। আল্লাহ এদেরকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। জাহান্নামের কাঁটার খোঁচা খেয়েও সে বের হতে পারবে না। [৩৪৬৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৩৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পার্থিব সম্পদের প্রাচুর্য থাকলেই ঐশ্বর্যশালী হওয়া যায় না। মনের ঐশ্বর্যই প্রকৃত ঐশ্বর্য।[৩৪৬৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৩৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ، وَحُمَيْدِ بْنِ هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيِّ، أَنَّهُمَا سَمِعَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيَّ، يُخْبِرُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ " قَدْ أَفْلَحَ مَنْ هُدِيَ إِلَى الإِسْلاَمِ وَرُزِقَ الْكَفَافَ وَقَنِعَ بِهِ " .
আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছে, যাকে প্রয়োজন মাফিক রিযিক দান করা হয়েছে এবং যে তাতেই পরিতুষ্ট থাকে, সে-ই সফলকাম হয়েছে।[৩৪৭০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৩৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " اللَّهُمَّ اجْعَلْ رِزْقَ آلِ مُحَمَّدٍ قُوتًا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে আল্লাহ্! আপনি মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য কেবল জীবন ধারণোপযোগী (পরিমাণ) রিযিকের ব্যবস্থা করুন।[৩৪৭১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَيَعْلَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ نُفَيْعٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا مِنْ غَنِيٍّ وَلاَ فَقِيرٍ إِلاَّ وَدَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَّهُ أُتِيَ مِنَ الدُّنْيَا قُوتًا " .
আনাস (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন ধনী-গরীব প্রত্যেকেই এই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করবে যে, তাদেরকে যদি পৃথিবীতে জীবন ধারনোপযোগী রিযিক দান করা হতো।[৩৪৭২]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪১৪১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪১
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُجَاهِدُ بْنُ مُوسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي شُمَيْلَةَ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مِحْصَنٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ أَصْبَحَ مِنْكُمْ مُعَافًى فِي جَسَدِهِ آمِنًا فِي سِرْبِهِ عِنْدَهُ قُوتُ يَوْمِهِ فَكَأَنَّمَا حِيزَتْ لَهُ الدُّنْيَا " .
উবায়দুল্লাহ বিন মিহসান আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সুস্থদেহে দিনাতিপাত করে, পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে সকালে উপনীত হয় এবং তার নিকট যদি সারা দিনের খোরাকী থাকে, তাহলে তার জন্য যেন গোটা দুনিয়াই একত্র করা হলো।[৩৪৭৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৪২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَإِنَّهُ أَجْدَرُ أَنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ " . قَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ " عَلَيْكُمْ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা পার্থিব ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে কম সমৃদ্ধশালী লোকেদের প্রতি দৃষ্টি দাও এবং তোমাদের চেয়ে অধিক সমৃদ্ধশালী লোকদের প্রতি তাকিও না। তাহলে তোমাদেরকে দেয়া আল্লাহর নিয়ামত তোমাদের নিকট তুচ্ছ মনে হবে না।[৩৪৭৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ إِنَّمَا يَنْظُرُ إِلَى أَعْمَالِكُمْ وَقُلُوبِكُمْ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক চেহারা ও বিত্ত-বৈভবের প্রতি লক্ষ্য করেন না, বরং তিনি তোমাদের কার্যকলাপ ও অন্তরের দিকে লক্ষ্য রাখেন।[৩৪৭৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنْ كُنَّا آلَ مُحَمَّدٍ ـ صلى الله عليه وسلم ـ لَنَمْكُثُ شَهْرًا مَا نُوقِدُ فِيهِ بِنَارٍ مَا هُوَ إِلاَّ التَّمْرُ وَالْمَاءُ . إِلاَّ أَنَّ ابْنَ نُمَيْرٍ قَالَ نَلْبَثُ شَهْرًا .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর পরিবারবর্গ এক এক মাস এমনভাবে আতিবাহিত করতাম যে, আমাদের চুলায় আগুন জালাতে পারতাম না। খেজুর ও পানিই হতো আমাদের জীবন ধারণের উপকরণ। বিন নুমাইরের বর্ণনায় “নালবাছু” শব্দ এসেছে “নামকুসু”–এর পরিবর্তে (অর্থ একই)।[৩৪৭৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَقَدْ كَانَ يَأْتِي عَلَى آلِ مُحَمَّدٍ ـ صلى الله عليه وسلم ـ الشَّهْرُ مَا يُرَى فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِهِ الدُّخَانُ . قُلْتُ فَمَا كَانَ طَعَامُهُمْ قَالَتِ الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ غَيْرَ أَنَّهُ كَانَ لَنَا جِيرَانٌ مِنَ الأَنْصَارِ جِيرَانُ صِدْقٍ وَكَانَتْ لَهُمْ رَبَائِبُ فَكَانُوا يَبْعَثُونَ إِلَيْهِ أَلْبَانَهَا . قَالَ مُحَمَّدٌ وَكَانُوا تِسْعَةَ أَبْيَاتٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিজনবর্গের কোন কোন মাস এমনভাবে অতিবাহিত হত যে, তাদের কারো ঘরের চুলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যেত না। আমি (আবূ সালামাহ) জিজ্ঞেস করলাম, তাদের আহার্য কি ছিল? তিনি বলেন, তিনি বলেন, দু’টি কালো জিনিসঃ খেজুর ও পানি। তবে আমাদের আনসারী প্রতিবেশীরা ছিলেন অত্যন্ত সত্যপ্রিয়। তারা বকরী পালতেন এবং বকরীর দুধ উপঢৌকন স্বরূপ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য পাঠাতেন। রাবী মুহাম্মাদ বিন আমর (রাঃ) বলেন, তাঁর পরিবারবর্গ নয় ঘরে বিভক্ত ছিলো।[৩৪৭৭]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪১৪৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৬
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَلْتَوِي فِي الْيَوْمِ مِنَ الْجُوعِ مَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأُ بِهِ بَطْنَهُ .
নু’মান বিন বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দিনের বেলা ক্ষুধার তাড়নায় পার্শ্ব পরিবর্তন করতে দেখেছি। তিনি তাঁর উদর পূর্তির জন্য এমনকি রদ্দি খেজুরও পেতেন না।[৩৪৭৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، أَنْبَأَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ مِرَارًا " وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا أَصْبَحَ عِنْدَ آلِ مُحَمَّدٍ صَاعُ حَبٍّ وَلاَ صَاعُ تَمْرٍ " . وَإِنَّ لَهُ يَوْمَئِذٍ تِسْعَ نِسْوَةٍ .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজন এমন অবস্থায় ভোরে উপনীত হতো যে, তাদের নিকট এক সা’ খাদ্যশস্য বা এক সা’ খেজুরও থাকতো না। তখন তাঁর নয়জন স্ত্রী ছিলেন।[৩৪৭৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْمَسْعُودِيُّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا أَصْبَحَ فِي آلِ مُحَمَّدٍ إِلاَّ مُدٌّ مِنْ طَعَامٍ " . أَوْ " مَا أَصْبَحَ فِي آلِ مُحَمَّدٍ مُدٌّ مِنْ طَعَامٍ " .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুহাম্মাদের পরিবারবর্গ এমন অবস্থায় সকালে উপনীত হতো যে, তাদের নিকট এক মুদ্দ পরিমাণ খাদ্যশস্যও থাকতো না।[৩৪৮০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৪৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৪৯
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَبْدِ الأَكْرَمِ، - رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ - عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ، قَالَ أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَمَكَثْنَا ثَلاَثَ لَيَالٍ لاَ نَقْدِرُ - أَوْ لاَ يَقْدِرُ - عَلَى طَعَامٍ .
সুলায়মান বিন সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট এলেন এবং তিন রাত আমাদের সঙ্গে অবস্থান করলেন। তখন আমরা তিন দিন যাবত খাদ্যের সংস্থান করতে পারিনি।[৩৪৮১]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল
৪১৫০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَوْمًا بِطَعَامٍ سُخْنٍ فَأَكَلَ فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ " الْحَمْدُ لِلَّهِ مَا دَخَلَ بَطْنِي طَعَامٌ سُخْنٌ مُنْذُ كَذَا وَكَذَا " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সামনে গরম টাটকা খাবার পেশ করা হলো। তিনি আহার করলেন এবং আহার শেষে বললেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। এতো দিন পর্যন্ত আমার উদরে কখন এরুপ টাটকা উপাদেয় খাদ্য প্রবেশ করেনি।[৩৪৮২]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল
৪১৫১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو خَالِدٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ ضِجَاعُ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَدَمًا حَشْوُهُ لِيفٌ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিছানা ছিল চামড়ার তৈরী। তার ভেতরে খেজুর গাছের ছাল ভর্তি ছিলো।[৩৪৮৩]
৪১৫২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫২
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَتَى عَلِيًّا وَفَاطِمَةَ وَهُمَا فِي خَمِيلٍ لَهُمَا - وَالْخَمِيلُ الْقَطِيفَةُ الْبَيْضَاءُ مِنَ الصُّوفِ - قَدْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ جَهَّزَهُمَا بِهَا وَوِسَادَةٍ مَحْشُوَّةٍ إِذْخِرًا وَقِرْبَةٍ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী ও ফাতিমা (রাঃ) -এর নিকট এলেন। তখন তারা তাদের একটি সাদা পশমী চাদরে আবৃত ছিলেন। তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বিবাহের উপঢৌকন স্বরূপ দিয়েছিলেন। তিনি আরও দিয়েছিলেন ইযখির ঘাস ভর্তি একটি বালিশ এবং পানির একটি মশক।[৩৪৮৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৫৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ أَبُو زُمَيْلٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْعَبَّاسِ، حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ عَلَى حَصِيرٍ قَالَ فَجَلَسْتُ فَإِذَا عَلَيْهِ إِزَارٌ وَلَيْسَ عَلَيْهِ غَيْرُهُ وَإِذَا الْحَصِيرُ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِهِ وَإِذَا أَنَا بِقَبْضَةٍ مِنْ شَعِيرٍ نَحْوَ الصَّاعِ وَقَرَظٍ فِي نَاحِيةٍ فِي الْغُرْفَةِ وَإِذَا إِهَابٌ مُعَلَّقٌ فَابْتَدَرَتْ عَيْنَاىَ فَقَالَ " مَا يُبْكِيكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ " . فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ وَمَا لِيَ لاَ أَبْكِي وَهَذَا الْحَصِيرُ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِكَ وَهَذِهِ خِزَانَتُكَ لاَ أَرَى فِيهَا إِلاَّ مَا أَرَى وَذَلِكَ كِسْرَى وَقَيْصَرُ فِي الثِّمَارِ وَالأَنْهَارِ وَأَنْتَ نَبِيُّ اللَّهِ وَصَفْوَتُهُ وَهَذِهِ خِزَانَتُكَ . قَالَ " يَا ابْنَ الْخَطَّابِ أَلاَ تَرْضَى أَنْ تَكُونَ لَنَا الآخِرَةُ وَلَهُمُ الدُّنْيَا " . قُلْتُ بَلَى .
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রবেশ করলাম। তিনি তখন খেজুর পাতার চাটাইয়ের উপর শোয়া ছিলেন। আমি বসে পড়লাম। তাঁর পরিধানে ছিলো একটি লুঙ্গি। এছাড়া আর কোন বস্ত্র তাঁর পরিধানে ছিলো না। তাঁর পাঁজরে চাটাইয়ের দাগ বসে গিয়েছিলো। আমি দেখলাম যে তাঁর ঘরের এক কোনে ছিলো প্রায় একসা গম, বাবলা গাছের কিছু পাতা এবং ঝুলন্ত একটি পানির মশক। এ অবস্থা দেখে আমার দু’চোখে অশ্রু প্রবাহিত হলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কাঁদছো কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমি কেন কাদবোনা! এই চাটাই আপনার পাঁজরে দাগ কেটে দিয়েছে, আর এই হচ্ছে আপনার ধনভাণ্ডার, এতে যা আছে তা তো দেখতেই পাচ্ছি। এই কিসরা (পারস্যরাজ) ও কায়সার (রোম সম্রাট) বিরাট বিরাট উদ্যান ও ঝর্ণা সমৃদ্ধ অট্টালিকায় বিলাস-ব্যসনে জীবন-যাপন করছে। আর আপনি হলেন আল্লাহর নবী এবং তাঁর মনোনীত প্রিয় বান্দা। আর আপনার ধনভাণ্ডারের অবস্থা এই। তিনি বলেনঃ হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, আমাদের জন্য রয়েছে আখেরাতের স্থায়ী সুখ-শান্তি এবং ওদের জন্য রয়েছে পার্থিব ভোগবিলাস? আমি বললাম, হাঁ।[৩৪৮৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৫৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حَبِيبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ أُهْدِيَتِ ابْنَةُ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِلَىَّ فَمَا كَانَ فِرَاشُنَا لَيْلَةَ أُهْدِيَتْ إِلاَّ مَسْكَ كَبْشٍ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কন্যাকে যেদিন আমার ঘরে তুলে আনা হলো সেদিন রাতে আমাদের বিছানা ছিলো ছাগলের চামড়া।[৩৪৮৬]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৫৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَأْمُرُ بِالصَّدَقَةِ فَيَنْطَلِقُ أَحَدُنَا يَتَحَامَلُ حَتَّى يَجِيءَ بِالْمُدِّ وَإِنَّ لأَحَدِهِمُ الْيَوْمَ مِائَةَ أَلْفٍ . قَالَ شَقِيقٌ كَأَنَّهُ يُعَرِّضُ بِنَفْسِهِ .
আবূ মাসঊদ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দান-খয়রাত করার নির্দেশ দিতেন। তাই আমাদের কেউ শ্রমিকের কাজ করতে যেতেন এবং এক মুদ্দ উপার্জন করে নিয়ে আসতেন (অতঃপর তা থেকে দান-খয়রাত করতেন)। আর আজকের দিনে তাদের কেউ কেউ লাখো দিরহামের মালিক। শাকীক (রাঃ) বলেন, তিনি উক্ত কথা দ্বারা নিজের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।[৩৪৮৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৫৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبِي نَعَامَةَ، سَمِعَهُ مِنْ، خَالِدِ بْنِ عُمَيْرٍ قَالَ خَطَبَنَا عُتْبَةُ بْنُ غَزْوَانَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ لَقَدْ رَأَيْتُنِي سَابِعَ سَبْعَةٍ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَا لَنَا طَعَامٌ نَأْكُلُهُ إِلاَّ وَرَقُ الشَّجَرِ حَتَّى قَرِحَتْ أَشْدَاقُنَا .
খালিদ বিন উমায়র (মাকবূল) থেকে বর্ণিতঃ
উতবাহ বিন গায্ওয়ান (রাঃ) মিম্বারে দাঁড়িয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে সাতজনের মধ্যে সপ্তমজন ছিলাম। গাছের পাতা ছাড়া আমাদের আহারের জন্য আমাদের সাথে আর কিছু ছিলো না। শেষে আমাদের মাড়ির ছাল উঠে গিয়েছিলো।[৩৪৮৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৫৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَبَّاسٍ الْجُرَيْرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عُثْمَانَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُمْ أَصَابَهُمْ جُوعٌ وَهُمْ سَبْعَةٌ قَالَ فَأَعْطَانِي النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَبْعَ تَمَرَاتٍ لِكُلِّ إِنْسَانٍ تَمْرَةٌ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা সাতজন চরম অনাহারের শিকার হলেন। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক ব্যক্তিকে একটি করে খেজুর দেয়ার জন্য আমাকে মোট সাতটি খেজুর দিলেন।[৩৪৮৯]
তাহকীক আলবানীঃ (আরবী) বাক্যটি ব্যতীত সহীহ।
৪১৫৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ الْعَدَنِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ} قَالَ الزُّبَيْرُ وَأَىُّ نَعِيمٍ نُسْأَلُ عَنْهُ وَإِنَّمَا هُوَ الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ . قَالَ " أَمَا إِنَّهُ سَيَكُونُ "
যুবায়র ইবনুল আওওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন "এরপর অবশ্যই সেদিন তোমাদেরকে নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে" (সূরা তাকাসুরঃ ৮) শীর্ষক আয়াত নাযিল হলো, তখন যুবাইর (রাঃ) বলেন, আমাদের নিকট এমন কী নিআমাত আছে যে সম্পর্কে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আমাদের নিকট দু’টি কালো জিনিস অর্থাৎ খেজুর ও পানি আছে। তিনি বলেনঃ তা অচিরেই (তোমাদের হস্তগত) হবে।[৩৪৯০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৫৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৫৯
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَنَحْنُ ثَلاَثُمِائَةٍ نَحْمِلُ أَزْوَادَنَا عَلَى رِقَابِنَا فَفَنِيَ أَزْوَادُنَا حَتَّى كَانَ يَكُونُ لِلرَّجُلِ مِنَّا تَمْرَةٌ . فَقِيلَ يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ وَأَيْنَ تَقَعُ التَّمْرَةُ مِنَ الرَّجُلِ فَقَالَ لَقَدْ وَجَدْنَا فَقْدَهَا حِينَ فَقَدْنَاهَا وَأَتَيْنَا الْبَحْرَ فَإِذَا نَحْنُ بِحُوتٍ قَدْ قَذَفَهُ الْبَحْرُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ يَوْمًا .
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের তিনশত লোককে (এক সামরিক অভিযানে) পাঠান। আমরা আমাদের রসদপত্র নিজ নিজ কাঁধে বহন করেছিলাম। আমাদের খাদ্য প্রায় ফুরিয়ে এলো। আমাদের মাথাপিছু একটি করে খেজুর থাকলো। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আবূ আবদুল্লাহ! একটি মাত্র খেজুরে একজন লোকের কি হতো? তিনি বলেন, যখন মাথাপিছু একটি করে খেজুরও শেষ হয়ে গেলো, তখন আমরা এর কদর বুঝতে পারলাম। আমরা সমুদ্র তীরে উপনীত হয়ে তথায় একটি বিরাটাকায় মাছ দেখতে পেলাম, যেটিকে সমুদ্র তরঙ্গ তীরে নিক্ষেপ করেছিল। আমরা আঠারো দিন ধরে সেই মাছটি আহার করলাম।[৩৪৯১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي السَّفَرِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ مَرَّ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَنَحْنُ نُعَالِجُ خُصًّا لَنَا فَقَالَ " مَا هَذَا " . فَقُلْتُ خُصٌّ لَنَا وَهَى نَحْنُ نُصْلِحُهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا أُرَى الأَمْرَ إِلاَّ أَعْجَلَ مِنْ ذَلِكَ " .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমরা আমাদের একটি কুঁড়েঘর মেরামত করছিলাম। তিনি বলেনঃ এটা কী? আমি বললাম, আমাদের কুঁড়েঘর। সেটি আমরা মেরামত করছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি তো দেখছি মৃত্যু তার চেয়েও দ্রুত এসে যাচ্ছে।[৩৪৯২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬১
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عُثْمَانَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى بْنِ أَبِي فَرْوَةَ، حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِقُبَّةٍ عَلَى بَابِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ " مَا هَذِهِ " . قَالُوا قُبَّةٌ بَنَاهَا فُلاَنٌ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " كُلُّ مَالٍ يَكُونُ هَكَذَا فَهُوَ وَبَالٌ عَلَى صَاحِبِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَبَلَغَ الأَنْصَارِيَّ ذَلِكَ فَوَضَعَهَا فَمَرَّ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بَعْدُ فَلَمْ يَرَهَا فَسَأَلَ عَنْهَا فَأُخْبِرَ أَنَّهُ وَضَعَهَا لِمَا بَلَغَهُ عَنْكَ فَقَالَ " يَرْحَمُهُ اللَّهُ يَرْحَمُهُ اللَّهُ " .
আনাস (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক আনসারীর গোলাকার ঘরের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কী? তারা বলেন, এটা অমুকের তৈরি একটি গোলাকার ঘর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরূপ যেকোনো সম্পদ কিয়ামতের দিন তার মালিকের জন্য বিপদের কারণ হবে। এ কথা আনসারীর নিকট পৌঁছলে তিনি ঘরখানি ভেঙ্গে ফেলেন। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই পথে যেতে ঘরটি না দেখতে পেয়ে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তাঁকে জানানো হলো, আপনার কথা তার কানে পৌঁছার পর সে তা ভেঙ্গে ফেলেছে। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তার প্রতি দয়া করুন, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করুন।[৩৪৯৩]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৬২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ، عَنْ أَبِيهِ، سَعِيدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُنِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بَنَيْتُ بَيْتًا يُكِنُّنِي مِنَ الْمَطَرِ وَيُكِنُّنِي مِنَ الشَّمْسِ مَا أَعَانَنِي عَلَيْهِ خَلْقُ اللَّهِ تَعَالَى .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নিজেকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম যে, আমি রোদ-বৃষ্টি থেকে আশ্রয়ের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করছি। কিন্তু মহান আল্লাহর সৃষ্টির কেউ আমাকে সহযোগিতা করেনি।[৩৪৯৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৩
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ مُضَرِّبٍ، قَالَ أَتَيْنَا خَبَّابًا نَعُودُهُ فَقَالَ لَقَدْ طَالَ سُقْمِي وَلَوْلاَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " لاَ تَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ " . لَتَمَنَّيْتُهُ وَقَالَ " إِنَّ الْعَبْدَ لَيُؤْجَرُ فِي نَفَقَتِهِ كُلِّهَا إِلاَّ فِي التُّرَابِ " . أَوْ قَالَ " فِي الْبِنَاءِ " .
খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা অসুস্থ খাব্বাব (রাঃ) কে দেখতে এলাম। তখন তিনি বলেন, আমার অসুস্থাবস্থা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যদি আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে না শুনতামঃ "তোমরা মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা করো না", তাহলে অবশ্যই আমি মৃত্যু কামনা করতাম। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয় বান্দা তার প্রতিটি ব্যয়ের জন্য প্রতিদান পাবে, মাটিতে ব্যয় করার বা ইমারত নির্মাণ ব্যয় ব্যতীত।[৩৪৯৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৪
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنِ ابْنِ هُبَيْرَةَ، عَنْ أَبِي تَمِيمٍ الْجَيْشَانِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " لَوْ أَنَّكُمْ تَوَكَّلْتُمْ عَلَى اللَّهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرَزَقَكُمْ كَمَا يَرْزُقُ الطَّيْرَ تَغْدُو خِمَاصًا وَتَرُوحُ بِطَانًا " .
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যদি তোমারা যথার্থই আল্লাহর উপর ভরসা করতে, তাহলে তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে পাখির মত রিযিক দান করতেন। ভোরবেলা পাখিরা খালিপেটে (বাসা থেকে) বের হয়ে যায় এবং সন্ধ্যাবেলা উদর পূর্তি করে (বাসায়) ফিরে আসে।[৩৪৯৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سَلاَّمِ بْنِ شُرَحْبِيلَ أَبِي شُرَحْبِيلَ، عَنْ حَبَّةَ، وَسَوَاءٍ، ابْنَىْ خَالِدٍ قَالاَ دَخَلْنَا عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ يُعَالِجُ شَيْئًا فَأَعَنَّاهُ عَلَيْهِ فَقَالَ " لاَ تَيْأَسَا مِنَ الرِّزْقِ مَا تَهَزَّزَتْ رُءُوسُكُمَا فَإِنَّ الإِنْسَانَ تَلِدُهُ أُمُّهُ أَحْمَرَ لَيْسَ عَلَيْهِ قِشْرٌ ثُمَّ يَرْزُقُهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ " .
খালিদের পুত্রদ্বয় হাব্বাহ ও সাওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট প্রবেশ করলাম। তখন তিনি কিছু মেরামত করছিলেন। আমরা তাঁকে তাতে সহায়তা করলাম। তিনি বলেনঃ যতক্ষন তোমাদের মাথা সুস্থ থাকবে (তোমরা জীবিত থাকবে) , তোমরা রিযিকের ব্যাপারে নিরাশ হয়ো না। মানুষকে তো তার মা রক্তাপ্লুত ও ক্ষীণ চামড়াযুক্ত অবস্থায় প্রসব করে, সেই অবস্থায়ও মহান আল্লাহ তাকে রিযিক দান করেন।[৩৪৯৭]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৬৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو شُعَيْبٍ، صَالِحُ بْنُ رُزَيْقٍ الْعَطَّارُ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجُمَحِيُّ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُلَىِّ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ مِنْ قَلْبِ ابْنِ آدَمَ بِكُلِّ وَادٍ شُعْبَةً فَمَنِ اتَّبَعَ قَلْبُهُ الشُّعَبَ كُلَّهَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ بِأَىِّ وَادٍ أَهْلَكَهُ وَمَنْ تَوَكَّلَ عَلَى اللَّهِ كَفَاهُ التَّشَعُّبَ " .
আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদম সন্তানের অন্তরের প্রতিটি ময়দানে অনেক পথ রয়েছে। যে ব্যক্তি তার অন্তরের প্রতিটি ময়দানের সকল পথ অনুসরণ করে, আল্লাহ তাকে যে কোন ময়দানে ধ্বংস করতে পরোয়া করেন না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, সে সর্বপ্রকার পথ থেকে মুক্তি পায়।[৩৪৯৮]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৬৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " لاَ يَمُوتَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ إِلاَّ وَهُوَ يُحْسِنُ الظَّنَّ بِاللَّهِ " .
জাবির (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যেন অবশ্যই আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করা ব্যতিরেকে মারা না যায়।[৩৪৯৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِي كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَلاَ تَعْجِزْ فَإِنْ غَلَبَكَ أَمْرٌ فَقُلْ قَدَّرَ اللَّهُ وَمَا شَاءَ فَعَلَ وَإِيَّاكَ وَاللَّوْ فَإِنَّ اللَّوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ শক্তিমান মুমিন ব্যক্তি দুর্বল মুমিন ব্যক্তির তুলনায় উত্তম এবং আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। অবশ্য উভয়ের মধ্যে কল্যাণ আছে। তোমাদের জন্য উপকারী প্রতিটি উত্তম কাজের প্রতি আগ্রহী হও এবং অলস বা গাফিল হয়ো না। কোন কাজ তোমাকে পরাভূত করলে তুমি বলো, আল্লাহ নির্দ্ধারণ করেছেন এবং নিজ মর্জি মাফিক করে রেখেছেন। “যদি” শব্দ সম্পর্কে সাবধান থাকো। কেননা “যদি” শয়তানের কর্মের পথ উম্মুক্ত করে।[৩৫০০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৬৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৬৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْفَضْلِ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الْكَلِمَةُ الْحِكْمَةُ ضَالَّةُ الْمُؤْمِنِ حَيْثُمَا وَجَدَهَا فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা মু‘মিনের হারানো ধন। সুতরাং সে যেখানেই তা পাবে, সে-ই হবে তার অধিকারী।[৩৫০১]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪১৭০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭০
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ " .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এমন দু’টি নিয়ামত আছে যে ব্যাপারে অধিকাংশ লোক ধোঁকায় পতিতঃ সুস্বাস্থ্য ও সুসময় বা অবসর।[৩৫০২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৭১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا الْفُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، حَدَّثَنِي عُثْمَانُ بْنُ جُبَيْرٍ، - مَوْلَى أَبِي أَيُّوبَ - عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي وَأَوْجِزْ . قَالَ " إِذَا قُمْتَ فِي صَلاَتِكَ فَصَلِّ صَلاَةَ مُوَدِّعٍ وَلاَ تَكَلَّمْ بِكَلاَمٍ تَعْتَذِرُ مِنْهُ وَأَجْمِعِ الْيَأْسَ عَمَّا فِي أَيْدِي النَّاسِ " .
আবূ আয়্যূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে সংক্ষেপে শিখিয়ে দিন। তিনি বলেনঃ যখন তুমি তোমার নামাযে দাঁড়াবে, তখন এমনভাবে নামায পড়ো, যেন এটাই তোমার শেষ নামায। তুমি এমন কথা বলো না, যার জন্য তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে। আর মানুষের হাতে যা আছে তা থেকে নিরাশ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতজ্ঞ হও।[৩৫০৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৭২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَثَلُ الَّذِي يَجْلِسُ يَسْمَعُ الْحِكْمَةَ ثُمَّ لاَ يُحَدِّثُ عَنْ صَاحِبِهِ إِلاَّ بِشَرِّ مَا يَسْمَعُ كَمَثَلِ رَجُلٍ أَتَى رَاعِيًا فَقَالَ يَا رَاعِي أَجْزِرْنِي شَاةً مِنْ غَنَمِكَ . قَالَ اذْهَبْ فَخُذْ بِأُذُنِ خَيْرِهَا . فَذَهَبَ فَأَخَذَ بِأُذُنِ كَلْبِ الْغَنَمِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মজলিসে বসে প্রজ্ঞাপূর্ণ কথাগুলো গোপন রাখলো, সে এমন এক ব্যক্তির সাথে তুলনীয় যে কোন রাখালের নিকট গিয়ে বললো, হে রাখাল! তোমার পাল থেকে আমাকে একটি বকরী দাও। রাখাল বললো, তুমি যাও এবং তোমার পছন্দমত পালের মধ্যকার উত্তম বকরীটি নাও। কিন্তু সে গিয়ে বকরীর পালের (পাহারারত) কুকুরের কান ধরে নিয়ে এল।[৩৫০৪]
[উপরক্ত হাদীসের মোট দুটি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সনদ টি হলোঃ]
৫/৪১৭২ (১) আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , সূত্রে সামান্য শাব্দিক পার্থক্যসহ পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।[৩৫০৪]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
উক্ত হাদীস এর রাবী ১, আলী বিন যায়দ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তার হাদীস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বাল ও ইয়াহইয়া বিন মঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইয়া’কুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল-আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০,২০/৪৩৪নং পৃষ্ঠা) । ২, আওস বিন খালিদ সম্পর্কে আবুল হাসান ইবনুল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়না। আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি কুফরী নয় এমন কাওলী বা আমলী কোন ফিসক এর সাথে জড়িত। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না।
৪১৭৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، ح وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَسْلَمَةَ، جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ كِبْرٍ وَلاَ يَدْخُلُ النَّارَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ " .
আবদুল্লাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণও (সামান্যতম) অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান আছে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।[৩৫০৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৭৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৪
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنِ الأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَقُولُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ الْكِبْرِيَاءُ رِدَائِي وَالْعَظَمَةُ إِزَارِي مَنْ نَازَعَنِي وَاحِدًا مِنْهُمَا أَلْقَيْتُهُ فِي جَهَنَّمَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, অহংকার আমার চাদর, মহানত্ব আমার লুঙ্গি। কেউ এ দু’টির কোন একটি নিয়ে আমার সাথে বিবাদ করলে, আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।[৩৫০৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৭৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، وَهَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَقُولُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ الْكِبْرِيَاءُ رِدَائِي وَالْعَظَمَةُ إِزَارِي فَمَنْ نَازَعَنِي وَاحِدًا مِنْهُمَا أَلْقَيْتُهُ فِي النَّارِ "
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, অহংকার আমার চাদর, মহানত্ব আমার লুঙ্গি। কেউ এ দু’টির কোন একটি নিয়ে আমার সাথে বিবাদ করলে , আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।[৩৫০৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৭৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৬
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ دَرَّاجًا، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ يَتَوَاضَعْ لِلَّهِ سُبْحَانَهُ دَرَجَةً يَرْفَعْهُ اللَّهُ بِهِ دَرَجَةً وَمَنْ يَتَكَبَّرْ عَلَى اللَّهِ دَرَجَةً يَضَعْهُ اللَّهُ بِهِ دَرَجَةً حَتَّى يَجْعَلَهُ فِي أَسْفَلِ السَّافِلِينَ "
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এক স্তর বিনয়ী হবে, আল্লাহ তার মর্যাদা এক স্তর উঁচু করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর বিরূদ্ধে এক স্তর অহংকার করবে, আল্লাহ তার মর্যাদা এক স্তর নীচু করে দিবেন। শেষ পর্যন্ত তিনি তাকে হীনতাগ্রস্তদের মধ্যে হীনতমে পরিণত করবেন।[৩৫০৮]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৭৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৭
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، وَسَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ إِنْ كَانَتِ الأَمَةُ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَتَأْخُذُ بِيَدِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَمَا يَنْزِعُ يَدَهُ مِنْ يَدِهَا حَتَّى تَذْهَبَ بِهِ حَيْثُ شَاءَتْ مِنَ الْمَدِينَةِ فِي حَاجَتِهَا .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদীনার কোন দাসী নিজ প্রয়োজনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাত ধরে তাঁকে নিজ ইচ্ছামতো মদিনার কোন স্থানে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি তার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিতেন না (তার সাথে যেতেন)।[৩৫০৯]
তাহকিক আলবানিঃ সহীহ।
৪১৭৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৮
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مُسْلِمٍ الأَعْوَرِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَعُودُ الْمَرِيضَ وَيُشَيِّعُ الْجِنَازَةَ وَيُجِيبُ دَعْوَةَ الْمَمْلُوكِ وَيَرْكَبُ الْحِمَارَ وَكَانَ يَوْمَ قُرَيْظَةَ وَالنَّضِيرِ عَلَى حِمَارٍ وَيَوْمَ خَيْبَرَ عَلَى حِمَارٍ مَخْطُومٍ بِرَسَنٍ مِنْ لِيفٍ وَتَحْتَهُ إِكَافٌ مِنْ لِيفٍ "
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুগ্নকে দেখতে যেতেন, জানাযায় শরীক হতেন, ক্রীতদাসের দাওয়াত কবুল করতেন এবং গাধার পিঠে সওয়ার হতেন। তিনি বনূ কুরায়যা ও বনূ নাযীরে যুদ্ধের দিন একটি গাধার পিঠে আরোহিত ছিলেন। খায়বারের যুদ্ধের দিনও তিনি নাসারন্ধ্রে খেজুর গাছের বাকলের তৈরী লাগাম বাঁধা গাধায় সওয়ার ছিলেন। তার নিচে ছিল খেজুর গাছের বাকলের আঁশ দ্বারা তৈরী গদি।[৩৫১০]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৭৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৭৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مَطَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ حِمَارٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ خَطَبَهُمْ فَقَالَ " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَوْحَى إِلَىَّ أَنْ تَوَاضَعُوا حَتَّى لاَ يَفْخَرَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ " .
ইয়াদ বিন হিমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ মহামহিম আল্লাহ আমার নিকট ওহী প্রেরন করেন যে, তোমরা বিনয়ী হও, নম্রতা অবলম্বন করো, এমনকি একজন যেন অপরজনের উপর অহংকার প্রকাশ না করে।[৩৫১১]
তাহকিক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي عُتْبَةَ، - مَوْلًى لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ - عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَشَدَّ حَيَاءً مِنْ عَذْرَاءَ فِي خِدْرِهَا وَكَانَ إِذَا كَرِهَ شَيْئًا رُئِيَ ذَلِكَ فِي وَجْهِهِ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্দানশীল কুমারীর চেয়েও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি কোন জিনিস অপছন্দ করলে তা তাঁর চেহারায় প্রতিভাত হতো বা তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা যেতো।[৩৫১২]
তাহকিক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ لِكُلِّ دِينٍ خُلُقًا وَخُلُقُ الإِسْلاَمِ الْحَيَاءُ " .
আনাস (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি ধর্মেরই একটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। আর ইসলামের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো 'লজ্জাশীলতা'।[৩৫১৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৮২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْوَرَّاقُ، حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ الْقُرَظِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ لِكُلِّ دِينٍ خُلُقًا وَإِنَّ خُلُقَ الإِسْلاَمِ الْحَيَاءُ " .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় প্রতিটি ধর্মের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। ইসলামের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো ‘লজ্জাশীলতা’।[৩৫১৪]
তাহকিক আলবানীঃ হাসান।
৪১৮৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৩
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلاَمِ النُّبُوَّةِ الأُولَى إِذَا لَمْ تَسْتَحِي فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ "
আবূ মাসঊদ উকবাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ পূর্ববর্তী নবীগণের বাণী থেকে যা পেয়েছে তার মধ্যে আছে, "তোমার লজ্জা-শরম না থাকলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারো"।[৩৫১৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৪
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الْحَيَاءُ مِنَ الإِيمَانِ وَالإِيمَانُ فِي الْجَنَّةِ وَالْبَذَاءُ مِنَ الْجَفَاءِ وَالْجَفَاءُ فِي النَّارِ " .
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ। আর ঈমানের অবস্থান হল জান্নাতে। আর অশ্লীলতা হল অত্যাচার (জুলুম) , আর অত্যাচার থাকবে জাহান্নামে।[৩৫১৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَا كَانَ الْفُحْشُ فِي شَىْءٍ قَطُّ إِلاَّ شَانَهُ وَلاَ كَانَ الْحَيَاءُ فِي شَىْءٍ قَطُّ إِلاَّ زَانَهُ " .
আনাস (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা কোন বস্তুর কেবল কদর্যতাই বৃদ্ধি করে এবং লজ্জা-শরম কোন জিনিসের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে।[৩৫১৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৬
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي مَرْحُومٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ كَظَمَ غَيْظًا وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُنْفِذَهُ دَعَاهُ اللَّهُ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ فِي أَىِّ الْحُورِ شَاءَ " .
মুআয বিন আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের ক্রোধকে কার্যে পরিনত করার ক্ষমতা রেখেও তা সংবরণ করে, আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন সমগ্র সৃষ্টির সামনে ডেকে আনবেন এবং জান্নাতের যে কোন হূর নিজের ইচ্ছামত বেছে নেয়ার অধিকার দান করবেন। [৩৫১৮]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৮৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ دِينَارٍ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ عُمَارَةَ الْعَبْدِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " أَتَتْكُمْ وُفُودُ عَبْدِ الْقَيْسِ " . وَمَا يَرَى أَحَدٌ فَبَيْنَا نَحْنُ كَذَلِكَ إِذْ جَاءُوا فَنَزَلُوا فَأَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَبَقِيَ الأَشَجُّ الْعَصَرِيُّ فَجَاءَ بَعْدُ فَنَزَلَ مَنْزِلاً فَأَنَاخَ رَاحِلَتَهُ وَوَضَعَ ثِيَابَهُ جَانِبًا ثُمَّ جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَا أَشَجُّ إِنَّ فِيكَ لَخَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمَ وَالتُّؤَدَةَ " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَشَىْءٌ جُبِلْتُ عَلَيْهِ أَمْ شَىْءٌ حَدَثَ لِي قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " بَلَ شَىْءٌ جُبِلْتَ عَلَيْهِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি বলেনঃ তোমাদের নিকট আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধিদল এসেছে। কিন্তু তখনও আমাদের সামনে কাউকে দেখা যাচ্ছিলো না। এ অবস্থায় আমাদের কিছুক্ষণ অতিবাহিত হল। ইতোমধ্যে তারা এসে পৌঁছলো এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) 'র নিকট হাযির হলো, কেবল আশাজ্জ আল-আসারী তখনো পৌঁছেননি। পরে তিনি এসে পৌঁছে একটি স্থানে অবতরণ করে তার উষ্ট্রী বাঁধলেন, নিজের কাপড় একপাশে রাখলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হাযির হলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ হে আশাজ্জ! তোমার মধ্যে এমন দু'টি উত্তম স্বভাব বিদ্যামান, যা আল্লাহ পছন্দ করেনঃ সহনশীলতা ও আত্মমর্যাদাবোধ। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মধ্যে তা কি প্রকৃতিগত না সৃষ্টিগত? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রকৃতিগত।[৩৫১৯]
তাহকিক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪১৮৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الْهَرَوِيُّ، حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْفَضْلِ الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لِلأَشَجِّ الْعَصَرِيِّ " إِنَّ فِيكَ خَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمَ وَالْحَيَاءَ "
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশাজ্জ আল-আসারীকে বলেনঃ নিশ্চয় তোমার মধ্যে এমন দু'টি উত্তম স্বভাব বিদ্যমান, যা আল্লাহ পছন্দ করেনঃ সহনশীলতা ও লজ্জাশীলতা।[৩৫২০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৮৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৮৯
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ يُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا مِنْ جُرْعَةٍ أَعْظَمُ أَجْرًا عِنْدَ اللَّهِ مِنْ جُرْعَةِ غَيْظٍ كَظَمَهَا عَبْدٌ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বান্দার ক্রোধ সংবরণে যে মহান প্রতিদান রয়েছে তা অন্য কিছু সংবরণে নেই।[৩৫২১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৯০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، أَنْبَأَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، أَنْبَأَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُهَاجِرٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ مُوَرِّقٍ الْعِجْلِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنِّي أَرَى مَا لاَ تَرَوْنَ وَأَسْمَعُ مَا لاَ تَسْمَعُونَ إِنَّ السَّمَاءَ أَطَّتْ وَحُقَّ لَهَا أَنْ تَئِطَّ مَا فِيهَا مَوْضِعُ أَرْبَعِ أَصَابِعَ إِلاَّ وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِدًا لِلَّهِ . وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بِالنِّسَاءِ عَلَى الْفُرُشَاتِ وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأَرُونَ إِلَى اللَّهِ " . وَاللَّهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ شَجَرَةً تُعْضَدُ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় আমি দেখি যা তোমরা দেখো না এবং আমি শুনি যা তোমরা শোনো না। আসমান চড়চড় করছে এবং চড়চড় করাই তার কর্তব্য। তাতে চার আঙ্গুল পরিমান জায়গাও খালি নাই, যেখানে একজন না একজন ফেরেশতা আল্লাহর জন্য সিজদায় তার কপাল লুটিয়ে দেননি। আল্লাহর শপথ! আমি যা জানি, তোমরা তা জানতে পারলে খুব কমই হাসতে, বরং অধিক কাঁদতে, বিছানায় স্ত্রীদের সম্ভোগ করতে না এবং চীৎকার করে আল্লাহর কাছে দুআ’ করতে করতে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়তে। আল্লাহর শপথ! আহা, আমি যদি একটি গাছ হতাম এবং তা কেটে ফেলা হতো।[৩৫২২]
তাহকীক আলবানীঃ (আরবি) বাক্যটি ব্যতীত হাসান; কারন এই বাক্যটি মুদরাজ।
উক্ত হাদীসের রাবী ইব্রাহীম বিন মুহাজির সম্পর্কে আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনূ হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার হিফয শক্তি দুর্বল। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। সুফিয়ান বিন উইয়ায়নাহ তাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সা'দ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ( তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০, ২/২১১ নং পৃষ্ঠা )
৪১৯১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যা জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে খুব কমই হাসতে এবং প্রচুর কাঁদতে।[৩৫২৩]
তাহকীক আলবাণীঃ সহীহ।
৪১৯২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ يَعْقُوبَ الزَّمْعِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، أَنَّ عَامِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، لَمْ يَكُنْ بَيْنَ إِسْلاَمِهِمْ وَبَيْنَ أَنْ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ يُعَاتِبُهُمُ اللَّهُ بِهَا إِلاَّ أَرْبَعُ سِنِينَ {وَلاَ يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَكَثِيرٌ مِنْهُمْ فَاسِقُونَ} .
আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আমির বিন আব্দুল্লাহ) বলেন, তার পিতা তাকে অবহিত করেছেন যে, তাদের ইসলাম গ্রহণ এবং তাদেরকে তিরস্কার করে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিলের মধ্যে চার বছরের ব্যবধান ছিলো। (অনুবাদ) : "এরা যেন তাদের মতো না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। অতঃপর তাদের উপর দীর্ঘ কাল অতিবাহিত হওয়ায় তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী" (সূরা হাদীদঃ ১৬)।[৩৫২৪]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৯৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو بِشْرٍ، بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ تُكْثِرُوا الضَّحِكَ فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْبَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অধিক হাসবে না। কারন অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়। [৩৫২৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৯৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৪
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ لِيَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " اقْرَأْ عَلَىَّ " . فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ بِسُورَةِ النِّسَاءِ حَتَّى إِذَا بَلَغْتُ {فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيدًا} فَنَظَرْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَدْمَعَانِ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেনঃ আমাকে কুরআন পড়ে শুনাও। আমি তাঁকে সূরা নিসা পড়ে শুনালাম। আমি যখন এ আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলাম (অনুবাদঃ) “যখন আমি প্রত্যেক উম্মাত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করবো এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করবো, তখন কী অবস্থা হবে” (সূরা নিসাঃ ৪১) , তখন আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, তাঁর দু’চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।[৩৫২৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪১৯৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৫
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ دِينَارٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ الْخُرَاسَانِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي جِنَازَةٍ فَجَلَسَ عَلَى شَفِيرِ الْقَبْرِ فَبَكَى حَتَّى بَلَّ الثَّرَى ثُمَّ قَالَ " يَا إِخْوَانِي لِمِثْلِ هَذَا فَأَعِدُّوا " .
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। তিনি কবরের কিনারে বসে কাঁদলেন, এমনকি তাঁর চোখের পানিতে মাটি ভিজে গেলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ “হে ভাইসব! তোমাদের অবস্থাও তার মতই হবে, সুতরাং তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করো”।[৩৫২৭]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৯৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ بَشِيرِ بْنِ ذَكْوَانَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو رَافِعٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " ابْكُوا فَإِنْ لَمْ تَبْكُوا فَتَبَاكَوْا " .
সা’দ বিন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কান্নাকাটি করো, যদি কাঁদতে না পারো তবে কান্নার ভান করো বা কাঁদতে চেষ্টা করো।[৩৫২৮]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৯৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدِّمَشْقِيُّ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، حَدَّثَنِي حَمَّادُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ الزُّرَقِيُّ، عَنْ عَوْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا مِنْ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ يَخْرُجُ مِنْ عَيْنَيْهِ دُمُوعٌ وَإِنْ كَانَ مِثْلَ رَأْسِ الذُّبَابِ مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ثُمَّ تُصِيبُ شَيْئًا مِنْ حُرِّ وَجْهِهِ - إِلاَّ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ " .
আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মুমিন বান্দার দু’চোখ থেকে আল্লাহর ভয়ে পানি বের হয়, যদিও তা মাছির মাথার পরিমাণ হয়, এবং তা কপাল বেয়ে পড়ে, তাতে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন।[৩৫২৯]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪১৯৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعِيدٍ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ {وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ} أَهُوَ الرَّجُلُ الَّذِي يَزْنِي وَيَسْرِقُ وَيَشْرَبُ الْخَمْرَ قَالَ " لاَ يَا بِنْتَ أَبِي بَكْرٍ - أَوْ يَا بِنْتَ الصِّدِّيقِ - وَلَكِنَّهُ الرَّجُلُ يَصُومُ وَيَتَصَدَّقُ وَيُصَلِّي وَهُوَ يَخَافُ أَنْ لاَ يُتَقَبَّلَ مِنْهُ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসুল! (অনুবাদঃ) “এবং যারা তাদের প্রভুর নিকট প্রত্যাবর্তন করবে, এই বিশ্বাসে তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে” (সুরা মুমিনূনঃ৬০) , এর দ্বারা কি এমন ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে ব্যভিচার করে, চুরি করে এবং মদ্যপান করে? তিনি বলেনঃ না, হে আবূ বাকরের কন্যা, হে সিদ্দীকের কন্যা! বরং উক্ত আয়াতে এমন ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে রোযা রাখে, যাকাত দেয়, দান-খয়রাত করে, নামায পড়ে এবং আশংকা করে যে, তার এসব ইবাদত কবুল হল কি না?[৩৫৩০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪১৯৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪১৯৯
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عِمْرَانَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو عَبْدِ رَبٍّ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " إِنَّمَا الأَعْمَالُ كَالْوِعَاءِ إِذَا طَابَ أَسْفَلُهُ طَابَ أَعْلاَهُ وَإِذَا فَسَدَ أَسْفَلُهُ فَسَدَ أَعْلاَهُ " .
মুআবিয়াহ বিন আবূ সুফইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আমল হল পাত্রের মত। পাত্রের তলা অক্ষত থাকলে তার উপরিভাগও অক্ষত থাকে এবং তার তলা নষ্ট হয়ে গেলে তার উপরিভাগও নষ্ট হয়ে যায়। [৩৫৩১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২০০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০০
حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، عَنْ وَرْقَاءَ بْنِ عُمَرَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ ذَكْوَانَ أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا صَلَّى فِي الْعَلاَنِيَةِ فَأَحْسَنَ وَصَلَّى فِي السِّرِّ فَأَحْسَنَ - قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَذَا عَبْدِي حَقًّا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা প্রকাশ্যে ও গোপনে উত্তমরূপে নামায পড়লে মহান আল্লাহ বলেন, সে-ই আমার প্রকৃত বা যথার্থ বান্দা।[৩৫৩২]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২০১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَامِرِ بْنِ زُرَارَةَ، وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " قَارِبُوا وَسَدِّدُوا فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنْكُمْ بِمُنْجِيهِ عَمَلُهُ " . قَالُوا وَلاَ أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " وَلاَ أَنَا إِلاَّ أَنْ يَتَغَمَّدَنِيَ اللَّهُ بِرَحْمَةٍ مِنْهُ وَفَضْلٍ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সব ব্যাপারে ভারসাম্যপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করো এবং বাড়াবাড়ি ত্যাগ করো। কেননা তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার আমল তাকে নাজাত দিতে পারবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনিও না? তিনি বলেনঃ আমিও না, তবে আল্লাহর রহমাত ও করুণা যদি আমাকে ঢেকে নেয়।[৩৫৩৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২০২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০২
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ الْعُثْمَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ فَمَنْ عَمِلَ لِي عَمَلاً أَشْرَكَ فِيهِ غَيْرِي فَأَنَا مِنْهُ بَرِيءٌ وَهُوَ لِلَّذِي أَشْرَكَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ বলেন, আমি শরীকদের (মুশরিকদের) শেরেক হতে মুক্ত। যে ব্যক্তি আমার জন্য কোন কাজ করল এবং তাতে আমি ব্যতীত অন্য কিছুকে শরীক করল, আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। সে কাজ তার জন্য যাকে সে শরীক করেছে। [৩৫৩৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২০৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْحَمَّالُ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ الْبُرْسَانِيُّ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ زِيَادِ بْنِ مِينَاءَ، عَنْ أَبِي سَعْدِ بْنِ أَبِي فَضَالَةَ الأَنْصَارِيِّ، - وَكَانَ مِنَ الصَّحَابَةِ - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا جَمَعَ اللَّهُ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ لِيَوْمٍ لاَ رَيْبَ فِيهِ نَادَى مُنَادٍ مَنْ كَانَ أَشْرَكَ فِي عَمَلٍ عَمَلَهُ لِلَّهِ فَلْيَطْلُبْ ثَوَابَهُ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ " .
আবূ সাদ বিন আবূ ফাদালাহ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন কিয়ামতের দিন, যে দিনের আগমনে কোন সন্দেহ নাই, পূর্বাপর সকলকে একত্র করবেন, তখন একজন ঘোষক ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে গিয়ে এর মধ্যে কাউকে শরীক করেছে, সে যেন গাইরুল্লাহর নিকট নিজের সওয়াব চেয়ে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা শরীকদের শেরেক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।[৩৫৩৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২০৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ رُبَيْحِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ فَقَالَ " أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَا هُوَ أَخْوَفُ عَلَيْكُمْ عِنْدِي مِنَ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ " . قَالَ قُلْنَا بَلَى . فَقَالَ " الشِّرْكُ الْخَفِيُّ أَنْ يَقُومَ الرَّجُلُ يُصَلِّي فَيُزَيِّنُ صَلاَتَهُ لِمَا يَرَى مِنْ نَظَرِ رَجُلٍ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাদের নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে আসলেন, আমরা তখন মসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি কি তোমাদের এমন বিষয় অবহিত করবো না, যা আমার মতে তোমাদের জন্য মসীহ দাজ্জালের চেয়েও ভয়ংকর? রাবী বলেন, আমরা বললাম, হাঁ, অবশ্যই। তিনি বলেনঃ গুপ্ত শেরেক। মানুষ নামায পড়তে দাঁড়ায় এবং লোকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সুন্দরভাবে নামায পড়ে।[৩৫৩৬]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২০৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَلَفٍ الْعَسْقَلاَنِيُّ، حَدَّثَنَا رَوَّادُ بْنُ الْجَرَّاحِ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ ذَكْوَانَ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ نُسَىٍّ، عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَتَخَوَّفُ عَلَى أُمَّتِي الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ أَمَا إِنِّي لَسْتُ أَقُولُ يَعْبُدُونَ شَمْسًا وَلاَ قَمَرًا وَلاَ وَثَنًا وَلَكِنْ أَعْمَالاً لِغَيْرِ اللَّهِ وَشَهْوَةً خَفِيَّةً " .
শাদ্দাদ বিন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আমার উম্মাতের জন্য যেসব বিষয়ের ভয় করি তার মধ্যে অধিক আশংকাজনক হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শেরেক করা। অবশ্য আমি এ কথা বলছিনা যে, তারা সূর্য, চন্দ্র বা প্রতিমার পূজা করবে, বরং আল্লাহ ব্যতীত অপরের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা এবং গোপন পাপাচার।[৩৫৩৭]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২০৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ الْمُخْتَارِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ يُسَمِّعْ يُسَمِّعِ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُرَاءِ يُرَاءِ اللَّهُ بِهِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সুনাম-সুখ্যাতি অন্বেষণের জন্য কাজ করবে, আল্লাহ তার কাজের দোষ-ত্রুটি প্রচার করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য কাজ করবে আল্লাহ তাকে সেটাই দেখাবেন।[৩৫৩৮]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২০৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৭
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ جُنْدَبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ يُرَاءِ يُرَاءِ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُسَمِّعْ يُسَمِّعِ اللَّهُ بِهِ " .
জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করবে, আল্লাহও তাকে সেটাই দেখাবেন এবং যে ব্যক্তি সুনাম-সুখ্যাতির অন্বেষণে আমল করবে, আল্লাহ তার আমল প্রচার করে দিবেন।[৩৫৩৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২০৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَمُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الْحَقِّ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ حِكْمَةً فَهُوَ يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا " .
আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’ ব্যক্তি ছাড়া আর কারো ব্যাপারে ঈর্ষা করা বৈধ নয়। (এক) যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং তাকে তা সৎকাজে ব্যয় করার মনোবলও দিয়েছেন। (দুই) যাকে আল্লাহ প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং সে তদ্দ্বারা (সঠিক) মীমাংসা করে এবং তা (লোককে) শিক্ষা দেয়।[৩৫৪০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২০৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২০৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَكِيمٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি ক্ষেত্র ব্যতীত ঈর্ষা করা জায়েয নেই। (এক) যাকে আল্লাহ কুরআন দান করেছেন এবং সে দিন-রাত সর্বক্ষণ তার উপর কায়েম থাকে। (দুই) যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা দিন-রাত সর্বক্ষণ (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে।[৩৫৪১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২১০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْحَمَّالُ، وَأَحْمَدُ بْنُ الأَزْهَرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنْ عِيسَى بْنِ أَبِي عِيسَى الْحَنَّاطِ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " الْحَسَدُ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ الْمَاءُ النَّارَ وَالصَّلاَةُ نُورُ الْمُؤْمِنِ وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ مِنَ النَّارِ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হিংসা বা পরশ্রীকাতরতা নেক আমলসমূহ খেয়ে ফেলে, যেমন আগুন জ্বালানী কাঠ খেয়ে ফেলে। দান-খয়রাত গুনাহসমূহ বিলীন করে দেয় যেমন পানি আগুনকে বিলীন করে (নিভিয়ে) দেয়। নামায মুমিনের নূর (আলো) এবং রোযা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষার ঢাল।[৩৫৪২]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২১১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১১
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ الْحَسَنِ الْمَرْوَزِيُّ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، وَابْنُ، عُلَيَّةَ عَنْ عُيَيْنَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا مِنْ ذَنْبٍ أَجْدَرُ أَنْ يُعَجِّلَ اللَّهُ لِصَاحِبِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا مَعَ مَا يَدَّخِرُ لَهُ فِي الآخِرَةِ - مِنَ الْبَغْىِ وَقَطِيعَةِ الرَّحِمِ " .
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (ন্যায়পরায়ণ শাসকের বিরুদ্ধে) বিদ্রোহ এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার মত মারাত্মক আর কোন গুনাহ নাই, যার শাস্তি আল্লাহ ত্বরিতে দুনিয়াতে দেন এবং আখেরাতের জন্যও জমা রাখেন।[৩৫৪৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২১২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১২
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَسْرَعُ الْخَيْرِ ثَوَابًا الْبِرُّ وَصِلَةُ الرَّحِمِ وَأَسْرَعُ الشَّرِّ عُقُوبَةً الْبَغْىُ وَقَطِيعَةُ الرَّحِمِ " .
উম্মুল মু’মিনীন আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সৎকর্ম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার সাওয়াব দ্রুত পাওয়া যায় এবং দুরাচার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি দ্রুত কার্যকর হয়।[৩৫৪৪]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪২১৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৩
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدٍ الْمَدَنِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، - مَوْلَى بَنِي عَامِرٍ - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " حَسْبُ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তির মন্দ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার অপর মুসলমান ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে। [৩৫৪৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২১৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৪
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سِنَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ اللَّهَ أَوْحَى إِلَىَّ أَنْ تَوَاضَعُوا وَلاَ يَبْغِي بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার নিকট ওহী পাঠিয়েছেন যে, তোমরা নম্রতা অবলম্বন করো, বিনয়ী হও এবং তোমাদের কেউ যেন কারো প্রতি সীমালংঘন না করে। [৩৫৪৬]
৪২১৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَقِيلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ يَزِيدَ، وَعَطِيَّةُ بْنُ قَيْسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ السَّعْدِيِّ، - وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ يَبْلُغُ الْعَبْدُ أَنْ يَكُونَ مِنَ الْمُتَّقِينَ حَتَّى يَدَعَ مَا لاَ بَأْسَ بِهِ حَذَرًا لِمَا بِهِ الْبَأْسُ " .
আতিয়্যাহ আস-সা’দী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত হওয়ার আশংকায় বৈধ অক্ষতিকর বিষয় ত্যাগ না করা পর্যন্ত মোত্তাকীদের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে না।[৩৫৪৭]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২১৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَاقِدٍ، حَدَّثَنَا مُغِيثُ بْنُ سُمَىٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ " كُلُّ مَخْمُومِ الْقَلْبِ صَدُوقِ اللِّسَانِ " . قَالُوا صَدُوقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُومُ الْقَلْبِ قَالَ " هُوَ التَّقِيُّ النَّقِيُّ لاَ إِثْمَ فِيهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ " .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলা হলো, কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বলেনঃ প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্যভাষী ব্যক্তি। তারা বলেন, সত্যভাষীকে তো আমরা চিনি, কিন্তু বিশুদ্ধ অন্তরের ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, সে হলো পূত-পবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ যার কোন গুনাহ নাই, নাই কোন দুশমনি, হিংসা-বিদ্বেষ, আত্মঅহমিকা ও কপটতা।[৩৫৪৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২১৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَبِي رَجَاءٍ، عَنْ بُرْدِ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَا أَبَا هُرَيْرَةَ كُنْ وَرِعًا تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ وَكُنْ قَنِعًا تَكُنْ أَشْكَرَ النَّاسِ وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا وَأَحَسِنْ جِوَارَ مَنْ جَاوَرَكَ تَكُنْ مُسْلِمًا وَأَقِلَّ الضَّحِكَ فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْبَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ "হে আবূ হুরায়রাহ! তুমি আল্লাহভীরু হয়ে যাও, তাহলে লোকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদতকারী হতে পারবে। তুমি অল্পে তুষ্ট থাকো, তাহলে লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম কৃতজ্ঞ হতে পারবে। তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ করো, অন্যদের জন্যও তাই পছন্দ করবে, তাহলে পূর্ণ মুমিন হতে পারবে। তোমার প্রতিবেশীর প্রতি সদাচারী ও দয়াপরবশ হও, তাহলে মুসলমান হতে পারবে। তোমার হাসি কমাও, কেননা অধিক হাসি অন্তরাত্নাকে ধ্বংস করে।[৩৫৪৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২১৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ رُمْحٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنِ الْمَاضِي بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ عَقْلَ كَالتَّدْبِيرِ وَلاَ وَرَعَ كَالْكَفِّ وَلاَ حَسَبَ كَحُسْنِ الْخُلُقِ " .
আবূ যার (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তদবীরের (বিচক্ষণতা, পরিণামদর্শিতা) তুল্য কোন জ্ঞান নেই, নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বিরত থাকার তুল্য ধার্মিকতা নেই এবং সচ্চরিত্র তুল্য কোন আভিজাত্য নেই। [৩৫৫০]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২১৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২১৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَلَفٍ الْعَسْقَلاَنِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سَلاَّمُ بْنُ أَبِي مُطِيعٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " الْحَسَبُ الْمَالُ وَالْكَرَمُ التَّقْوَى " .
সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আভিজাত্য হলো সম্পদ এবং মহত্ব ও মহানুভবতাই তাকওয়া।[৩৫৫১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২২০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২০
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ كَهْمَسِ بْنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي السَّلِيلِ، ضُرَيْبِ بْنِ نُقَيْرٍ عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنِّي لأَعْرِفُ كَلِمَةً - وَقَالَ عُثْمَانُ آيَةً - لَوْ أَخَذَ النَّاسُ كُلُّهُمْ بِهَا لَكَفَتْهُمْ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَّةُ آيَةٍ قَالَ " وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি এমন একটি বাক্য বা আয়াত জানি, সকলেই যদি তা গ্রহণ করতো তবে অবশ্যই তাদের জন্যে তা যথেষ্ট হতো। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কোন্ আয়াত? তিনি বলেন, তা হলো (অনুবাদ) : “যে কেউ আল্লাহকে ভয় করলে তিনি তার জন্য নিষ্কৃতির পথ করে দেন” (সূরা তালাকঃ ২)। [৩৫৫২]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২২১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَنْبَأَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ الْجُمَحِيُّ، عَنْ أُمَيَّةَ بْنِ صَفْوَانَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي زُهَيْرٍ الثَّقَفِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالنَّبَا أَوِ النَّبَاوَةِ - قَالَ وَالنَّبَاوَةُ مِنَ الطَّائِفِ - قَالَ " يُوشِكُ أَنْ تَعْرِفُوا أَهْلَ الْجَنَّةِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ " . قَالُوا بِمَ ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " بِالثَّنَاءِ الْحَسَنِ وَالثَّنَاءِ السَّيِّئِ أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللَّهِ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ " .
আবূ যুহায়র আস সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবাওয়াহ বা বানাওয়াহ নামক স্হানে আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। রাবী বলেন, নাবাওয়াহ তায়েফের একটি স্হানের নাম। তিনি বলেনঃ অচিরেই তোমরা জান্নাতী লোকদেরকে জাহান্নামীদের থেকে পৃথকভাবে চিনতে পারবে। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কিভাবে? তিনি বলেনঃ সুপ্রশংসা ও কুপ্রশংসা দ্বারা। তোমরা যে মৃতের প্রশংসা করবে সে জান্নাতী এবং যে মৃতের দুর্নাম করবে সে জাহান্নামী। তোমরা (পৃথিবীতে) পরস্পরের বিরুদ্ধে আল্লাহর সাক্ষী।[৩৫৫৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
৪২২২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ جَامِعِ بْنِ شَدَّادٍ، عَنْ كُلْثُومٍ الْخُزَاعِيِّ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ لِي أَنْ أَعْلَمَ إِذَا أَحْسَنْتُ أَنِّي قَدْ أَحْسَنْتُ وَإِذَا أَسَأْتُ أَنِّي قَدْ أَسَأْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا قَالَ جِيرَانُكَ إِنَّكَ قَدْ أَحْسَنْتَ فَقَدْ أَحْسَنْتَ وَإِذَا قَالُوا إِنَّكَ قَدْ أَسَأْتَ فَقَدْ أَسَأْتَ " .
কুলসূম আল-খুযাঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো কাজ করলে কিভাবে জানতে পারবো যে, আমি ভালো কাজ করেছি এবং মন্দ কাজ করলেই বা কিভাবে বুঝবো যে, আমি মন্দ কাজ করেছি? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তোমার প্রতিবেশী বলে যে, তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো এবং যখন তারা বলে যে, তুমি মন্দ করেছো তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।[৩৫৫৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২২৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : كَيْفَ لِي أَنْ أَعْلَمَ إِذَا أَحْسَنْتُ وَإِذَا أَسَأْتُ قَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " إِذَا سَمِعْتَ جِيرَانَكَ يَقُولُونَ قَدْ أَحْسَنْتَ فَقَدْ أَحْسَنْتَ وَإِذَا سَمِعْتَهُمْ يَقُولُونَ : قَدْ أَسَأْتَ فَقَدْ أَسَأْتَ " .
আবদুল্লাহ (বিন মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললো, আমি কিভাবে জানবো, যখন আমি ভালো কাজ করি এবং যখন আমি মন্দ কাজ করি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তুমি তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে, তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো। আর যখন তুমি তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে, তুমি মন্দ কাজ করেছো, তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।[৩৫৫৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
৪২২৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَزَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبُو هِلاَلٍ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ أَبِي ثُبَيْتٍ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " أَهْلُ الْجَنَّةِ مَنْ مَلأَ اللَّهُ أُذُنَيْهِ مِنْ ثَنَاءِ النَّاسِ خَيْرًا وَهُوَ يَسْمَعُ، وَأَهْلُ النَّارِ مَنْ مَلأَ أُذُنَيْهِ مِنْ ثَنَاءِ النَّاسِ شَرًّا وَهُوَ يَسْمَعُ " .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ মানুষের উত্তম প্রশংসায় যার দু’ কান পূর্ণ করেছেন এবং সেও তা শুনতে পেয়েছে, এমন ব্যক্তিই জান্নাতের অধিকারী। তিনি যার কান মানুষের দুর্নামে পূর্ণ করেছেন এবং সেও তা শুনতে পেয়েছে, এমন ব্যক্তিই জাহান্নামী।[৩৫৫৬]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪২২৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ قُلْتُ لَهُ : الرَّجُلُ يَعْمَلُ الْعَمَلَ لِلَّهِ فَيُحِبُّهُ النَّاسُ عَلَيْهِ قَالَ : " ذَلِكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْمُؤْمِنِ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললাম, কোন ব্যক্তি কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কাজ করে এবং লোকজন তার সেই কাজের জন্য তাকে ভালোবাসে। তিনি বলেনঃ এটা তো ঈমানদার ব্যক্তির জন্য আগাম সুসংবাদ।[৩৫৫৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২২৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سِنَانٍ أَبُو سِنَانٍ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَعْمَلُ الْعَمَلَ فَيُطَّلَعُ عَلَيْهِ فَيُعْجِبُنِي قَالَ : " لَكَ أَجْرَانِ : أَجْرُ السِّرِّ وَأَجْرُ الْعَلاَنِيَةِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কোন কাজ করি, তা লোকের গোচরীভূত হয়ে যায়, তাতে আমি আনন্দবোধ করি। তিনি বলেনঃ তোমার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব। গোপনে করার সাওয়াব এবং প্রকাশ হয়ে পড়ার সাওয়াব।[৩৫৫৮]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২২৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، قَالاَ أَنْبَأَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، وَهُوَ يَخْطُبُ النَّاسَ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ : " إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَلِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ " .
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যাবতীয় কাজের ফল নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক মানুষের জন্য তার নিয়্যাত (অভিপ্রায়) অনুযায়ী ফলাফল রয়েছে। অতএব যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্যই গণ্য হয়। আর যার হিজরত পার্থিব স্বার্থ লাভের জন্য, সে তাই লাভ করবে অথবা তার হিজরত কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হলে সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে তার হিজরত সেই উদ্দেশ্যের জন্য গণ্য হবে।[৩৫৫৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২২৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ أَبِي كَبْشَةَ الأَنْمَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " مَثَلُ هَذِهِ الأُمَّةِ كَمَثَلِ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ : رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً وَعِلْمًا فَهُوَ يَعْمَلُ بِعِلْمِهِ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي حَقِّهِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يُؤْتِهِ مَالاً فَهُوَ يَقُولُ : لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " فَهُمَا فِي الأَجْرِ سَوَاءٌ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً وَلَمْ يُؤْتِهِ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي غَيْرِ حَقِّهِ وَرَجُلٌ لَمْ يُؤْتِهِ اللَّهُ عِلْمًا وَلاَ مَالاً فَهُوَ يَقُولُ : لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ مَالِ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " فَهُمَا فِي الْوِزْرِ سَوَاءٌ " .
আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এ উম্মাতের দৃষ্টান্ত চার ব্যক্তি সদৃশ। (এক) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ ধন-সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন এবং সে তার জ্ঞান দ্বারা তার মাল ব্যবহার করে, যথার্থ খাতে তা ব্যয় করে। (দুই) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন কিন্তু সম্পদ দান করেননি। সে বলে, ঐ ব্যক্তির অনুরূপ আমার সম্পদ থাকলে আমি তার মত তা কাজে লাগাতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ দু’জন সমান পুরস্কার লাভের অধিকারী। (তিন) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু জ্ঞান দান করেননি। সে তার মালে ভ্রষ্টনীতি গ্রহণ করে, তা অন্যায় পথে ব্যয় করে। (চার) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান ও সম্পদ কোনটাই দান করেননি। সে বলে, তার অনুরুপ আমার সম্পদ থাকলে তার মত (ভ্রষ্ট) কাজে লাগাতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এই দু’ব্যক্তি সমান অপরাধী।
[উপরোক্ত হাদীসের মোট ৪ টি সানাদের ২টি সানাদ বর্ণিত হয়েছে, অপর ২টি সানাদ হলোঃ]
৩/৪২২৮ (১) . ইসহাক বিন মানসূর আল-মারওয়াযী, আবদুর রাযযাক, মা'মার, মানসূর, সালিম বিন আবুল জা'দ, ইবনু আবূ কাবশাহ (মাকবূল) , তার পিতা (আবূ কাবশাহ) (রাঃ) ; মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বিন সামুরাহ, আবূ উসামাহ, মুফাদদাল, মানসূর (ইবনুল মু'তামির, সালিম বিন আবুল জা'দ, ইবনু আবূ কাবশাহ (মাকবূর) , তার পিতা (আবূ কাবশাহ) (রাঃ)। [৩৫৬০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২২৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২২৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " إِنَّمَا يُبْعَثُ النَّاسُ عَلَى نِيَّاتِهِمْ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকদের (হাশরের দিন) তাদের নিয়্যাত (অভিপ্রায়) অনুসারে উঠানো হবে।[৩৫৬১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩০
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَنْبَأَنَا زَكَرِيَّا بْنُ عَدِيٍّ، أَنْبَأَنَا شَرِيكٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى نِيَّاتِهِمْ "
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকজনকে তাদের নিয়াত (উদ্দেশ্য) অনুসারে হাশরের ময়দানে একত্র করা হবে।[৩৫৬২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩১
حَدَّثَنَا أَبُو بِشْرٍ، : بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ خَلاَّدٍ الْبَاهِلِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي يَعْلَى، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : أَنَّهُ خَطَّ خَطًّا مُرَبَّعًا وَخَطًّا وَسَطَ الْخَطِّ الْمُرَبَّعِ وَخُطُوطًا إِلَى جَانِبِ الْخَطِّ الَّذِي وَسَطَ الْخَطِّ الْمُرَبَّعِ وَخَطًّا خَارِجًا مِنَ الْخَطِّ الْمُرَبَّعِ فَقَالَ : " أَتَدْرُونَ مَا هَذَا " . قَالُوا : اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ : " هَذَا الإِنْسَانُ الْخَطُّ الأَوْسَطُ وَهَذِهِ الْخُطُوطُ إِلَى جَنْبِهِ الأَعْرَاضُ تَنْهَشُهُ أَوْ تَنْهَسُهُ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ فَإِنْ أَخْطَأَهُ هَذَا أَصَابَهُ هَذَا وَالْخَطُّ الْمُرَبَّعُ الأَجَلُ الْمُحِيطُ وَالْخَطُّ الْخَارِجُ الأَمَلُ " .
আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বর্গাকৃতির চতুর্ভুজ আঁকলেন, এর মধ্যভাগে একটি সরল রেখা টানলেন, অতঃপর চতুর্ভুজের মধ্যবর্তী এ রেখার দু’দিকে অনেকগুলো ক্ষুদ্র রেখা টানলেন, অতঃপর চতুর্ভুজের বহির্ভাগে একটি সরলরেখা টানলেন যা বর্গক্ষেত্রকে ছেদ করে অন্য প্রান্ত ভেদ করেছে। অতঃপর তিনি বলেন, তোমরা কি জানো, এটা কি? তারা বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত। তিনি বলেনঃ এই মধ্যবর্তী রেখাটি হলো মানুষ। আর সরলরেখার দু’ দিকে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেখা আছে, এগুলো হলো বিপদাপদ, যা তাকে অহরহ দংশন করে। সে একটি বিপদ থেকে মুক্তি পেলে আরেকটি বিপদ তার উপর পতিত হয়। বর্গক্ষেত্রটি হলো তার জীবনকালের সীমা, যা তাকে বেষ্টন করে রেখেছে। আর (বর্গক্ষেত্র ভেদ করে) বাইরে আসা রেখাটি হলো তার কামনা-বাসনা।[৩৫৬৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " هَذَا ابْنُ آدَمَ وَهَذَا أَجَلُهُ عِنْدَ قَفَاهُ " . وَبَسَطَ يَدَهُ أَمَامَهُ ثُمَّ قَالَ : " وَثَمَّ أَمَلُهُ " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এই হলো আদম সন্তান এবং এই হলো তার মৃত্যু, তার ঘাড়ের নিকট। তিনি তাঁর হাত তাঁর সামনের দিকে প্রসারিত করে বললেনঃ এই পর্যন্ত (হায়াতের চেয়েও বেশী) তার আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।[৩৫৬৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৩
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ، : مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْعُثْمَانِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " قَلْبُ الشَّيْخِ شَابٌّ فِي اثْنَتَيْنِ : فِي حُبِّ الْحَيَاةِ وَكَثْرَةِ الْمَالِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি জিনিসের ভালোবাসায় বৃদ্ধের মন যুবকই থেকে যায়। বেঁচে থাকার লালসা ও সম্পদের প্রাচুর্য।[৩৫৬৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৪
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الضَّرِيرُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " يَهْرَمُ ابْنُ آدَمَ وَيَشِبُّ مِنْهُ اثْنَتَانِ : الْحِرْصُ عَلَى الْمَالِ وَالْحِرْصُ عَلَى الْعُمُرِ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদাম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে গেলেও তার দু’টি স্বভাব যুবকই থেকে যায়ঃ সম্পদের লোভ ও বেঁচে থাকার লালসা।[৩৫৬৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৫
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ الْعُثْمَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " لَوْ أَنَّ لاِبْنِ آدَمَ وَادِيَيْنِ مِنْ مَالٍ لأَحَبَّ أَنْ يَكُونَ مَعَهُمَا ثَالِثٌ وَلاَ يَمْلأُ نَفْسَهُ إِلاَّ التُّرَابُ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ تَابَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আদম সন্তান দু’ উপত্যকা ভর্তি সম্পদের অধিকারী হলেও সে এর সাথে তৃতীয়টি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবে। মাটি ছাড়া অন্য কিছু তার দেহ ভর্তি করতে পারে না। কোন ব্যক্তি তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।[৩৫৬৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " أَعْمَارُ أُمَّتِي مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى السَّبْعِينَ وَأَقَلُّهُمْ مَنْ يَجُوزُ ذَلِكَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার উম্মাতের (গড়) আয়ু ষাট থেকে সত্তর বছর। তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই এ বয়স অতিক্রম করবে।[৩৫৬৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ : وَالَّذِي ذَهَبَ بِنَفْسِهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَا مَاتَ حَتَّى كَانَ أَكْثَرُ صَلاَتِهِ وَهُوَ جَالِسٌ وَكَانَ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَيْهِ، الْعَمَلُ الصَّالِحُ الَّذِي يَدُومُ عَلَيْهِ الْعَبْدُ وَإِنْ كَانَ يَسِيرًا .
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সেই মহান সত্ত্বার শপথ, যিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নিয়ে গেছেন, তিনি ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত অধিকাংশ সময় (নফল) নামায বসে পরতেন। বান্দা যে নেক আমল নিয়মিত করে তার অল্প হলেও তাঁর নিকট পছন্দনীয় ছিল।[৩৫৬৯]
তাহকিক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ : كَانَتْ عِنْدِي امْرَأَةٌ فَدَخَلَ عَلَىَّ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ : " مَنْ هَذِهِ " . قُلْتُ : فُلاَنَةُ . لاَ تَنَامُ - تَذْكُرُ مِنْ صَلاَحِهَا - فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " مَهْ عَلَيْكُمْ بِمَا تُطِيقُونَ فَوَاللَّهِ لاَ يَمَلُّ اللَّهُ حَتَّى تَمَلُّوا " . قَالَتْ : وَكَانَ أَحَبَّ الدِّينِ إِلَيْهِ الَّذِي يَدُومُ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার নিকট এক মহিলা উপস্থিত থাকা অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এ মহিলা কে? আমি বললাম, অমুক মহিলা, সে রাতে ঘুমায় না। তিনি তার সলাতের কথা উল্লেখ করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আরে থামো! তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করা তোমাদের কর্তব্য। আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহ (পুরস্কার প্রদানে) অবসন্ন হন না, যতক্ষণ না তোমরা অবসন্ন হয়ে পড়। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তির নিয়মিত আমলই তাঁর নিকট সর্বাধিক প্রিয় দ্বীন ছিল। [৩৫৭০]
তাহকিক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৩৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دُكَيْنٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ حَنْظَلَةَ الْكَاتِبِ التَّمِيمِيِّ الأُسَيِّدِيِّ، قَالَ : كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَذَكَرْنَا الْجَنَّةَ وَالنَّارَ حَتَّى كَأَنَّا رَأْىَ الْعَيْنِ فَقُمْتُ إِلَى أَهْلِي وَوَلَدِي فَضَحِكْتُ وَلَعِبْتُ . قَالَ : فَذَكَرْتُ الَّذِي كُنَّا فِيهِ فَخَرَجْتُ فَلَقِيتُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ : نَافَقْتُ، نَافَقْتُ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ : إِنَّا لَنَفْعَلُهُ . فَذَهَبَ حَنْظَلَةُ فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ : " يَا حَنْظَلَةُ لَوْ كُنْتُمْ كَمَا تَكُونُونَ عِنْدِي لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ عَلَى فُرُشِكُمْ - أَوْ عَلَى طُرُقِكُمْ - يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةٌ وَسَاعَةٌ " .
হানযালা আল-কাতিব আত-তামীমী আল-উসায়্যিদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এমনভাবে নসীহত করলেন, যেন আমরা তা চাক্ষুস দেখতে পাচ্ছি। তারপর আমি উঠে পরিবার ও সন্তানদের নিকট ফিরে আসি এবং আনন্দ স্ফুর্তি করি। রাবী বলেন, আমি আমাদের এ অবস্থার কথা স্মরণ করছিলাম, অতঃপর (ঘর থেকে) বের হয়ে গিয়ে আবূ বাক্র সিদ্দিক (রাঃ) -এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং তাকে বললাম, আমি মোনাফেক হয়ে গেছি, মোনাফেক হয়ে গেছি। আবূ বকর (রাঃ) বলেন, আমরাও তো তাই করি। অতঃপর হানযালা (রাঃ) গিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হে হানযালা! তোমরা আমার নিকট উপস্থিত থাকলে যেরূপ থাকো, সর্বদা তদ্রূপ থাকলে অবশ্যই ফেরেশতাগণ তোমাদের বিছানায় অথবা পথিমধ্যে তোমার সাথে মোসাফাহা করতো। হে হানযালা! সেই অবস্থা সময় সময় হয়ে থাকে। [৩৫৭১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪০
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عُثْمَانَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجُ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " اكْلَفُوا مِنَ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَإِنَّ خَيْرَ الْعَمَلِ أَدْوَمُهُ وَإِنْ قَلَّ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যথাসাধ্য আমল করো। কেননা সেই আমলই উত্তম যা নিয়মিত করা যায়, তা পরিমাণে কম হলেও। [৩৫৭২]
উক্ত হাদীসের রাবী আল-আব্বাস বিন উসমান আদ-দিমাশকি সম্পর্কে আবুল হাসান বিন সুমায়’ বলেন, তিনি সিকাহ। আবূ হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদীস বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৩২, ১৪/২৩৩ নং পৃষ্ঠা) ২. ইবনু লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাঁর হাদীসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাঁর কিতাবসমূহ পুড়ে যাবার পর হাদীস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন, কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তা দুর্বল। আবূল কাসিম বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবূ বাক্র আল-বায়হাকি বলেন, তার হাদীস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবূ হাতিম আর-রাযী তকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার কিতাবসমূহ পুড়ে যাবার পর হাদীস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। বিশর ইবনুস সারী বলেন, যদি তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো তবে আমি তার থেকে কোন হাদীস গ্রহন করতামনা। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা)
৪২৪১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪১
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَشْعَرِيُّ، عَنْ عِيسَى بْنِ جَارِيَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ : مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَلَى رَجُلٍ يُصَلِّي عَلَى صَخْرَةٍ فَأَتَى نَاحِيَةَ مَكَّةَ فَمَكَثَ مَلِيًّا ثُمَّ انْصَرَفَ فَوَجَدَ الرَّجُلَ يُصَلِّي عَلَى حَالِهِ فَقَامَ فَجَمَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ قَالَ : " يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمْ بِالْقَصْدِ " . ثَلاَثًا : " فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا " .
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক খন্ড পাথরের উপর নামাযরত এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করে চলে গেলেন। তিনি মক্কার এক প্রান্তে পৌঁছে সেখানে কিছুক্ষণ কাটালেন। অতঃপর তিনি ফেরার পথে ঐ লোকটিকে পূর্বাবস্থায় নামাযরত দেখতে পেলেন। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাঁর দু’ হাত একত্র করে বলেনঃ হে লোকসকল! তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো। কথাটা তিনি তিনবার বলেন। কেননা তোমরা অবসাদগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ প্রতিদান দিতে ক্ষান্ত হন না। [৩৫৭৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَأَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قُلْنَا : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنُؤَاخَذُ بِمَا كُنَّا نَفْعَلُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " مَنْ أَحْسَنَ فِي الإِسْلاَمِ لَمْ يُؤَاخَذْ بِمَا كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَمَنْ أَسَاءَ أُخِذَ بِالأَوَّلِ وَالآخِرِ " .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহিলী যুগে যা করেছি, সে সম্পর্কে কি আমাদের জবাবদিহি করতে হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যারা ইসলাম গ্রহনের পর ভাল কাজ করেছে তাদেরকে জাহিলী যুগের কৃতকর্ম সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে, তাকে পূর্বাপর সকল কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। [৩৫৭৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ بَانَكَ، قَالَ سَمِعْتُ عَامِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، يَقُولُ : حَدَّثَنِي عَوْفُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " يَا عَائِشَةُ إِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الأَعْمَالِ فَإِنَّ لَهَا مِنَ اللَّهِ طَالِبًا " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে আয়িশাহ! ক্ষুদ্র গুনাহ থেকেও সাবধান হও। কারণ সেগুলোর জন্যও আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।[৩৫৭৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৪
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، وَالْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا أَذْنَبَ كَانَتْ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فِي قَلْبِهِ فَإِنْ تَابَ وَنَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ صُقِلَ قَلْبُهُ فَإِنْ زَادَ زَادَتْ فَذَلِكَ الرَّانُ الَّذِي ذَكَرَهُ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ {كَلاَّ بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ} " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুমিন ব্যক্তি যখন গুনাহ করে তখন তার কলবে একটি কালো দাগ পড়ে। অতঃপর সে তওবা করলে, পাপ কাজ ত্যাগ করলে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করলে তার কলব পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। সে আরও গুনাহ করলে সেই কালো দাগ বেড়ে যায়। এই সেই মরিচা যা আল্লাহ তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন (অনুবাদ) : “কক্ষনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে জং (মরিচা) ধরিয়েছে” (সূরা আল-মুতাফফিফীনঃ ১৪)।[৩৫৭৬]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৪৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৫
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ بْنِ حُدَيْجٍ الْمَعَافِرِيُّ، عَنْ أَرْطَاةَ بْنِ الْمُنْذِرِ، عَنْ أَبِي عَامِرٍ الأَلْهَانِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ : " لأَعْلَمَنَّ أَقْوَامًا مِنْ أُمَّتِي يَأْتُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِحَسَنَاتٍ أَمْثَالِ جِبَالِ تِهَامَةَ بِيضًا فَيَجْعَلُهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَبَاءً مَنْثُورًا " . قَالَ ثَوْبَانُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ صِفْهُمْ لَنَا جَلِّهِمْ لَنَا أَنْ لاَ نَكُونَ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لاَ نَعْلَمُ . قَالَ : " أَمَا إِنَّهُمْ إِخْوَانُكُمْ وَمِنْ جِلْدَتِكُمْ وَيَأْخُذُونَ مِنَ اللَّيْلِ كَمَا تَأْخُذُونَ وَلَكِنَّهُمْ أَقْوَامٌ إِذَا خَلَوْا بِمَحَارِمِ اللَّهِ انْتَهَكُوهَا " .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আমার উম্মাতের কতক দল সম্পর্কে অবশ্যই জানি যারা কিয়ামতের দ্বীন তিহামার শুভ্র পর্বতমালার সমতুল্য নেক আমল সহ উপস্থিত হবে। মহামহিম আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূকিকণায় পরিণত করবেন। সাওবান (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের পরিচয় পরিস্কারভাবে আমাদের নিকট বর্ণনা করুন, যাতে অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই। তিনি বলেনঃ তারা তোমাদেরই ভ্রাতৃগোষ্ঠী এবং তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা রাতের বেলা তোমাদের মতই ইবাদত করবে। কিন্তু তারা এমন লোক যে, একান্ত গোপনে আল্লাহর হারামকৃত বিষয়ে লিপ্ত হবে। [৩৫৭৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৬
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ أَبِيهِ، وَعَمِّهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ : سُئِلَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ الْجَنَّةَ قَالَ : " التَّقْوَى وَحُسْنُ الْخُلُقِ " . وَسُئِلَ : مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ النَّارَ قَالَ : " الأَجْوَفَانِ : الْفَمُ وَالْفَرْجُ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ জিনিসের বদৌলতে বেশিরভাগ লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। তিনি বলেনঃ তাক্বওয়া ও সচ্চরিত্রের বদৌলতে। তাকে আরও জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ জিনিসের কারণে অধিকাংশ লোক জাহান্নামে যাবে? তিনি বলেনঃ দু’টি অংগ- মুখ ও লজ্জাস্থান। [৩৫৭৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ أَحَدِكُمْ مِنْهُ بِضَالَّتِهِ إِذَا وَجَدَهَا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তি তার হারানো উট প্রাপ্তিতে যতো আনন্দিত হয়, তোমাদের কারো তওবায় মহান আল্লাহ ততোধিক আনন্দিত হন। [৩৫৭৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৪৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৮
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ كَاسِبٍ الْمَدَنِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ الأَصَمِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " لَوْ أَخْطَأْتُمْ حَتَّى تَبْلُغَ خَطَايَاكُمُ السَّمَاءَ ثُمَّ تُبْتُمْ لَتَابَ عَلَيْكُمْ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা যদি পাপাচার করতে, এমনকি তোমাদের পাপ আকাশের সীমা পর্যন্ত পৌছে যেতো, অতঃপর তোমরা তওবা করতে, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের তওবা কবুল করতেন। [৩৫৮০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪২৪৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৪৯
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ مَرْزُوقٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " لَلَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ رَجُلٍ أَضَلَّ رَاحِلَتَهُ بِفَلاَةٍ مِنَ الأَرْضِ فَالْتَمَسَهَا حَتَّى إِذَا أَعْيَى تَسَجَّى بِثَوْبِهِ فَبَيْنَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ سَمِعَ وَجْبَةَ الرَّاحِلَةِ حَيْثُ فَقَدَهَا فَكَشَفَ الثَّوْبَ عَنْ وَجْهِهِ فَإِذَا هُوَ بِرَاحِلَتِهِ " .
আবূ সাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা বিজন প্রান্তরে তার বাহনের উট হারিয়ে ফেললো, অতঃপর তার অনুসন্ধান করতে করতে শেষে নিরাশ ও অবসন্ন হয়ে তার কাপড় মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। এ অবস্থায় হঠাৎ সে তার হারিয়ে যাওয়া বাহনের আওয়াজ শুনতে পেয়ে নিজের মুখমণ্ডল থেকে তার কাপড় সরিয়ে তার উট তার সামনে উপস্থিত দেখতে পেয়ে যতো আনন্দিত হয়, আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবায় ততোধিক আনন্দিত হন। [৩৫৮১]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২৫০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيُّ، حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لاَ ذَنْبَ لَهُ " .
(আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গুনাহ থেকে তওবাকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য। [৩৫৮২]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৫১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَسْعَدَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " كُلُّ بَنِي آدَمَ خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ " .
আনাস (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তওবাকারীগণ উত্তম। [৩৫৮৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৫২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫২
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنِ ابْنِ مَعْقِلٍ، قَالَ : دَخَلْتُ مَعَ أَبِي عَلَى عَبْدِ اللَّهِ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " النَّدَمُ تَوْبَةٌ " . فَقَالَ لَهُ أَبِي : أَنْتَ سَمِعْتَ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ : " النَّدَمُ تَوْبَةٌ " . قَالَ : نَعَمْ .
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আমার পিতার সাথে আবদুল্লাহ (রাঃ) -এর নিকট উপস্থিত হলাম। আমি তাকে বলতে শুনলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “অনুতপ্ত হওয়াই তওবা”। আমার পিতা তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি নিজে কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন যে, “অনুতপ্ত হওয়াই তওবা”? তিনি বলেন, হাঁ।[৩৫৮৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৫৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৩
حَدَّثَنَا رَاشِدُ بْنُ سَعِيدٍ الرَّمْلِيُّ، أَنْبَأَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ ابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَيَقْبَلُ تَوْبَةَ الْعَبْدِ مَا لَمْ يُغَرْغِرْ " .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রূহ কণ্ঠাগত না হওয়া (মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত) পর্যন্ত মহামহিম আল্লাহ বান্দার তওবা কবুল করেন। [৩৫৮৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৫৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، سَمِعْتُ أَبِي، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، : أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَذَكَرَ أَنَّهُ أَصَابَ مِنِ امْرَأَةٍ قُبْلَةً فَجَعَلَ يَسْأَلُ عَنْ كَفَّارَتِهَا فَلَمْ يَقُلْ لَهُ شَيْئًا فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَأَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ} فَقَالَ الرَّجُلُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِي هَذِهِ فَقَالَ : " هِيَ لِمَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ أُمَّتِي " .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললো যে, সে এক বেগানা মহিলাকে চুমা দিয়েছে। সে এর কাফ্ফারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে থাকলো। কিন্তু তিনি তাকে কোন উত্তর দিলেন না। তখন মহামহিম আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন (অনুবাদ) : “দিনের দু’ প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে নামায কায়েম করো। নিশ্চয় সৎকাজ অসৎ কাজকে দূরীভূত করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে, এটা তাদের জন্য উপদেশ” (সূরা হূদঃ ১১৪)। লোকটি বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! এ নির্দেশ কি কেবল আমার জন্য সীমিত? তিনি বলেনঃ আমার উম্মাতের যে কেউ এর উপর আমল করবে, তার জন্যই। [৩৫৮৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৫৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ، قَالَ قَالَ الزُّهْرِيُّ : أَلاَ أُحَدِّثُكَ بِحَدِيثَيْنِ عَجِيبَيْنِ : أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " أَسْرَفَ رَجُلٌ عَلَى نَفْسِهِ فَلَمَّا حَضَرَهُ الْمَوْتُ أَوْصَى بَنِيهِ فَقَالَ : إِذَا أَنَا مِتُّ فَأَحْرِقُونِي ثُمَّ اسْحَقُونِي ثُمَّ ذَرُّونِي فِي الرِّيحِ فِي الْبَحْرِ فَوَاللَّهِ لَئِنْ قَدَرَ عَلَىَّ رَبِّي لَيُعَذِّبُنِي عَذَابًا مَا عَذَّبَهُ أَحَدًا . قَالَ : فَفَعَلُوا بِهِ ذَلِكَ فَقَالَ لِلأَرْضِ : أَدِّي مَا أَخَذْتِ . فَإِذَا هُوَ قَائِمٌ فَقَالَ لَهُ : مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ قَالَ : خَشْيَتُكَ - أَوْ مَخَافَتُكَ - يَا رَبِّ . فَغَفَرَ لَهُ لِذَلِكَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এক ব্যক্তি নিজের উপর যুলুম (পাপাচার) করলো। তার মৃত্যু উপস্থিত হলে সে তার পুত্রদের ওসিয়ত করে বললো, আমি মারা যাওয়ার পর তোমরা আমাকে আগুনে ভস্মীভূত করবে, অতঃপর ছাই পিষে চূর্ণ-বিচূর্ণ করবে, তারপর সমুদ্রে প্রবল বায়ুর মধ্যে সেগুলো নিক্ষেপ করবে। আল্লাহর শপথ! যদি আমার রব আমাকে পাকড়াও করতে পারেন তাহলে আমাকে এমন ভয়াবহ শাস্তি দিবেন যা অন্য কাউকে দেননি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তার পুত্ররা তার ওসিয়ত মত কাজ করলো। আল্লাহ তাআলা জমীনকে বলেন, তুমি তার দেহ থেকে যা গ্রহন করেছো, তা ফেরত দাও। ফলে সে সোজা দাঁড়িয়ে গেল। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এ কাজ করতে কিসে তোমাকে প্ররোচিত করেছে? সে বলল, হে প্রভু! আপনার ভয়। এজন্য আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।[৩৫৮৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৫৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৬
قَالَ الزُّهْرِيُّ وَحَدَّثَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " دَخَلَتِ امْرَأَةٌ النَّارَ فِي هِرَّةٍ رَبَطَتْهَا فَلاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلاَ هِيَ أَرْسَلَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ حَتَّى مَاتَتْ " . قَالَ الزُّهْرِيُّ : لِئَلاَّ يَتَّكِلَ رَجُلٌ وَلاَ يَيْأَسَ رَجُلٌ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গেছে। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল, এমতাবস্থায় তাকে আহারও করায়নি এবং একে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে কীট-পতঙ্গ খেতে পারতো। ফলে সেটি অনাহারে মারা গেলো। যুহরী (রাঃ) বলেন, মানুষকে (নিজের আমলের উপর) ভরসা করাও উচিত নয় এবং (আল্লাহর রহমাত থেকে) নিরাশ হওয়াও উচিত নয়। [৩৫৮৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৫৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُوسَى بْنِ الْمُسَيَّبِ الثَّقَفِيِّ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَنْمٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ مُذْنِبٌ إِلاَّ مَنْ عَافَيْتُ فَسَلُونِي الْمَغْفِرَةَ فَأَغْفِرَ لَكُمْ وَمَنْ عَلِمَ مِنْكُمْ أَنِّي ذُو قُدْرَةٍ عَلَى الْمَغْفِرَةِ فَاسْتَغْفَرَنِي بِقُدْرَتِي غَفَرْتُ لَهُ، وَكُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلاَّ مَنْ هَدَيْتُ فَسَلُونِي الْهُدَى أَهْدِكُمْ، وَكُلُّكُمْ فَقِيرٌ إِلاَّ مَنْ أَغْنَيْتُ فَسَلُونِي أَرْزُقْكُمْ، وَلَوْ أَنَّ حَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ وَأَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا فَكَانُوا عَلَى قَلْبِ أَتْقَى عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي - لَمْ يَزِدْ فِي مُلْكِي جَنَاحُ بَعُوضَةٍ، وَلَوِ اجْتَمَعُوا فَكَانُوا عَلَى قَلْبِ أَشْقَى عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي لَمْ يَنْقُصْ مِنْ مُلْكِي جَنَاحُ بَعُوضَةٍ وَلَوْ أَنَّ حَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ، وَأَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا، فَسَأَلَ كُلُّ سَائِلٍ مِنْهُمْ مَا بَلَغَتْ أُمْنِيَّتُهُ - مَا نَقَصَ مِنْ مُلْكِي إِلاَّ كَمَا لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ مَرَّ بِشَفَةِ الْبَحْرِ فَغَمَسَ فِيهَا إِبْرَةً ثُمَّ نَزَعَهَا، ذَلِكَ بِأَنِّي جَوَادٌ مَاجِدٌ عَطَائِي كَلاَمٌ إِذَا أَرَدْتُّ شَيْئًا فَإِنَّمَا أَقُولُ لَهُ : كُنْ فَيَكُونُ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রাচুর্যময় মহান আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দাগণ! আমি যাদের ক্ষমা করেছি তারা ব্যতিত তোমাদের সকলেই গুনাহগার। অতএব তোমরা আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করবো। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জানে যে, আমি ক্ষমা করার ক্ষমতা রাখি, অতঃপর সে আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। আমি যাদের হেদায়াত করেছি তারা ব্যতীত তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট। অতএব তোমরা আমার নিকট সৎপথ প্রার্থনা করো। আমি তোমাদের সৎপথ প্রদর্শন করবো। আমি যাদের ধনবান করেছি তারা ব্যতিত তোমরা সকলেই দরিদ্র। তোমরা আমার নিকট প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের রিযিক দান করবো। তোমাদের জীবিত, মৃত, আগের ও পরের, সিক্ত ও শুষ্ক (সচ্ছল-অসচ্ছল) নির্বিশেষে সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক তাক্বওয়ার অধিকারী ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে একটি মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার রাজত্বের শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে না। পক্ষান্তরে তারা সকলে যদি একত্রে আমার বান্দাদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্নক পাপী বান্দার মত হয়ে যায়, তবুও তাতে একটি মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার রাজত্বের সৌন্দর্যহানি ঘটবে না। তোমাদের জীবিত, মৃত, আগের ও পরের, সিক্ত ও শুষ্ক সকলে যদি একত্র হয়ে প্রত্যেকে তার পূর্ণ চাহিদামত আমার নিকট প্রার্থনা করে এবং আমি তাদের চাহিদা মত সবকিছু দান করি, তবুও আমার রাজত্বের কিছুই কমবে না, তবে এতটুকু পরিমাণ যে, তোমাদের কেউ সমুদ্রের মধ্য দিয়ে অতিক্রমকালে তাতে একটিঁ সুঁই ডুবিয়ে তা তুলে নিলে তাতে সমুদ্রের পানি যতটুকু হ্রাস পাবে। কারণ আমি হলাম দাতা, দয়ালু ও মহান। আমি যা চাই তাই করি। আমার দান হলো আমার কথা (এবং আমার আযাব হলো আমার নির্দেশ)। আমার ব্যাপার এই যে, আমি যখন কিছু ইচ্ছা করি তখন বলি, “হয়ে যাও”, অমনি তা হয়ে যায়।[৩৫৮৯]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২৫৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " أَكْثِرُوا ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ " . يَعْنِي الْمَوْتَ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অধিক পরিমাণে জীবনের স্বাদ হরণকারী অর্থাৎ মৃত্যুকে স্মরণ করো।[৩৫৯০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪২৫৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৫৯
حَدَّثَنَا الزُّبَيْرُ بْنُ بَكَّارٍ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ فَرْوَةَ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ثُمَّ قَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَفْضَلُ قَالَ : " أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا " . قَالَ فَأَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَكْيَسُ قَالَ : " أَكْثَرُهُمْ لِلْمَوْتِ ذِكْرًا وَأَحْسَنُهُمْ لِمَا بَعْدَهُ اسْتِعْدَادًا أُولَئِكَ الأَكْيَاسُ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। এমতাবস্থায় এক আনসারী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে তাকে সালাম দিলো। অতঃপর বললো, হে আল্লাহর রাসূল! মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম কে? তিনি বলেনঃ স্বভাব–চরিত্রে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অধিক উত্তম। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে? তিনি বলেনঃ তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সর্বাধিক বুদ্ধিমান।[৩৫৯১]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৬০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬০
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ ضَمْرَةَ بْنِ حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي يَعْلَى، شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا ثُمَّ تَمَنَّى عَلَى اللَّهِ " .
আবূ ইয়া‘লা শাদ্দাদ বিন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে নিজের নফস কে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর নির্বোধ ও অকর্মন্য সেই ব্যক্তি যে তার নফসের দাবির অনুসরণ করে এবং আল্লাহর নিকট বৃথা আশা করে।[৩৫৯২]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২৬১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَكَمِ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، حَدَّثَنَا جَعْفَرٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، : أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ دَخَلَ عَلَى شَابٍّ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَقَالَ : " كَيْفَ تَجِدُكَ " . قَالَ : أَرْجُو اللَّهَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَأَخَافُ ذُنُوبِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " لاَ يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ فِي مِثْلِ هَذَا الْمَوْطِنِ إِلاَّ أَعْطَاهُ اللَّهُ مَا يَرْجُو وَآمَنَهُ مِمَّا يَخَافُ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মুমূর্ষু যুবকের নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার কেমন লাগছে? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার গুনাহ সম্পর্কে আল্লাহর কাছে (ক্ষমার) আশাবাদী ও ভীত-শংকিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ দু’টি জিনিস (আশা ও শংকা) যে বান্দার অন্তরেই একত্র হয়, সে যা আশা করে, আল্লাহ তাকে তা দান করবেন এবং সে যা আশংকা করে তা থেকে তাকে নিরাপদ রাখবেন।[৩৫৯৩]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৬২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " الْمَيِّتُ تَحْضُرُهُ الْمَلاَئِكَةُ فَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ صَالِحًا قَالُوا : اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الطَّيِّبَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ اخْرُجِي حَمِيدَةً وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبٍّ غَيْرِ غَضْبَانَ فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ ثُمَّ يُعْرَجُ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَيُفْتَحُ لَهَا فَيُقَالُ : مَنْ هَذَا فَيَقُولُونَ : فُلاَنٌ . فَيُقَالُ : مَرْحَبًا بِالنَّفْسِ الطَّيِّبَةِ، كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ ادْخُلِي حَمِيدَةً، وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبٍّ غَيْرِ غَضْبَانَ . فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى يُنْتَهَى بِهَا إِلَى السَّمَاءِ الَّتِي فِيهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ السُّوءُ قَالَ اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْخَبِيثَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ اخْرُجِي ذَمِيمَةً وَأَبْشِرِي بِحَمِيمٍ وَغَسَّاقٍ . وَآخَرَ مِنْ شَكْلِهِ أَزْوَاجٌ . فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ ثُمَّ يُعْرَجُ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَلاَ يُفْتَحُ لَهَا فَيُقَالُ : مَنْ هَذَا فَيُقَالُ : فُلاَنٌ . فَيُقَالُ : لاَ مَرْحَبًا بِالنَّفْسِ الْخَبِيثَةِ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ ارْجِعِي ذَمِيمَةً فَإِنَّهَا لاَ تُفْتَحُ لَكِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَيُرْسَلُ بِهَا مِنَ السَّمَاءِ ثُمَّ تَصِيرُ إِلَى الْقَبْرِ " . ثُمَّ ذَكَرَ ال
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মৃত্যুর সময় মানুষের নিকট ফেরেশতা আগমন করেন। অতএব মুমূর্ষু ব্যক্তি উত্তম লোক হলে তারা বলেন, হে পবিত্র আত্মা! পবিত্র দেহ থেকে প্রশংসিত অবস্থায় বের হয়ে এসো এবং আল্লাহর রহমত ও সুঘ্রাণের সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমার রব তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নন। রূহ বের হয়ে আসা পর্যন্ত তারা এভাবে আহবান জানাতে থাকে। অতঃপর রূহ বের হয়ে আসলে তারা তা নিয়ে আসমানে আরোহণ করেন। এ রূহের জন্যে আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়। জিজ্ঞেস করা হয়, সে কে? ফেরেশতাগণ বলেন, অমুক ব্যক্তি। তখন বলা হয়, পবিত্র আত্মাকে স্বাগতম, যা ছিল পবিত্র দেহে। প্রশংসিত অবস্থায় তুমি প্রবেশ করো। আল্লাহর রহমাত ও সুঘ্রানের সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমার রব তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নন। তাকে অবিরতভাবে এ সংবাদ প্রদান করা হয় যাবত না তা মহামহিম আল্লাহ যে আসমানে অবস্থান করেন সেখানে পৌঁছে যায়। মুমূর্ষু ব্যক্তি পাপাচারী হলে ফেরেশতা বলেন, হে নিকৃষ্ট দেহের নিকৃষ্ট আত্মা! নিন্দিত অবস্থায় বের হয়ে আয় এবং উত্তপ্ত গরম পানি ও রক্ত-পুঁজের দুঃসংবাদ গ্রহণ কর এবং অনুরূপ বহু বিষাক্ত বস্তুর। রূহ বের হয়ে আসা পর্যন্ত তারা এভাবে আহবান জানাতে থাকেন। অতঃপর তারা রূহসহ উর্দ্ধাকাশে আরোহণ করেন। কিন্তু তার জন্য দরজা খোলা হয় না। জিজ্ঞেস করা হয়, এ ব্যক্তি কে? বলা হয়, অমুক। তখন বলা হয়, নিকৃষ্ট দেহের নিকৃষ্ট আত্মার জন্য নাই কোন সাদর সম্ভাষণ। তুই নিন্দিত অবস্থায় ফিরে যা। কারণ তোর জন্য আকাশের দ্বারসমূহ খোলা হবে না। অতঃপর একে আসমান থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয় এবং তা কবরে ফিরে আসে।[৩৫৯৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ ثَابِتٍ الْجَحْدَرِيُّ، وَعُمَرُ بْنُ شَبَّةَ بْنِ عَبِيدَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِذَا كَانَ أَجَلُ أَحَدِكُمْ بِأَرْضٍ أَوْثَبَتْهُ إِلَيْهَا الْحَاجَةُ فَإِذَا بَلَغَ أَقْصَى أَثَرِهِ قَبَضَهُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ فَتَقُولُ الأَرْضُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ : رَبِّ هَذَا مَا اسْتَوْدَعْتَنِي " .
আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তোমাদের কারো মৃত্যু কোন এলাকায় নির্ধারিত হয়, তখন কোন প্রয়োজন তাকে সেখানে যেতে বাধ্য করে। সে যখন উক্ত এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যায় তখন মহা আল্লাহ তার জান কবয করেন। কিয়ামতের দিন জমীন বলবে, হে প্রভু! এই তোমার আমানত যা আমার নিকট গচ্ছিত রেখেছিলে। [৩৫৯৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ أَبُو سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللَّهِ أَحَبَّ اللَّهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللَّهِ كَرِهَ اللَّهُ لِقَاءَهُ " . فَقِيلَ لَهُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ كَرَاهِيَةُ لِقَاءِ اللَّهِ فِي كَرَاهِيَةِ لِقَاءِ الْمَوْتِ فَكُلُّنَا يَكْرَهُ الْمَوْتَ قَالَ : " لاَ إِنَّمَا ذَاكَ عِنْدَ مَوْتِهِ إِذَا بُشِّرَ بِرَحْمَةِ اللَّهِ وَمَغْفِرَتِهِ أَحَبَّ لِقَاءَ اللَّهِ فَأَحَبَّ اللَّهُ لِقَاءَهُ وَإِذَا بُشِّرَ بِعَذَابِ اللَّهِ كَرِهَ لِقَاءَ اللَّهِ وَكَرِهَ اللَّهُ لِقَاءَهُ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাথে সাক্ষাত পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সাথে সাক্ষাত অপছন্দ করেন। বলা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর সাথে সাক্ষাত অপছন্দ করা তো মৃত্যুকে অপছন্দ করা। অতএব আমাদের সকলেই তো মৃত্যুকে অপছন্দ করে। তিনি বলেনঃ তা নয়, এটা মৃত্যুর সময়ের ব্যাপার। যখন কোন বান্দাকে আল্লাহর রহমাত ও ক্ষমার সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন সে আল্লাহর সাক্ষাত লাভকে পছন্দ করে এবং আল্লাহও তার সাক্ষাত পছন্দ করেন। আর যখন কোন বান্দাকে কঠিন শাস্তির দুঃসংবাদ দেয়া হয়, তখন সে আল্লাহর সাক্ষাত অপছন্দ করে এবং আল্লাহও তার সাক্ষাত অপছন্দ করেন।[৩৫৯৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৫
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى اللَّيْثِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " لاَ يَتَمَنَّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ فَإِنْ كَانَ لاَ بُدَّ مُتَمَنِّيًا الْمَوْتَ فَلْيَقُلِ : اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন তার উপর পতিত বিপদাপদের কারণে মৃত্যু কামনা না করে। অবশ্যই কেউ যদি মৃত্যু কামনা করতেই চায়, তবে সে যেন বলে, “হে আল্লাহ! যাবৎ জীবিত থাকা আমার জন্যে কল্যাণকর, তাবৎ আমাকে জীবিত রাখুন এবং যখন মৃত্যুই আমার জন্যে কল্যাণকর হবে তখন আমাকে মৃত্যুদান করুন”।[৩৫৯৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " لَيْسَ شَىْءٌ مِنَ الإِنْسَانِ إِلاَّ يَبْلَى إِلاَّ عَظْمًا وَاحِدًا وَهُوَ عَجْبُ الذَّنَبِ وَمِنْهُ يُرَكَّبُ الْخَلْقُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একটি হাড় ব্যতিত গোটা মানবদেহ ক্ষয়প্রাপ্ত হবে। সেটা হলো পাছার হাড় এবং এই হাড় থেকেই কিয়ামতের দিন সৃষ্টির দৈহিক কাঠামো পুনর্গঠিত করা হবে।[৩৫৯৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَحِيرٍ، عَنْ هَانِئٍ، - مَوْلَى عُثْمَانَ - قَالَ : كَانَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ إِذَا وَقَفَ عَلَى قَبْرٍ يَبْكِي حَتَّى يَبُلَّ لِحْيَتَهُ فَقِيلَ لَهُ : تَذْكُرُ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ وَلاَ تَبْكِي وَتَبْكِي مِنْ هَذَا قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّ الْقَبْرَ أَوَّلُ مَنَازِلِ الآخِرَةِ فَإِنْ نَجَا مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ أَيْسَرُ مِنْهُ وَإِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ، فَمَا بَعْدَهُ أَشَدُّ مِنْهُ " . قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " مَا رَأَيْتُ مَنْظَرًا قَطُّ إِلاَّ وَالْقَبْرُ أَفْظَعُ مِنْهُ " .
উসমান (রাঃ) এর মুক্তদাস হানী থেকে বর্ণিতঃ
উসমান বিন আফফান (রাঃ) যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন তখন এতো কাঁদতেন যে, তার দাড়ি ভিজে যেত। তাকে বলা হলো, আপনি জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করেন তখন তো এভাবে কান্নাকাটি করেন না ,অথচ কবর দেখলেই কাঁদেন! তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় কবর হলো আখেরাতের মনযিলসমূহের মধ্যকার সর্বপ্রথম মনযিল। কেউ যদি এখান থেকে রেহাই পায়, তবে তার জন্য পরবর্তী মনযিল গুলো কবরের চেয়েও সহজতর হবে। আর সে যদি এখান থেকে রেহাই না পায়, তবে তার জন্য পরবর্তী মনযিলগুলো আরো ভয়াভহ হবে। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কখনও এমন কোন দৃশ্য অবলোকন করিনি যার তুলনায় কবর অধিক ভয়ংকর নয়।[৩৫৯৯]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৬৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّ الْمَيِّتَ يَصِيرُ إِلَى الْقَبْرِ فَيُجْلَسُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ فِي قَبْرِهِ غَيْرَ فَزِعٍ وَلاَ مَشْعُوفٍ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ : فِيمَ كُنْتَ فَيَقُولُ : كُنْتُ فِي الإِسْلاَمِ . فَيُقَالُ لَهُ : مَا هَذَا الرَّجُلُ فَيَقُولُ : مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ فَصَدَّقْنَاهُ . فَيُقَالُ لَهُ : هَلْ رَأَيْتَ اللَّهَ فَيَقُولُ : مَا يَنْبَغِي لأَحَدٍ أَنْ يَرَى اللَّهَ . فَيُفْرَجُ لَهُ فُرْجَةٌ قِبَلَ النَّارِ فَيَنْظُرُ إِلَيْهَا يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيُقَالُ لَهُ : انْظُرْ إِلَى مَا وَقَاكَ اللَّهُ . ثُمَّ يُفْرَجُ لَهُ فُرْجَةٌ قِبَلَ الْجَنَّةِ فَيَنْظُرُ إِلَى زَهْرَتِهَا وَمَا فِيهَا فَيُقَالُ لَهُ : هَذَا مَقْعَدُكَ . وَيُقَالُ لَهُ : عَلَى الْيَقِينِ كُنْتَ وَعَلَيْهِ مُتَّ وَعَلَيْهِ تُبْعَثُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ . وَيُجْلَسُ الرَّجُلُ السُّوءُ فِي قَبْرِهِ فَزِعًا مَشْعُوفًا فَيُقَالُ لَهُ : فِيمَ كُنْتَ فَيَقُولُ : لاَ أَدْرِي . فَيُقَالُ لَهُ : مَا هَذَا الرَّجُلُ فَيَقُولُ : سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ قَوْلاً فَقُلْتُهُ . فَيُفْرَجُ لَهُ قِبَلَ الْجَنَّةِ فَيَنْظُرُ إِلَى زَهْرَتِهَا وَمَا فِيهَا فَيُقَالُ لَهُ : انْظُرْ إِلَى مَا صَرَفَ اللَّهُ عَنْكَ . ثُمَّ يُفْرَجُ لَهُ فُرْجَةٌ قِبَلَ النَّارِ فَيَنْظُرُ إِلَيْهَا يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيُقَالُ لَهُ : هَذَا مَقْعَدُكَ عَلَى الشَّكِّ كُنْتَ وَعَلَيْهِ مُتَّ وَعَلَيْهِ تُبْعَثُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হলে এবং সে সৎকর্মপরায়ণ লোক হলে তাকে ভীতিশূন্য ও দুশ্চিন্তামুক্ত অবস্থায় তার কবরে বসানো হয়। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি কিসের অনুসারী ছিলে? সে বলবে, আমি ইসলামের অনুসারী ছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, এই ব্যক্তি কে? সে বলবে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণসহ আমাদের নিকট এসেছিলেন এবং আমরা তাকে সত্য নবী বলে স্বীকার করেছি। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি কি আল্লাহকে দেখেছিলে? সে বলবে, আল্লাহকে দেখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। অতঃপর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি সুড়ঙ্গ পথ খুলে দেয়া হবে। সে সেদিকে তাকিয়ে দেখতে পাবে যে, তার এক অংশ অপর অংশকে গ্রাস করছে। তাকে বলা হবে, দেখে নাও, যা থেকে আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করেছেন। অতঃপর তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি সুড়ঙ্গ পথ খুলে দেয়া হবে। সে তথাকার পুষ্প উদ্যান ও অন্যান্য সবকিছু দেখতে পাবে। তাকে বলা হবে, এই হলো তোমার স্থায়ী বাসস্থান। তাকে আরো বলা হবে, তুমি ঈমানের উপর দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত ছিলে, ঈমানসহ মৃত্যুবরণ করেছ এবং ইনশাল্লাহ ঈমানসহ হাশরের ময়দানে উত্থিত হবে।
পক্ষান্তরে দুষ্কর্মপরায়ণ লোককে ভীতিকর ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় উঠিয়ে তার কবরে বসানো হবে। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি কিসের অনুসারী ছিলে? সে বলবে, আমি জানি না। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, এই ব্যক্তি কে? সে বলবে, আমি লোকজনকে একটা কথা বলতে শুনেছি, আমিও তাই বলেছি। অতঃপর তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি সুড়ঙ্গ পথ খুলে দেয়া হবে। সে সেদিকে তাকিয়ে তথাকার পুষ্প উদ্যান ও অন্যান্য সবকিছু দেখতে পাবে। তাকে বলা হবে, দেখ যা থেকে আল্লাহ তোকে বঞ্চিত করেছেন। অতঃপর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি সুড়ঙ্গ পথ খুলে দেয়া হবে। সে সেদিকে তাকিয়ে দেখতে পাবে যে, জাহান্নামের এক অংশ অপর অংশ কে গ্রাস করছে। অতঃপর তাকে বলা হবে, এটা হলো তোর স্থায়ী আবাসস্থল। তুই সংশয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলি, সংশয়ী অবস্থায় মরেছিস এবং আল্লাহর মর্জি সংশয়ী অবস্থায় তোকে উঠানো হবে।[৩৬০০]
তাওকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৬৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " {يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ } قَالَ : نَزَلَتْ فِي عَذَابِ الْقَبْرِ يُقَالُ لَهُ : مَنْ رَبُّكَ فَيَقُولُ : رَبِّيَ اللَّهُ وَنَبِيِّي مُحَمَّدٌ فَذَلِكَ قَوْلُهُ {يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ} " .
বারা’ বিন আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যারা শাশ্বত বাণীতে ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবে” (সূরা ইবরাহীমঃ ২৭)। তিনি বলেন যে, এ আয়াত কবর আযাব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। কবরস্থ ব্যক্তিকে বলা হবে, তোমার রব কে? সে বলবে, আমার রব আল্লাহ এবং আমার নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। এই হচ্ছে আল্লাহর নিম্নোক্ত আয়াতের তাৎপর্য (অনুবাদ) : “যারা শাশ্বত বাণীতে ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের পার্থিব জীবনে এবং আখেরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন” (সূরা ইবরাহীমঃ ২৭)। [৩৬০১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ عُرِضَ عَلَى مَقْعَدِهِ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ إِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ يُقَالُ هَذَا مَقْعَدُكَ حَتَّى تُبْعَثَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের যে কেউ মারা যাওয়ার পর তার সামনে সকাল-সন্ধ্যায় তার বসবাসের ঠিকানা তুলে ধরা হয়। সে জান্নাতি হয়ে থাকলে জান্নাতীদের অবস্থান দেখানো হয় এবং জাহান্নামী হলে জাহান্নামীদের অবস্থান দেখানো হয়। তাকে বলা হয়, কিয়ামতের দিন তোমাকে উঠানোর পর থেকে এটাই হবে তোমার আবাস।[৩৬০২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭১
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبٍ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِنَّمَا نَسَمَةُ الْمُؤْمِنِ طَائِرٌ يَعْلُقُ فِي شَجَرِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى جَسَدِهِ يَوْمَ يُبْعَثُ " .
কা‘ব বিন মালিক আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তির রূহ একটি পাখির আকৃতিতে জান্নাতের বৃক্ষে যুক্ত থাকবে। শেষে উত্থিত হওয়ার দিন তার রূহ তার দেহে ফিরে আসবে।[৩৬০৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭২
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ حَفْصٍ الأُبُلِّيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " إِذَا أُدْخِلَ الْمَيِّتُ الْقَبْرَ مُثِّلَتِ الشَّمْسُ لَهُ عِنْدَ غُرُوبِهَا فَيَجْلِسُ يَمْسَحُ عَيْنَيْهِ وَيَقُولُ : دَعُونِي أُصَلِّي " .
জাবির (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হলে সে সূর্যকে অস্তমিত দেখতে পায়। তখন সে উঠে বসে এবং তার চক্ষুদ্বয় মলতে মলতে বলে, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি নামাজ পড়বো।[৩৬০৪]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৭৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، عَنْ حَجَّاجٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ صَاحِبَىِ الصُّورِ بِأَيْدِيهِمَا - أَوْ فِي أَيْدِيهِمَا - قَرْنَانِ يُلاَحِظَانِ النَّظَرَ مَتَى يُؤْمَرَانِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শিংগাধারী দু’ ফেরেশতা তাদের দু’ হাতে দু’টি শিংগা নিয়ে অপেক্ষায় আছেন, কখন তাদের প্রতি (ফুৎকারের) নির্দেশ আসে। [৩৬০৫]
তাহকীক আলবানীঃ মুনকার তবে (আরবি) শব্দে মাহফূয।
উক্ত হাদীসের রাবী ১ হাজ্জাজ সম্পর্কে আবূ আহমাদ আল-হাকিম বলেন,তিনি আহলে ইলমের কাছে নির্ভরযোগ্য নয়।আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন,তার হাদীস দলিল দ্বারা গ্রহনযোগ্য নয়।অন্যত্র তিনি তাকে দূর্বল বলেছেন।আবূ যুররাহ আর রাযী বলেন,তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় তাদলীস করেন।মুহাম্মদ বিন সা’দ তাকে দূর্বল বলেছেন।আহমাদ বিন শুয়াওব আন নাসায়ী বলেন,তিনি দূর্বল,তার হাদীস দলিল দ্বারা গ্রহণযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২,৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা) ২.আতিয়্যাহ সম্পর্কে আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন,তিনি দূর্বল,তারা হাদীস গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন,তিনি দূর্বল। আবূ যূরআহ আর-রাযী বলেন,তিনি যাচাই বাছাই ছাড়া হাদীস গ্রহণ করেন ও তা বর্ণনা করেন।আহমাদ বিন হাম্বল বলেন,তিনি হাদীস বর্ণনায় দূর্বল। আহমাদ বিন শুয়াওব আন নাসায়ী বলেন,তিনি দূর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন,তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় অধিক ভূল করেন।ইমাম যাহাবী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন,তিনি দূর্বল (তাহযীবুল কামাল ৩৯৫৬,২০/১৪৫ পৃষ্ঠা)
৪২৭৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ بِسُوقِ الْمَدِينَةِ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى عَلَى الْبَشَرِ . فَرَفَعَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَدَهُ فَلَطَمَهُ قَالَ تَقُولُ هَذَا وَفِينَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ إِلاَّ مَنْ شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ} فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ رَفَعَ رَأْسَهُ فَإِذَا أَنَا بِمُوسَى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَلاَ أَدْرِي أَرَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلِي أَوْ كَانَ مِمَّنِ اسْتَثْنَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ . وَمَنْ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى فَقَدْ كَذَبَ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মদীনার বাজারে এক ইহূদী বললো, সেই সত্তার শপথ যিনি মূসা (আঃ) কে সমগ্র মানবজাতির উপর মর্যাদা দান করেছেন। এক আনসারী তার হাত তুলে তাকে সজোরে চড় মেরে বললো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে থাকা অবস্থায় তুমি একথা বলছো! বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পেশ করা হলে তিনি বলেনঃ মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “এবং শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হবে। ফলে যাদের আল্লাহ ইচ্ছা করবেন তারা ব্যতিত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মুর্ছিত হয়ে পড়বে। অতঃপর পুনরায় শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে” (সূরা যুমারঃ ৬৮)। আমি হবো মাথা উত্তোলনকারী প্রথম ব্যক্তি। আমি মূসা আলাইহিস সালামকে আরশের একটি পায়া ধরে আঁকরে ধরা অবস্থায় দেখতে পাবো। আমি জানি না, তিনি কি আমার আগে তাঁর মাথা তুলেছেন, না আল্লাহ তাআলা তাকে অজ্ঞান হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। আর যে ব্যক্তি বলে যে, আমি ইউনুস বিন মাত্তা আলাইহিস সালাম অপেক্ষা উত্তম, সে মিথ্যা বলে।[৩৬০৬]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
৪২৭৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৫
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مِقْسَمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ " يَأْخُذُ الْجَبَّارُ سَمَوَاتِهِ وَأَرَضِيهِ بِيَدِهِ - وَقَبَضَ يَدَهُ فَجَعَلَ يَقْبِضُهَا وَيَبْسُطُهَا - ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْجَبَّارُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ " . قَالَ وَيَتَمَايَلُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ حَتَّى نَظَرْتُ إِلَى الْمِنْبَرِ يَتَحَرَّكُ مِنْ أَسْفَلِ شَىْءٍ مِنْهُ حَتَّى إِنِّي لأَقُولُ أَسَاقِطٌ هُوَ بِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ মহাপ্রতাপশালী আল্লাহ তাঁর আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীকে তাঁর হাতের মুঠোয় পুরে নিয়ে তা মুষ্টিবদ্ধ করবেন, অতঃপর তা সংকুচিত ও প্রসারিত করতে থাকবেন, অতঃপর বলবেন, আমিই মহাপ্রতাপশালী, আমিই রাজাধিরাজ। প্রতাপশালী দাম্ভিকেরা কোথায়? রাবী বলেন, এ কথা বলতে বলতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডানে বামে ঝুঁকছিলেন। শেষে আমি লক্ষ্য করলাম যে, মিম্বারের নিম্নাংশ তাকে নিয়ে দুলছে, এমনকি আমি বলতে লাগলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার থেকে নিচে পড়ে যান কিনা।[৩৬০৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ حَاتِمِ بْنِ أَبِي صَغِيرَةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ الْقَاسِمِ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ " حُفَاةً عُرَاةً " . قُلْتُ وَالنِّسَاءُ قَالَ " وَالنِّسَاءُ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا يُسْتَحْيَى قَالَ " يَا عَائِشَةُ الأَمْرُ أَشَدُّ مِنْ أَنْ يَنْظُرَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে মানবজাতিকে কী অবস্থায় সমবেত করা হবে? তিনি বলেনঃ নগ্নপদে উলংগ বদনে। আমি বললাম, নারীরাও? তিনি বলেনঃ নারীরাও। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এতে কি আমরা লজ্জিত হবো না? তিনি বলেনঃ হে আয়িশাহ! তখনকার অবস্থা হবে খুবই ভয়ংকর। কেউ কারো প্রতি দৃষ্টিপাত করার মত অবস্থায় থাকবে না। [৩৬০৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَلِيِّ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يُعْرَضُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَلاَثَ عَرَضَاتٍ فَأَمَّا عَرْضَتَانِ فَجِدَالٌ وَمَعَاذِيرُ وَأَمَّا الثَّالِثَةُ فَعِنْدَ ذَلِكَ تَطِيرُ الصُّحُفُ فِي الأَيْدِي فَآخِذٌ بِيَمِينِهِ وَآخِذٌ بِشِمَالِهِ " .
আবূ মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষকে তিনবার পেশ করা হবে। প্রথম দু’বার বাক-বিতন্ডা ও ওজর-আপত্তি পেশের জন্য। তৃতীয়বারে প্রত্যেকের আমলনামা উড়ে এসে হাতের নাগালে পৌঁছবে এবং কেউ তা ডান হাতে, কেউ তা বাম হাতে গ্রহণ করবে।[৩৬০৯]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২৭৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، وَأَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ {يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ} قَالَ " يَقُومُ أَحَدُهُمْ فِي رَشْحِهِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “যেদিন মানবজাতি জগতসমূহের প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড়াবে” (সূরা মুতাফফিফীনঃ ৬) শীর্ষক আয়াত সম্পর্কে বলেনঃ তাদের এক একজন নিজ দেহ নিঃসৃত ঘামের মধ্যে দু’ কান বরাবর ডুবন্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকবে।[৩৬১০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৭৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৭৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَنْ قَوْلِهِ {يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ وَالسَّمَوَاتُ } فَأَيْنَ تَكُونُ النَّاسُ يَوْمَئِذٍ قَالَ " عَلَى الصِّرَاطِ " .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট “যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও” (সূরা ইবরাহীমঃ ৪৮) শীর্ষক আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? তিনি বলেনঃ পুলসিরাতের উপর।[৩৬১১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَبْدٍ الْعُتْوَارِيِّ، أَحَدِ بَنِي لَيْثٍ - قَالَ - وَكَانَ فِي حَجْرِ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُهُ - يَعْنِي أَبَا سَعِيدٍ، - يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " يُوضَعُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَانَىْ جَهَنَّمَ عَلَى حَسَكٍ كَحَسَكِ السَّعْدَانِ ثُمَّ يَسْتَجِيزُ النَّاسُ فَنَاجٍ مُسَلَّمٌ وَمَخْدُوجٌ بِهِ ثُمَّ نَاجٍ وَمُحْتَبَسٌ بِهِ وَمَنْكُوسٌ فِيهَا " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পুলসিরাত জাহান্নামের দু’ তীরের সাথে যুক্ত থাকবে। তাতে থাকবে সাদান বৃক্ষের কাঁটা সদৃশ কাঁটাসমূহ। লোকজন তার উপর দিয়ে অতিক্রম করবে। কতক মুসলমান নিরাপদে তার উপর দিয়ে অতিক্রম করবে, কতক কাঁটার আঁচড় খেয়ে, কতক কাঁটায় বিদ্ধ হয়ে থাকার পর নাজাত পাবে এবং কতক মুখ থুবড়ে জাহান্নামের তলদেশে নিক্ষিপ্ত হবে।[৩৬১২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ أُمِّ مُبَشِّرٍ، عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنِّي لأَرْجُو أَلاَّ يَدْخُلَ النَّارَ أَحَدٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا وَالْحُدَيْبِيَةَ " . قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ اللَّهُ {وَإِنْ مِنْكُمْ إِلاَّ وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَقْضِيًّا} قَالَ " أَلَمْ تَسْمَعِيهِ يَقُولُ {ثُمَّ نُنَجِّي الَّذِينَ اتَّقَوْا وَنَذَرُ الظَّالِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا} .
হাফসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি অবশ্যই আশা করি আল্লাহর মর্জি যারা বদর ও হুদায়বিয়ার প্রান্তরে উপস্থিত ছিল তাদের কেউ জাহান্নামে যাবে না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলা কি বলেননিঃ “এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তা অতিক্রম করবে, এটা তোমার প্রভুর অনিবার্য সিদ্ধান্ত” (সূরা মরিয়মঃ ৭১)? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি কি শোননি যে, আল্লাহ বলেছেনঃ “পরে আমি মোত্তাকীদের উদ্ধার করবো এবং যালেমদের সেথায় নতজানু অবস্থায় রেখে দিবো” (সূরা মরিয়মঃ ৭২)।[৩৬১৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " تَرِدُونَ عَلَىَّ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنَ الْوُضُوءِ سِيمَاءُ أُمَّتِي لَيْسَ لأَحَدٍ غَيْرِهَا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তারা (আমার উম্মাত) শুভ্র হস্তপদ ও উজ্জ্বল চেহারায় আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে। এটা হবে আমার উম্মাতের নিদর্শন, অন্য কোন উম্মাতের নয়।[৩৬১৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي قُبَّةٍ فَقَالَ " أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ " . قُلْنَا بَلَى . قَالَ " أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ " . قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا نِصْفَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَذَلِكَ أَنَّ الْجَنَّةَ لاَ يَدْخُلُهَا إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ وَمَا أَنْتُمْ فِي أَهْلِ الشِّرْكِ إِلاَّ كَالشَّعَرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعَرَةِ السَّوْدَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَحْمَرِ " .
আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে একটি তাঁবুর মধ্যে ছিলাম। তিনি বলেনঃ তোমরা কি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, তোমরা জান্নাতীদের সংখ্যার এক-চতুর্থাংশ হবে? আমরা বললাম, হাঁ। তিনি আবার বলেনঃ তোমরা কি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, তোমরা জান্নাতীদের সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হবে? আমরা বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ জান্নাতীদের অর্ধেক হবে তোমরা। এজন্য যে, জান্নাতে কেবল মুসলিম ব্যক্তিই প্রবেশ করবে। তোমরা মুশরিকদের তুলনায় কালো ষাঁড়ের চামড়ায় সাদা লোম সদৃশ অথবা লাল ষাঁড়ের চামড়ায় কালো লোম সদৃশ।[৩৬১৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَجِيءُ النَّبِيُّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَعَهُ الرَّجُلُ وَيَجِيءُ النَّبِيُّ وَمَعَهُ الرَّجُلاَنِ وَيَجِيءُ النَّبِيُّ وَمَعَهُ الثَّلاَثَةُ وَأَكْثَرُ مِنْ ذَلِكَ وَأَقَلُّ فَيُقَالُ لَهُ هَلْ بَلَّغْتَ قَوْمَكَ فَيَقُولُ نَعَمْ . فَيُدْعَى قَوْمُهُ فَيُقَالُ هَلَ بَلَّغَكُمْ فَيَقُولُونَ لاَ . فَيُقَالُ مَنْ شَهِدَ لَكَ فَيَقُولُ مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ . فَتُدْعَى أُمَّةُ مُحَمَّدٍ فَيُقَالُ هَلْ بَلَّغَ هَذَا فَيَقُولُونَ نَعَمْ . فَيَقُولُ وَمَا عِلْمُكُمْ بِذَلِكَ فَيَقُولُونَ أَخْبَرَنَا نَبِيُّنَا بِذَلِكَ أَنَّ الرُّسُلَ قَدْ بَلَّغُوا فَصَدَّقْنَاهُ . قَالَ فَذَلِكُمْ قَوْلُهُ تَعَالَى {وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا} .
আবূ সাঈদ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (কিয়ামতের দিন) একজন নবী আসবেন, তাঁর সাথে থাকবে একজন মাত্র অনুসারী। আবার কোন নবীর সাথে থাকবে দু’জন অনুসারী। আবার কোন নবীর সাথে থাকবে তিনজন বা তার কম-বেশী অনুসারী। তাঁকে বলা হবে, তুমি কি তোমার জাতির নিকট আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়েছিলে? তিনি বলবেনঃ হাঁ। তার জাতিকে ডাকা হবে এবং বলা হবে, তিনি কি তোমাদের নিকট আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়েছিলেন? তারা বলবে, না। তাঁকে বলা হবে, তোমার সাক্ষী কারা? তিনি বলবেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উম্মাতকে ডাকা হবে এবং জিজ্ঞেস করা হবে, নবী কি (তাঁর উম্মাতের নিকট আল্লাহর বাণী) পৌঁছিয়েছিলেন? তারা বলবে, হাঁ। তাদের আবার জিজ্ঞেস করা হবে, তোমরা তা জানলে কিভাবে? তারা বলবে, আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের অবহিত করেছিলেন যে, নিশ্চয় রাসূলগণ আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন। আমরা তাঁর কথা সত্য বলে স্বীকার করেছি। তোমাদের জন্য এ কথার প্রমাণ হলো মহান আল্লাহর বাণী (অনুবাদ) : “এভাবে আমি তোমাদেরকে এক ন্যায়নিষ্ঠ জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসূল তোমাদের সাক্ষীস্বরূপ হতে পারে।” (সূরা বাকারাঃ ১৪৩)।[৩৬১৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُصْعَبٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ رِفَاعَةَ الْجُهَنِيِّ، قَالَ صَدَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا مِنْ عَبْدٍ يُؤْمِنُ ثُمَّ يُسَدَّدُ إِلاَّ سُلِكَ بِهِ فِي الْجَنَّةِ وَأَرْجُو أَلاَّ يَدْخُلُوهَا حَتَّى تَبَوَّءُوا أَنْتُمْ وَمَنْ صَلَحَ مِنْ ذَرَارِيِّكُمْ مَسَاكِنَ فِي الْجَنَّةِ وَلَقَدْ وَعَدَنِي رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يُدْخِلَ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعِينَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ " .
রিফা‘আহ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা (সফর থেকে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ফিরে এলে তিনি বলেনঃ সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! এমন কোন বান্দা নেই যে ঈমান আনার পর তার উপর অবিচল থেকেও জান্নাতের দিকে পরিচালিত হবে না। আমি আশা করি যে, তোমরা ও তোমাদের সৎ কর্মপরায়ণ সন্তানেরা জান্নাতে নিজ নিজ স্থানে না পৌঁছানো পর্যন্ত অন্য লোকেরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আমার মহান প্রভু আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোককে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।[৩৬১৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ الأَلْهَانِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ الْبَاهِلِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ وَعَدَنِي رَبِّي سُبْحَانَهُ أَنْ يُدْخِلَ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعِينَ أَلْفًا لاَ حِسَابَ عَلَيْهِمْ وَلاَ عَذَابَ مَعَ كُلِّ أَلْفٍ سَبْعُونَ أَلْفًا وَثَلاَثُ حَثَيَاتٍ مِنْ حَثَيَاتِ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ " .
আবূ উমামাহ আল-বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোককে বিনা হিসাবে জান্নাতে দাখিল করবেন এবং তাদের কোনরূপ শাস্তিও হবেনা। প্রতি হাজারের সাথে থাকবে আরও সত্তর হাজার করে এবং আরো থাকবে আমার মহান প্রতিপালকের তিন মুঠো পরিমাণ।[৩৬১৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৮৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৭
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ النَّحَّاسِ الرَّمْلِيُّ، وَأَيُّوبُ بْنُ مُحَمَّدٍ الرَّقِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ضَمْرَةُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنِ ابْنِ شَوْذَبٍ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " نُكْمِلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ سَبْعِينَ أُمَّةً نَحْنُ آخِرُهَا وَخَيْرُهَا " .
মু‘আবিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আমার উম্মাত সত্তর সংখ্যা পূর্ণ করবে। আমরা হবো এর সর্বশেষ ও সর্বোত্তম উম্মাত।[৩৬১৯]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান
৪২৮৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ خِدَاشٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " إِنَّكُمْ وَفَّيْتُمْ سَبْعِينَ أُمَّةً أَنْتُمْ خَيْرُهَا وَأَكْرَمُهَا عَلَى اللَّهِ " .
মুআবিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ নিশ্চয় তোমরা উম্মাতের সংখ্যা সত্তরে পূর্ণ করেছো। এদের মধ্যে তোমরাই আল্লাহর নিকট অধিক উত্তম ও মর্যাদাবান উম্মাত।[৩৬২০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
৪২৮৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِسْحَاقَ الْجَوْهَرِيُّ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ حَفْصٍ الأَصْبَهَانِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " أَهْلُ الْجَنَّةِ عِشْرُونَ وَمِائَةُ صَفٍّ ثَمَانُونَ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ وَأَرْبَعُونَ مِنْ سَائِرِ الأُمَمِ " .
বুরায়দাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জান্নাতীদের একশত বিশটি কাতার হবে। তন্মধ্যে এই উম্মাতের হবে আশিটি কাতার এবং অন্যান্য উম্মাতের হবে চল্লিশটি।[৩৬২১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ إِيَاسٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ نَحْنُ آخِرُ الأُمَمِ وَأَوَّلُ مَنْ يُحَاسَبُ يُقَالُ أَيْنَ الأُمَّةُ الأُمِّيَّةُ وَنَبِيُّهَا فَنَحْنُ الآخِرُونَ الأَوَّلُونَ " .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমরা হলাম সর্বশেষ উম্মাত এবং সর্বপ্রথম আমাদের হিসাব গ্রহণ করা হবে। বলা হবে, উম্মী (নিরক্ষর) নবীর উম্মাত এবং তাদের নবী কোথায়? সুতরাং আমরা হলাম সর্বশেষ উম্মাত (দুনিয়াতে আগমনের দিক থেকে) এবং সর্বপ্রথম উম্মাত (জান্নাতে প্রবেশের দিক থেকে)।[৩৬২২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯১
حَدَّثَنَا جُبَارَةُ بْنُ الْمُغَلِّسِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ أَبِي الْمُسَاوِرِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا جَمَعَ اللَّهُ الْخَلاَئِقَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أُذِنَ لأُمَّةِ مُحَمَّدٍ بِالسُّجُودِ فَيَسْجُدُونَ لَهُ طَوِيلاً ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعُوا رُءُوسَكُمْ قَدْ جَعَلْنَا عِدَّتَكُمْ فِدَاءَكُمْ مِنَ النَّارِ " .
আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ কিয়ামতের দিন সমগ্র সৃষ্টিকে একত্র করার পর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উম্মাতকে সিজদারত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হবে। তারা দীর্ঘক্ষণ তাঁর উদ্দেশে সিজদারত থাকবে। অতঃপর বলা হবে, তোমরা মাথা উঠাও। আমি তোমাদের সমসংখ্যককে (কাফেরকে) জাহান্নামের ফিদয়া স্বরূপ দিয়েছি।[৩৬২৩]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
৪২৯২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯২
حَدَّثَنَا جُبَارَةُ بْنُ الْمُغَلِّسِ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ هَذِهِ أُمَّةٌ مَرْحُومَةٌ عَذَابُهَا بِأَيْدِيهَا فَإِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ دُفِعَ إِلَى كُلِّ رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ رَجُلٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَيُقَالُ هَذَا فِدَاؤُكَ مِنَ النَّارِ " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এই উম্মাত হলো অনুগ্রহপ্রাপ্ত। এদের দ্বারাই এদের শাস্তি হবে (পারষ্পরিক হানাহানির মাধ্যমে)। কিয়ামতের দিন প্রত্যেক মুসলমানকে একজন করে মুশরিক সোপর্দ করার হবে এবং বলা হবে, জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য এই হলো তোমার ফিদ্য়া।[৩৬২৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ لِلَّهِ مِائَةَ رَحْمَةٍ قَسَمَ مِنْهَا رَحْمَةً بَيْنَ جَمِيعِ الْخَلاَئِقِ فَبِهَا يَتَرَاحَمُونَ وَبِهَا يَتَعَاطَفُونَ وَبِهَا تَعْطِفُ الْوَحْشُ عَلَى أَوْلاَدِهَا وَأَخَّرَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ رَحْمَةً يَرْحَمُ بِهَا عِبَادَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তাআলার একশত রহমাত রয়েছে। তন্মধ্যে একটি রহমাত তিনি সারা সৃষ্টির মধ্যে বণ্টন করেছেন। এই একটি রহমাতের কারণেই তারা একে অপরের প্রতি দয়াপরবশ হয়, পরষ্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। এর দ্বারা জীব-জন্তু তার বাচ্চার প্রতি মমতায় উদ্বুদ্ধ হয়। তিনি অবশিষ্ট নিরানব্বইটি রহমত কিয়ামতের দিন তাঁর বান্দাদের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শনের জন্য রেখেছে।[৩৬২৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " خَلَقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ مِائَةَ رَحْمَةٍ فَجَعَلَ فِي الأَرْضِ مِنْهَا رَحْمَةً فَبِهَا تَعْطِفُ الْوَالِدَةُ عَلَى وَلَدِهَا وَالْبَهَائِمُ بَعْضُهَا عَلَى بَعْضٍ وَالطَّيْرُ وَأَخَّرَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةٍ فَإِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أَكْمَلَهَا اللَّهُ بِهَذِهِ الرَّحْمَةِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন এক শত রহমাত সৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে থেকে তিনি মাত্র একটি রহমাত পৃথিবীতে বিতরণ করেছেন। এর দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে মা তার সন্তানের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করে এবং জীবজন্তু, পক্ষীকুল ইত্যাদিও পরষ্পরের প্রতি সহানুভুতি প্রদর্শন করে। অবশিষ্ট নিরানব্বইটি রহমাত তিনি কিয়ামতের দিনের জন্য রেখে দিয়েছেন। যেদিন কিয়ামত হবে সেদিন তিনি এটি দ্বারা একশত রহমাত পূর্ণ করবেন।[৩৬২৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمَّا خَلَقَ الْخَلْقَ كَتَبَ بِيَدِهِ عَلَى نَفْسِهِ إِنَّ رَحْمَتِي تَغْلِبُ غَضَبِي " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ যখন সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করেছেন তখন নিজ হাতে নিজের ব্যাপারে লিখেছেনঃ “আমার রহমাত আমার ক্রোধের উপর বিজয়ী থাকবে”।[৩৬২৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ مَرَّ بِي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَأَنَا عَلَى حِمَارٍ فَقَالَ " يَا مُعَاذُ هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ " . قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " فَإِنَّ حَقَّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا . وَحَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ إِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ " .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তখন একটি গাধার পিঠে আরোহিত ছিলাম। তিনি বলেনঃ হে মুআয! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর কী অধিকার রয়েছে এবং আল্লাহর উপর বান্দার কী অধিকার রয়েছে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক অবগত। তিনি বলেনঃ বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার এই যে, বান্দাহ তাঁরই ইবাদাত করবে এবং তাঁর সাথে অন্য কিছু শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার এই যে, তারা (বান্দা) তদনুযায়ী আচরণ করলে তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন না।[৩৬২৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪২৯৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৭
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ يَحْيَى الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ حَفْصٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي بَعْضِ غَزَوَاتِهِ فَمَرَّ بِقَوْمٍ فَقَالَ مَنِ الْقَوْمُ فَقَالُوا نَحْنُ الْمُسْلِمُونَ . وَامْرَأَةٌ تَحْصِبُ تَنُّورَهَا وَمَعَهَا ابْنٌ لَهَا فَإِذَا ارْتَفَعَ وَهَجُ التَّنُّورِ تَنَحَّتْ بِهِ فَأَتَتِ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَتْ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَرْحَمِ الرَّاحِمِينَ قَالَ " بَلَى " . قَالَتْ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَرْحَمَ بِعِبَادِهِ مِنَ الأُمِّ بِوَلَدِهَا قَالَ " بَلَى " . قَالَتْ فَإِنَّ الأُمَّ لاَ تُلْقِي وَلَدَهَا فِي النَّارِ . فَأَكَبَّ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَبْكِي ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ إِلَيْهَا فَقَالَ " إِنَّ اللَّهَ لاَ يُعَذِّبُ مِنْ عِبَادِهِ إِلاَّ الْمَارِدَ الْمُتَمَرِّدَ الَّذِي يَتَمَرَّدُ عَلَى اللَّهِ وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা কোন এক জিহাদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। তিনি এক সম্প্রদায়ের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কারা এই সম্প্রদায়? তারা বলেন, আমরা মুসলমান। এক স্ত্রীলোক তার চুলার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলে সে তার পুত্রকে সরিয়ে নিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললো, আপনি কি আল্লাহর রাসূল? তিনি বলেন, হাঁ। সে বললো, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক। আল্লাহ তাআলা কি দয়ালুদের মধ্যে সর্বাধিক দয়ালু নন? তিনি বলেন, অবশ্যই। স্ত্রীলোকটি বললো, সন্তানের প্রতি মা যতোটা দয়াপরবশ, আল্লাহ কি তাঁর বান্দাদের প্রতি তার চেয়ে অধিক দয়াপরবশ নন? তিনি বলেন, অবশ্যই। সে বললো, নিশ্চয়ই মা তার সন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করে না। একথায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা অবনত করে কেঁদে দিলেন, অতঃপর মাথা তুলে তাকে বলেন, যে ব্যক্তি অবাধ্য, উদ্ধত, বিদ্রোহী, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলতে অস্বীকার করে, সে ব্যতীত আল্লাহ তার অপরাপর বান্দাদের শাস্তি দিবেন না।[৩৬২৯]
তাহকীক আলবানীঃ বানোয়াট।
উক্ত হাদীসের রাবী ১. ইবরাহীম বিন আয়ান সম্পর্কে আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দূর্বল। আবূ হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি অপরিচিত। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দূর্বল। (তাহযীবুল কামালঃরাবী নং ১৫৪, ২/৫৩ নং পৃষ্ঠা) ২. ইসমাঈল বিন ইয়াহইয়া আশ-শায়বানী সম্পর্কে আবূ জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার মিথ্যা বলার ব্যাপারে অভিযোগ আছে। ইয়াজিদ বিন হারুন আল-আয়লী বলেন, তিনি মিথ্যুক। (তাহযীবুল কামালঃরাবী নং ৪৯৩, ৩/২১৩ নং পৃষ্ঠা) ৩. আবদুল্লাহ বিন আমর বিন হাফস সম্পর্কে আবূ আহমাদ আল-হাকীম বলেন, তিনি দূর্বল, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুয়ায়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দূর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী ও আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি দূর্বল। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দূর্বল ছিলেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৪০, ১৫/৩২৭ নং পৃষ্ঠা) ।
৪২৯৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৮
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ هَاشِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ يَدْخُلُ النَّارَ إِلاَّ شَقِيٌّ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنِ الشَّقِيُّ قَالَ " مَنْ لَمْ يَعْمَلْ لِلَّهِ بِطَاعَةٍ وَلَمْ يَتْرُكْ لَهُ مَعْصِيَةً " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুর্ভাগা হতভাগা ব্যতীত কেউ জাহান্নামে যাবে না। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! হতভাগা কে? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজ করেনি এবং তাঁর অবাধ্যচারিতা ত্যাগ করেনি।[৩৬৩০]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
৪২৯৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪২৯৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، - أَخُو حَزْمٍ الْقُطَعِيِّ - حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَرَأَ - أَوْ تَلاَ - هَذِهِ الآيَةَ {هُوَ أَهْلُ التَّقْوَى وَأَهْلُ الْمَغْفِرَةِ} فَقَالَ " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا أَهْلٌ أَنْ أُتَّقَى فَلاَ يُجْعَلَ مَعِي إِلَهٌ آخَرُ فَمَنِ اتَّقَى أَنْ يَجْعَلَ مَعِي إِلَهًا آخَرَ فَأَنَا أَهْلٌ أَنْ أَغْفِرَ لَهُ " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই আয়াত পাঠ বা তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : "একমাত্র তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং তিনিই ক্ষমা করার অধিকারী" (সূরা মুদ্দাসসিরঃ ৫৬) , অতঃপর বলেনঃ মহান আল্লাহ বলেছেন, আমিই উপযুক্ত যে, কেবল আমাকেই ভয় করতে হবে। অতএব আমার সাথে যেন অন্য ইলাহ যোগ না করা হয়। যে ব্যক্তি আমার সাথে অন্য কোন ইলাহ যোগ করা পরিহার করবে, আমি তাকে ক্ষমা করার অধিকারী।
[উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলোঃ]
৮/৪২৯৯ (১) . আনাস (রাঃ) , "একমাত্র তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং তিনিই ক্ষমা করার অধিকারী" (সূরা মুদ্দাসসির) শীর্ষক আয়াত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, আমিই উপযুক্ত যে, আমাকেই ভয় করতে হবে, আমার সাথে অন্যকে শরীক করা যাবে না। আর যে ব্যক্তি আমার সাথে শরীক করা পরিহার করেছে আমিই তাকে ক্ষমা করার অধিকারী। [৩৬৩১]
তাহকীক আলবানীঃ দূর্বল।
উক্ত হাদীসের রাবী ১. যায়দ ইবনুল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বাল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদীস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনুল মাদীনী ও উসমান বিন আবূ শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে সাওরীর হাদীস বর্ণনায় ভুল করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃরাবী নং ২০৯৫, ১০/৪০ নং পৃষ্ঠা) ২. সুহায়ল বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবূ জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। আহমাদ বিন শুয়ায়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দূর্বল, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। ইমাম বুখারী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না, তার সমালোচনা রয়েছে। (তাহযীবুল কামালঃরাবী নং ২৬২৬, ১২/২১৭ নং পৃষ্ঠা)
৪৩০০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يُصَاحُ بِرَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ فَيُنْشَرُ لَهُ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ سِجِلاًّ كُلُّ سِجِلٍّ مَدَّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَلْ تُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ فَيَقُولُ أَظَلَمَتْكَ كَتَبَتِي الْحَافِظُونَ ثُمَّ يَقُولُ أَلَكَ عُذْرٌ أَلَكَ حَسَنَةٌ فَيُهَابُ الرَّجُلُ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَاتٍ وَإِنَّهُ لاَ ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ فَتُخْرَجُ لَهُ بِطَاقَةٌ فِيهَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ قَالَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلاَّتِ فَيَقُولُ إِنَّكَ لاَ تُظْلَمُ . فَتُوضَعُ السِّجِلاَّتُ فِي كِفَّةٍ وَالْبِطَاقَةُ فِي كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ " . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْبِطَاقَةُ الرُّقْعَةُ وَأَهْلُ مِصْرَ يَقُولُونَ لِلرُّقْعَةِ بِطَاقَةً
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টির সামনে আমার এক উম্মাতকে ডাকা হবে, অতঃপর তার সামনে নিরানব্বইটি দফতর পেশ করা হবে। প্রতিটি দফতর দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত দীর্ঘ হবে। মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি কি এর কোন কিছু অস্বীকার করো? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! আল্লাহ বলবেন, তোমার উপর আমলনামা লেখক আমার ফেরেশতাগণ কি জুলুম করেছে? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তোমার নিকট কি কোন নেকী আছে? সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে এবং বলবে, না। তখন আল্লাহ বলবেন, হাঁ, আমার নিকট তোমার কিছু নেকী জমা আছে। আজ তোমার উপর জুলুম করা হবে না। অতঃপর তার সামনে একটি চিরকুট তুলে ধরা হবে, যাতে লিপিবদ্ধ থাকবেঃ "আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।" তখন সে বলবে, হে আমার রব! এতো বৃহৎ দফতরসমূহের তুলনায় এই ক্ষুদ্র চিরকুট আর কি উপকারে আসবে! তিনি বলবেন, তোমার প্রতি অন্যায় করা হবে না। অতঃপর সেই বৃহদাকার দফতরসমূহ এক পাল্লায় এবং সেই ক্ষুদ্র চিরকূটটি আরেক পাল্লায় রাখা হবে। এতে বৃহদাকার দফতরসমূহের পাল্লা হালকা হয়ে উপরে উঠে যাবে এবং ক্ষুদ্র চিরকুটের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, বিতাকা (চিরকুট) অর্থ রুক্আ (টুকরা) , মিসরবাসী রুক্আকে বিতাকা বলে।[৩৬৩২]
তাহকীক আলবানীঃসহীহ।
৪৩০১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا، حَدَّثَنَا عَطِيَّةُ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ لِي حَوْضًا مَا بَيْنَ الْكَعْبَةِ وَبَيْتِ الْمَقْدِسِ أَبْيَضَ مِثْلَ اللَّبَنِ آنِيَتُهُ عَدَدُ النُّجُومِ وَإِنِّي لأَكْثَرُ الأَنْبِيَاءِ تَبَعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার জন্য বায়তুল্লাহ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ঝর্ণা আছে। এর পানি দুধের ন্যায় সাদা এবং এর পানপাত্র তারকাপুঞ্জের ন্যায় অসংখ্য। কিয়ামতের দিন অন্য সকল নবী-রাসূলের অনুসারীর চেয়ে আমার অনুসারীর সংখ্যা হবে অনেক বেশী।[৩৬৩৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ، سَعْدِ بْنِ طَارِقٍ عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ حَوْضِي لأَبْعَدُ مِنْ أَيْلَةَ إِلَى عَدَنَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لآنِيَتُهُ أَكْثَرُ مِنْ عَدَدِ النُّجُومِ وَلَهُوَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَذُودُ عَنْهُ الرِّجَالَ كَمَا يَذُودُ الرَّجُلُ الإِبِلَ الْغَرِيبَةَ عَنْ حَوْضِهِ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتَعْرِفُنَا قَالَ " نَعَمْ تَرِدُونَ عَلَىَّ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنْ أَثَرِ الْوُضُوءِ لَيْسَتْ لأَحَدٍ غَيْرِكُمْ " .
হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার হাওদে কাওসারের পরিধি আয়লা থেকে এডেন পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! এই হাওযের পানপাত্রের সংখ্যা হবে নক্ষত্ররাজির চেয়েও অধিক। এর পানি হবে দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি। সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয় আমি এই হাওযের তীর থেকে একদল লোককে তাড়িয়ে দিবো, যেমন কোন লোক অপরিচিত উটকে তার কূপ থেকে তাড়িয়ে দেয়। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাদের চিনতে পারবেন? তিনি বলেন, হাঁ, তোমরা উযু করার কারণে তোমাদের উযুর অঙ্গসমূহ উজ্জ্বল অবস্থায় আমার নিকট উপস্থিত হবে। তোমাদের ব্যতীত অন্য কারো এরূপ হবে না।[৩৬৩৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৩
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُهَاجِرٍ، حَدَّثَنِي الْعَبَّاسُ بْنُ سَالِمٍ الدِّمَشْقِيُّ، نُبِّئْتُ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ الْحَبَشِيِّ، قَالَ بَعَثَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَأَتَيْتُهُ عَلَى بَرِيدٍ فَلَمَّا قَدِمْتُ عَلَيْهِ قَالَ لَقَدْ شَقَقْنَا عَلَيْكَ يَا أَبَا سَلاَّمٍ فِي مَرْكَبِكَ . قَالَ أَجَلْ وَاللَّهِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ . قَالَ وَاللَّهِ مَا أَرَدْتُ الْمَشَقَّةَ عَلَيْكَ وَلَكِنْ حَدِيثٌ بَلَغَنِي أَنَّكَ تُحَدِّثُ بِهِ عَنْ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي الْحَوْضِ فَأَحْبَبْتُ أَنْ تُشَافِهَنِي بِهِ . قَالَ فَقُلْتُ حَدَّثَنِي ثَوْبَانُ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ حَوْضِي مَا بَيْنَ عَدَنَ إِلَى أَيْلَةَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ أَوَانِيهِ كَعَدَدِ نُجُومِ السَّمَاءِ مَنْ شَرِبَ مِنْهُ شَرْبَةً لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهَا أَبَدًا وَأَوَّلُ مَنْ يَرِدُهُ عَلَىَّ فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ الدُّنْسُ ثِيَابًا وَالشُّعْثُ رُءُوسًا الَّذِينَ لاَ يَنْكِحُونَ الْمُنَعَّمَاتِ وَلاَ يُفْتَحُ لَهُمُ السُّدَدُ " . قَالَ فَبَكَى عُمَرُ حَتَّى اخْضَلَّتْ لِحْيَتُهُ ثُمَّ قَالَ لَكِنِّي قَدْ نَكَحْتُ الْمُنَعَّمَاتِ وَفُتِحَتْ لِيَ السُّدَدُ لاَ جَرَمَ أَنِّي لاَ أَغْسِلُ ثَوْبِي الَّذِي عَلَى جَسَدِي حَتَّى يَتَّسِخَ وَلاَ أَدْهُنُ رَأْسِي حَتَّى يَشْعَثَ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আবু সাল্লাম) বলেন, উমার বিন আবদুল আযীয (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠান। আমি একটি খচ্চরের পিঠে সাওয়ার হয়ে তার নিকট আসি। আমি তার নিকট পৌঁছলে তিনি বলেন, হে আবূ সাল্লাম! আমি আপনার বাহনের ব্যাপারে আপনাকে কষ্ট দিয়েছি। তিনি বলেন, হাঁ, আল্লাহর শপথ! হে আমিরুল মুমিনীন। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আপনাকে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছা আমার ছিলো না। আমি জানতে পেরেছি যে, আপনি হাওয কাওসার সম্পর্কিত একটি হাদীস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মুক্তদাস সাওবান (রাঃ) -র সূত্রে বর্ণনা করেন। আমি সেই হাদীসখানি আপনার মুখে শুনতে আগ্রহী। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মুক্তদাস সাওবান (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার হাওয এডেন থেকে আয়লা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এর পানি দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি। এর পাত্র সংখ্যা আকাশের তারকারাজির সমান। যে কেউ এই হাওয থেকে এক ঢোক পানি পান করতে পারবে, সে আর কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। দরিদ্র মুহাজিরগণ সর্বপ্রথম এর পানি পানের সৌভাগ্য লাভ করবে, যাদের মাথার চুল উস্কখুষ্ক, পোষাক ধুলি মলিন, যারা ধনবান পরিবারের মেয়েদের বিবাহ করতে পারেনি এবং যাদের আপ্যায়নের জন্য ঘরের দরজাসমূহ খোলা হয়নি। রাবী বলেন, (এ হাদীস শুনে) উমার (রাঃ) কেঁদে দিলেন, এমনকি তার দাড়ি অশ্রুসিক্ত হয়ে গেলো। তিনি বলেন, আমি তো ধনীর দুলালী বিবাহ করেছি এবং আমার জন্য সব দরজাই তো উন্মুক্ত। এখন থেকে আমি আমার পরিধেয় বস্ত্র ময়লাযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ধৌত করব না এবং মাথার চুল উষ্কখুষ্ক না হওয়া পর্যন্ত তৈল ব্যাবহার করবো না।[৩৬৩৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৪
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا بَيْنَ نَاحِيَتَىْ حَوْضِي كَمَا بَيْنَ صَنْعَاءَ وَالْمَدِينَةِ أَوْ كَمَا بَيْنَ الْمَدِينَةِ وَعَمَّانَ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার হাওদের দু' তীরের ব্যবধান (ইয়ামানের রাজধানী) সানআ' ও মদীনার মধ্যকার দূরত্বের সমান অথবা মদীনা ও আম্মানের মধ্যকার দূরত্বের সমান।[৩৬৩৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৫
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৫
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يُرَى فِيهِ أَبَارِيقُ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ كَعَدَدِ نُجُومِ السَّمَاءِ " .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেখানে (হাওয কাওসারের তীরে) আকাশের নক্ষত্রপুঞ্জের সমান সংখ্যক স্বর্ণ ও রৌপ্য নির্মিত পানপাত্রসমূহ দৃশ্যমান থাকবে।[৩৬৩৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৬
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ أَتَى الْمَقْبَرَةَ فَسَلَّمَ عَلَى الْمَقْبَرَةِ فَقَالَ " السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى بِكُمْ لاَحِقُونَ " . ثُمَّ قَالَ " وَدِدْتُ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوَانَنَا " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ قَالَ " أَنْتُمْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانِي الَّذِينَ يَأْتُونَ مِنْ بَعْدِي وَأَنَا فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ مِنْ أُمَّتِكَ قَالَ " أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ رَجُلاً لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَانَىْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلَمْ يَكُنْ يَعْرِفُهَا " . قَالُوا بَلَى . قَالَ " فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنْ آثَارِ الْوُضُوءِ " . قَالَ " أَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ " . ثُمَّ قَالَ أَلاَ لَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَنْ حَوْضِي كَمَا يُذَادُ الْبَعِيرُ الضَّالُّ فَأُنَادِيهِمْ أَلاَ هَلُمُّوا . فَيُقَالُ إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بَعْدَكَ وَلَمْ يَزَالُوا يَرْجِعُونَ عَلَى أَعْقَابِهِمْ . فَأَقُولُ أَلاَ سُحْقًا سُحْقًا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবরস্থানে এসে কবরবাসীদের সালাম দিলেন এবং বললেন, "আসসালামু আলায়কুম দারা কাওমীম মু‘মিনীন ওয়াইন্না ইনশাআল্লাহ তাআলা বিকুম লাহিকূন" (ঈমানদার কবরবাসীরা! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। অচিরেই আল্লাহর মর্জি আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হবো)। অতঃপর তিনি বলেনঃ নিশ্চয় আমাদের আকাঙ্ক্ষা এই যে, আমরা আমাদের ভাইদের দেখতে পাবো। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বলেনঃ তোমরা আমার সাহাবী। আর যারা আমাদের পরে আসবে তারা আমার ভাই। আমি তোমাদের আগেই হাওযের নিকট উপস্থিত হবো। তারা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এমন লোকদের আপনার উম্মাতরূপে কিভাবে চিনবেন, যারা এখনো জন্মলাভ করেনি? তিনি বলেনঃ তোমরা কি দেখো না, যদি কোন ব্যক্তির একটি সাদা পা ও সাদা পেশানীযুক্ত ঘোড়া অপর ব্যক্তির কালো ঘোড়ার পালে মিশে যায়, তবে সে কি তার ঘোড়াটি চিনতে পারবে না? তারা বলেন, হাঁ, নিশ্চয় চিনতে পারবে। তিনি বলেনঃ তারা কিয়ামতের দিন উযুর বদৌলতে সাদা পেশানী ও সাদা হাত-পা বিশিষ্ট অবস্থায় আসবে। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের আগেই হাওয কাওছারে উপস্থিত হবো। একদল লোক আমার হাওয থেকে বিতাড়িত হবে, যেমন পথভোলা উট বিতাড়িত হয়। আমি তাদেরকে ডেকে বলবোঃ তোমরা এদিকে এসো তোমরা এদিকে এসো। তখন বলা হবে, এসব লোক আপনার পর (দীনকে) পরিবর্তন করেছে এবং অবিরত তারা তাদের পশ্চাতে ফিরে গেছে। তখন আমি বলবোঃ সাবধান! দূর হও দূর হও।[৩৬৩৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৭
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي فَهِيَ نَائِلَةٌ مَنْ مَاتَ مِنْهُمْ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীর জন্য একটি করে দু‘আ আছে যা কবুল করা হয়। আর প্রত্যেক নবী তাঁর দু‘আর ব্যাপারে তাড়াহুড়া করেছেন আর আমি আমার দু‘আ আমার উম্মাতের শাফা‘আতের জন্য জমা রেখেছি। অতএব আমার উম্মাতের মধ্যে যারা আল্লাহর সাথে শিরক না করে মারা যাবে তারা আমার শাফাআতপ্রাপ্ত হবে।[৩৬৩৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৮
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৮
حَدَّثَنَا مُجَاهِدُ بْنُ مُوسَى، وَأَبُو إِسْحَاقَ الْهَرَوِيُّ إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَاتِمٍ قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَنْبَأَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ وَلاَ فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ الأَرْضُ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ وَلاَ فَخْرَ وَلِوَاءُ الْحَمْدِ بِيَدِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ " .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আদম সন্তানদের সরদার, তাতে গর্বের কিছু নেই। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আমার জন্য জমীন বিদীর্ণ হবে (কবর থেকে সর্বপ্রথম আমিই উঠবো) , এতে গর্বের কিছু নাই। আমিই হবো সর্বপ্রথম শাফাআতকারী এবং সর্বাগ্রে আমার শাফাআতকবুল করা হবে। এতেও কোন গর্ব নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহর প্রশংসার পতাকা আমার হাতে থাকবে। এতেও গর্বের কিছু নেই।[৩৬৪০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩০৯
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩০৯
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ حَبِيبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَمَّا أَهْلُ النَّارِ الَّذِينَ هُمْ أَهْلُهَا فَإِنَّهُمْ لاَ يَمُوتُونَ فِيهَا وَلاَ يَحْيَوْنَ وَلَكِنْ نَاسٌ أَصَابَتْهُمُ النَّارُ بِذُنُوبِهِمْ أَوْ بِخَطَايَاهُمْ فَأَمَاتَتْهُمْ إِمَاتَةً حَتَّى إِذَا كَانُوا فَحْمًا أُذِنَ لَهُمْ فِي الشَّفَاعَةِ فَجِيءَ بِهِمْ ضَبَائِرَ ضَبَائِرَ فَبُثُّوا عَلَى أَنْهَارِ الْجَنَّةِ فَقِيلَ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ أَفِيضُوا عَلَيْهِمْ فَيَنْبُتُونَ نَبَاتَ الْحِبَّةِ تَكُونُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ " . قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ كَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَدْ كَانَ فِي الْبَادِيَةِ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আহা দোযখবাসী, যারা জাহান্নামবাসী তারা সেখানে মরবেও না, বাঁচবেও না। তবে কতক লোক তাদের ভুলত্রুটি ও গুনাহের কারণে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে। আগুন তাদের দগ্ধীভূত করবে, ফলে তারা কয়লাবৎ হয়ে যাবে। তখন তাদের শাফাআতের অনুমতি দেয়া হবে। তাদের দলে দলে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে এবং জান্নাতের ঝরণার নিকট ছড়িয়ে রাখা হবে। তখন বলা হবে, হে জান্নাতবাসীরা! তোমরা তাদের উপর পানি ছিটিয়ে দাও। ফলে তারা প্লাবনের পর উর্বর মাটিতে চারাগাছ গজানোর মত গজিয়ে উঠবে। রাবী বলেন, উপস্থিত এক ব্যক্তি বললো, মনে হয় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেন বন-বাদাড়ে বসবাস করতেন।[৩৬৪১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
৪৩১০
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩১০
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " إِنَّ شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ لأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي " .
জাবির (রাঃ) , থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত হবে আমার উম্মাতের কবীরা গুনাহগারদের জন্যই।[৩৬৪২]
তাহকী আলবানীঃ সহীহ।
৪৩১১
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩১১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَدْرٍ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ خَيْثَمَةَ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " خُيِّرْتُ بَيْنَ الشَّفَاعَةِ وَبَيْنَ أَنْ يَدْخُلَ نِصْفُ أُمَّتِي الْجَنَّةَ فَاخْتَرْتُ الشَّفَاعَةَ لأَنَّهَا أَعَمُّ وَأَكْفَى أَتُرَوْنَهَا لِلْمُتَّقِينَ لاَ وَلَكِنَّهَا لِلْمُذْنِبِينَ الْخَطَّائِينَ الْمُتَلَوِّثِينَ " .
আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে শাফাআত করার অথবা আমার উম্মাতের অর্ধেক জান্নাতী হওয়ার মধ্যে যে কোন একটি গ্রহণ করার অবকাশ দেয়া হয়েছিলো। আমি শাফাআতকে গ্রহণ করেছি। কেননা তা ব্যাপক বিস্তৃত এবং অধিক ফলপ্রসূ। তোমরা কি মনে করো যে, শাফাআত মুত্তাকীদের জন্য? না, বরং তা গুনাহগার, অপরাধে অভিযুক্ত এবং সত্য-মিথ্যার মধ্যে মিশ্রণকারীদের জন্য।[৩৬৪৩]
তাহকীক আলবানীঃ “لأ نها ...” বাক্যটি ব্যতীত সহীহ।
উক্ত হাদীসের রাবী আবূ বাদর সম্পর্কে আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তার হাদীস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি আশা করি তিনি সত্যবাদী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল কামাল : রাবী নং ২৭০২, ১২/৩৮২ নং পৃষ্ঠা)
৪৩১২
সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায় : পার্থিব ভোগবিলাসের প্রতি অনাসক্তি
হাদীস নং : ৪৩১২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " يَجْتَمِعُ الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُلْهَمُونَ - أَوْ يَهُمُّونَ شَكَّ سَعِيدٌ - فَيَقُولُونَ لَوْ تَشَفَّعْنَا إِلَى رَبِّنَا فَأَرَاحَنَا مِنْ مَكَانِنَا فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ آدَمُ أَبُو النَّاسِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلاَئِكَتَهُ فَاشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ يُرِحْنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا . فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ وَيَشْكُو إِلَيْهِمْ ذَنْبَهُ الَّذِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي مِنْ ذَلِكَ - وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا فَإِنَّهُ أَوَّلُ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ سُؤَالَهُ رَبَّهُ مَا لَيْسَ لَهُ بِهِ عِلْمٌ وَيَسْتَحْيِي مِنْ ذَلِكَ - وَلَكِنِ ائْتُوا خَلِيلَ الرَّحْمَنِ إِبْرَاهِيمَ فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَلَكِنِ ائْتُوا مُوسَى عَبْدًا كَلَّمَهُ اللَّهُ وَأَعْطَاهُ التَّوْرَاةَ . فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ قَتْلَهُ النَّفْسَ بِغَيْرِ النَّفْسِ - وَلَكِنِ ائْتُوا عِيسَى عَبْدَ اللَّهِ وَرَسُولَهُ وَكَلِمَةَ اللَّهِ وَرُوحَهُ . فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَلَكِنِ ائْتُوا مُحَمَّدًا عَبْدًا غَفَرَ اللَّهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ . قَالَ فَيَأْتُونِي فَأَنْطَلِقُ - قَالَ فَذَكَرَ هَذَا الْحَرْفَ عَنِ الْحَسَنِ . قَالَ فَأَمْشِي بَيْنَ السِّمَاطَيْنِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ . قَالَ ثُمَّ عَادَ إِلَى حَدِيثِ أَنَسٍ - قَالَ " فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فَيُؤْذَنُ لِي فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ يَا مُحَمَّدُ وَقُلْ تُسْمَعْ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَحْمَدُهُ بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ الثَّانِيَةَ فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يُقَالُ لِي ارْفَعْ مُحَمَّدُ قُلْ تُسْمَعْ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُهُ بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ الثَّالِثَةَ فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِيِّ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ مُحَمَّدُ قُلْ تُسْمَعْ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُهُ بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ الرَّابِعَةَ فَأَقُولُ يَا رَبِّ مَا بَقِيَ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ " .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের দিন ঈমানদার বান্দারা সমবেত হবে। তখন তাদের অন্তরে ইলহাম করা হবে এবং তারা বলবে, কেউ যদি আমাদের প্রভুর নিকট আমাদের জন্য শাফাআত করতো তাহলে তিনি আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে শান্তি দিতে পারতেন। অতএব তারা আদাম (আঃ) এর নিকট এসে বলবে, আপনি আদম, মানবজাতির পিতা। আল্লাহ নিজ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর ফেরেশতাদের দ্বারা আপনাকে সিজদা করিয়েছেন। আপনি আমাদের এ অবস্থা থেকে নাজাতের জন্য আপনার প্রতিপালকের নিকট শাফাআত করুন। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তাদের নিকট নিজের কৃত গুনাহের কথা উল্লেখ করে আক্ষেপ করবেন এবং এতে লজ্জিত হবেন। বরং তোমরা নূহ আলাইহিস সালামের নিকট যাও। কেননা তিনি ছিলেন পৃথিবীবাসীর প্রতি আল্লাহর প্রেরিত প্রথম রাসূল। অতএব তারা তাঁর নিকট উপস্থিত হবে। তিনি বল